এর আগে সোমবার (২২ আগস্ট) মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্তের পর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন ও বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
স্বাভাবিক সময়ে সরকারি অফিস সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত লেনদেন আর লেনদেন পরবর্তী আনুষঙ্গিক কার্যক্রম পরিচালিত হতো ৬টা পর্যন্ত।
তবে, সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, রোববার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত এবং শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে। এছাড়া জরুরি পরিষেবাগুলো নতুন অফিস সময়সূচির আওতাবহির্ভূত থাকবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সময়সূচি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ নির্ধারণ করবে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়— ব্যাংক, বিমা, অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দাপ্তরিক সময়সূচি সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। উল্লেখ্য, এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। সোম ও মঙ্গলবার নির্দেশনায় ব্যাংকিং খাত ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সময়সূচি নির্ধারণ করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
এর আগে সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠকে এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেছিলেন, বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনাকে কীভাবে আরও ইফেক্টিভ করা যায় এ মুহূর্তে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইনস্ট্যান্টলি তো বাড়ানো সম্ভব হবে না। সে জন্য আলোচনা হয়েছে কতগুলো।
তিনি বলেন, আগামী ২৪ আগস্ট বুধবার থেকে সব সরকারি এবং স্বায়ত্তশাসিত অফিস, সরকারের অধীনে যেসব অফিস আছে সেগুলো সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত চলবে। তবে, বেসরকারি অফিসের বিষয়ে কোনো নির্দেশনা নেই। এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
সরকারি অফিস পরিচালনার বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘নির্দেশনা দিয়ে দেওয়া হয়েছে, সব সরকারি অফিসে কোথাও পর্দা টাঙানো থাকবে না। এগুলো তুলে লাইট যতসম্ভব কম লাগলে যতটুকু চলবে এবং এয়ারকুলারও যথাসম্ভব কম ব্যবহার করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর মিটিংয়ে ছিলেন। উনিও গিয়ে ঘোষণা দিয়ে দিচ্ছেন, ব্যাংকগুলো সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে। এছাড়া শিক্ষামন্ত্রীর প্রস্তাবও অনুমোদন করা হয়েছে। উনিও (শিক্ষামন্ত্রী) নির্দেশনা দিয়েছেন, সপ্তাহে দুদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
এসব সিদ্ধান্তের কারণে দুইটা সুবিধা হবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, একটা হলো বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে, আরেকটা হলো ট্রাফিক জ্যামটাও কমবে।
এসব সিদ্ধান্ত কি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের উদ্দেশ্যে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ সাশ্রয় তো হবেই। দেখা যাক, পরবর্তী অবস্থা উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত চলুক। সঙ্গে সঙ্গে ট্রাফিক জ্যামটাও একটা ডিস্ট্রিবিউট হয়ে যাবে।
করোনাভাইরাস মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশে অনেকগুলো ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দিতে হয়েছে। এতে চাহিদার চেয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন অনেকটাই কমে যায়। সংকট মোকাবিলায় সূচি করে লোডশেডিং দেওয়ার পাশাপাশি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।