বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: বিএনপির বড় বিশৃঙ্খলার চেষ্টা আ.লীগের সতর্কতায় বিফল: তথ্যমন্ত্রী   সংকটকে সম্ভাবনায় রূপ দিতে কাজ করছে সরকার: কাদের   নাটোরে ট্রেনে কাটা পড়ে ৩ জনের মৃত্যু   ‘কিছুই করি নাই শ্রেণিটা’ চোখ থাকতেও দেখে না: প্রধানমন্ত্রী   রাজকে আমার জীবন থেকে ছুটি দিয়ে দিলাম: পরীমনি   সৌদি আরবের ক্লাবে যোগ দিলেন রোনালদো   বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
শেখ হাসিনার সফরের দিকে তাকিয়ে নয়াদিল্লি
কূটনৈতিক প্রতিবেদক
প্রকাশ: শনিবার, ২০ আগস্ট, ২০২২, ১১:১৫ এএম | অনলাইন সংস্করণ

আগামী ৫ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লী যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করতে তিনি এই সফর করবেন।আগামী বছরের শেষ দিকে বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, তার আগে এটিই হবে বঙ্গবন্ধুকন্যার শেষ ভারত সফর। সঙ্গত কারণে এই সফরের দিকে উদগ্রীব হয়ে তাকিয়ে রয়েছে দিল্লি।  

এই সফরকে ফলপ্রসূ করে তুলতে ভারত ও বাংলাদেশ; দুইপক্ষেই কূটনৈতিক তৎপরতাও রয়েছে তুঙ্গে। এরইমধ্যে দিল্লি পৌঁছে গেছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রস্তুতি দলও। সফরের নানা লজিস্টিক্যাল খুঁটিনাটি এই মুহূর্তে চূড়ান্ত করছেন তারা।


শেখ হাসিনার সফরসূচি

শেখ হাসিনা এই সফরে দিল্লিতে পা রাখবেন ৫ সেপ্টেম্বর (সোমবার)। সেদিন অবশ্য কোনও দ্বিপক্ষীয় বৈঠক থাকছে না, তবে চাণক্যপুরীর বাংলাদেশ দূতাবাস প্রাঙ্গণে তিনি সেদিন ভারতীয় অতিথিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হবেন বলে কথা রয়েছে। ভারতে বাংলাদেশের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরান এই অনুষ্ঠানটির আয়োজন করছেন।   

২০১৭ সালের মার্চে তার দিল্লি সফরে শেখ হাসিনা উঠেছিলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে। তখন ভারতের রাষ্ট্রপতি ছিলেন প্রণব মুখার্জি; যাকে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সৌহার্দ্যের সুবাদে শেখ হাসিনা ডাকতেন ‘কাকাবাবু’ বলে। সেবার ‘কাকাবাবু’র আতিথ্য গ্রহণ করলেও ২০১৯ অক্টোবরে তিনি কিন্তু দিল্লির তাজ প্যালেস হোটেলেই থেকেছিলেন। এই সফরেও তার ঠিকানা হবে সর্দার প্যাটেল রোডের ওই অভিজাত হোটেলটিতে।  

৬ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) হলো শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের মূল ‘বিজনেস ডে’ বা আসল কার্যদিবস। সেদিন সকালে রাজঘাটে গান্ধী সমাধিস্থলে শ্রদ্ধা অর্পণ ও রাষ্ট্রপতি ভবনে গার্ড অব অনারের মধ্যে দিয়ে তার আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনার শেষে শুরু হবে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকগুলো। প্রতিনিধিদল পর্যায়ের বৈঠকের পাশাপাশি দুই প্রধানমন্ত্রীর একান্ত বৈঠকও (সামিট বা শীর্ষ সম্মেলন) সেদিনই অনুষ্ঠিত হবে। দিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউজে দিনভর সেসব বৈঠকের শেষে দুই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে একটি যৌথ ঘোষণাপত্র জারি করা হবে বলে ঠিক হয়েছে।   

ভারতে সিআইআই বা ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্সের মতো প্রধান বণিকসভাগুলোর প্ল্যাটফর্মে শেখ হাসিনা পরের দিন (৭ সেপ্টেম্বর, বুধবার) সকালে ভাষণ দেবেন। ভারতের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে কীভাবে উভয়পক্ষই উপকৃত হতে পারে, সেই চিত্রই সেখানে তুলে ধরবেন তিনি।  

বুধবার বিকালেই তিনি পাড়ি দেবেন রাজস্থানের পবিত্র আজমির শরিফ দরগায়। সফরের একেবারে শেষ পর্বে খাজা বাবার এই মাজার জিয়ারত করেই তিনি রাজস্থানের রাজধানী জয়পুরের বিমানবন্দর থেকেই বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) সোজা ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন, দিল্লিতে আর ফিরবেন না।          

তিস্তায় না, ‘সেপা’য় হ্যাঁ 

এই সফরেও যে বহু প্রতীক্ষিত তিস্তা চুক্তি দিনের আলো দেখছে না, তা অবশ্য স্পষ্ট। দুই পক্ষের শীর্ষ কর্মকর্তারাই একান্ত আলোচনায় স্বীকার করেছেন, তিস্তা চুক্তির জট এই সফরেই খুলে যাবে এতটা আশা করা উচিত হবে না। তাই বলে সফরের অর্জন কম হবে এটা ভাবারও কোনও কারণ নেই বলেও জানিয়েছেন তারা। 

দিল্লিতে এক শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তার কথায়, ‘মনে রাখতে হবে বাংলাদেশে আগামী নির্বাচনের আগে এটাই শেষবারের মতো তার ভারতে আসা। ফলে ভারত শেখ হাসিনাকে কিছুতেই খালি হাতে ফেরাতে পারবে না। আর পরিস্থিতি যদি সেরকমই হতো, তাহলে কিন্তু এই সফরটাই হতো না।’

পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, শেখ হাসিনার এবারের সফরে দুদেশের মধ্যে ‘সেপা’ (কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট) নামক বাণিজ্য চুক্তিটি চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি মন্ত্রিসভার বৈঠকে নিজে এই চুক্তির খসড়ায় অনুমোদন দিয়ে দিয়েছেন। এখন শুধু এ বিষয়ে ভারতের রাজি হওয়ার অপেক্ষা।  

ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে শত শত পণ্যের অবাধ ও শুল্কমুক্ত বাণিজ্যর জন্য এটিকে একটি ‘ল্যান্ডমার্ক’ বা যুগান্তকারী সমঝোতা বলে গণ্য করা হচ্ছে। 

এছাড়া শেখ হাসিনার সফরের ঠিক আগেই একযুগেরও বেশি সময় পর দিল্লিতে বসছে দুদেশের জয়েন্ট রিভার্স কমিশনের (জেআরসি) বৈঠক। দুই দেশের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অভিন্ন নদীর জল ভাগাভাগি বা পানি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে জেআরসি যে বিষয়গুলোতে একমত হবে, প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফরের সময় সেটাই সমঝোতার আকারে পূর্ণতা পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।  

মমতা কি দিল্লিতে আসবেন?  

শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের সময় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা ব্যানার্জি রাজধানীতে এসে তার সঙ্গে দেখা করবেন কিনা, তা নিয়েও এই মুহূর্তে জল্পনা তুঙ্গে।  

শেখ হাসিনা নিজে যে চাইছেন দিল্লিতে তার সঙ্গে মমতা ব্যানার্জির দেখা হোক, তা অবশ্য পরিষ্কার। গত মাসেই তিনি সরাসরি মমতা ব্যানার্জিকে চিঠি লিখে অনুরোধ জানিয়েছেন, আমি দিল্লিতে আসছি– আপনিও সেখানে আসুন।  

এই প্রস্তাবে প্রচ্ছন্ন সায় ছিল দিল্লিরও। শেখ হাসিনা এই ‘আমন্ত্রণ’ জানানোর পর কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকেও পশ্চিমবঙ্গকে বার্তা পাঠানো হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী যদি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সফরের সময় দিল্লিতে আসেন তা খুবই ইতিবাচক একটা সংকেত দেবে। 

তিস্তার মতো যেসব অমীমাংসিত বিষয় মমতা ব্যানার্জির বাধায় আটকে আছে বলে ধারণা করা হয়, সেগুলো নিয়ে প্রধানমন্ত্রী হাসিনা ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে সরাসরি ও খোলামেলা কথাবার্তা হোক, এটা আসলে দিল্লিও চাইছে। 

মমতা ব্যানার্জি হয়তো দিল্লিতে নিশ্চিতভাবেই আসতেন, কিন্তু ইতোমধ্যে সিবিআই বা ইডি-র মতো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলো রাজ্যে তার দলের নেতাদের বিরুদ্ধে যে লাগাতার অভিযান শুরু করেছে, তাতেই বিষয়টা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। পার্থ চ্যাটার্জি বা অনুব্রত মণ্ডলের মতো তৃণমূলের প্রথম সারির নেতারা এখন গ্রেফতার হয়ে জেলে। আর মমতা ব্যানার্জির দল এটাকে নরেন্দ্র মোদি সরকারের ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপরায়ণতা’ বলেই দাবি করছে। 

এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুরোধে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বের স্বার্থে মমতা ব্যানার্জি আদৌ সে সময় দিল্লি আসবেন কিনা, সেটাও বিরাট প্রশ্ন।  



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]