#আগস্ট মাসেই ষড়যন্ত্রকারীরা বেশী তৎপর হয়: ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ। #আগস্টের ষড়যন্ত্র এখনো চলমান আছে: অধ্যাপক কর্ণেল (অব.) কাজী শরীফ উদ্দীন।
প্রকাশ: শুক্রবার, ১৯ আগস্ট, ২০২২, ১২:১২ এএম | অনলাইন সংস্করণ
আগস্ট মাসে বাঙ্গালীর জীবনে অনেক ন্যাকারজনক ঘটনা ঘটেছে। এইসব ঘটনা গুলো বিশ্ববাসীর কাছে দেখিয়ে দিয়েছে যে এই দেশে রাজনীতি করা কতোটা কঠিন, কতোটা ঝুঁকিপূর্ণ। এর আগে পরে অসংখ্যবার আমাদের দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর হামলা চালানো হয়েছিল। এবং ঘুরেফিরে দেখা যায় ষড়যন্ত্রকারীরা এই আগস্ট মাসেই তৎপর হয়।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৮০০তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক, জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের (জানিপপ) চেয়ারম্যান ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক কর্নেল (অব.) কাজী শরীফ উদ্দীন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।
ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, আগস্ট মাসে বাঙ্গালীর জীবনে অনেক ন্যাকারজনক ঘটনা ঘটেছে। এইসব ঘটনা গুলো বিশ্ববাসীর কাছে দেখিয়ে দিয়েছে যে এই দেশে রাজনীতি করা কতোটা কঠিন, কতোটা ঝুঁকিপূর্ণ। এর আগে পরে অসংখ্যবার আমাদের দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর হামলা চালানো হয়েছিল। এবং ঘুরেফিরে দেখা যায় ষড়যন্ত্রকারীরা এই আগস্ট মাসেই তৎপর হয় এবং আরেকটি দুর্ঘটনা কিভাবে ঘটানো যায় সেটার পায়তারা করে তারা। গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করতে সেদিন শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছিল ঘাতকচক্র। ঘাতকের গ্রেনেড হামলায় রীতিমতো রক্তগঙ্গা বইয়ে গিয়েছিল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের প্রাঙ্গণ। সন্ত্রাসবিরোধী আওয়ামী লীগের শান্তির সমাবেশকে ঘিরে কোলাহলপূর্ণ বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউ মুহূর্তেই পরিণত হয়েছিল বীভৎস মৃত্যুপুরীতে। সুপরিকল্পিত ও ঘৃণ্য এই গ্রেনেড হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত ও শোকাবহ আগস্টে আরেকটি ১৫ আগস্ট সৃষ্টির অপচেষ্টা করেছিল পরাজিত ঘাতকচক্র। তৎকালীন জোট সরকারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে এই হামলার ধরনও ছিল রক্তাক্ত ১৫ আগস্টের মতোই।
অধ্যাপক কর্ণেল (অব.) কাজী শরীফ উদ্দীন বলেন, বিশ্ব মানবতার ইতিহাসে ১৫ আগস্ট এক কলঙ্কিত দিন। বাঙালি জাতির জন্য সবচেয়ে বেদনার দিন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শুধু বাঙালি জাতির জন্য নয়— সারাবিশ্বের শোষিত, বঞ্চিত, নির্যাতিত, মুক্তিকামী মানুষের জন্য নজিরবিহীন মর্মস্পর্শী শোকের দিন। বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মহান নেতা, স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্বপ্নদ্রষ্টা ও প্রতিষ্ঠাতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পুরো পরিবার মানব সভ্যতার ইতিহাসে ঘৃণ্য ও নৃশংসতম পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। স্বাধীনতাবিরোধী দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা দীর্ঘ সময় পরিকল্পনা করে ইতিহাসের নৃশংসতম এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশ সমৃদ্ধি ও অগ্রযাত্রা থামিয়ে দেওয়া। মুক্তিযুদ্ধের চার মূলনীতিকে ভূলুণ্ঠিত করা। বাংলাদেশ আবার আলো থেকে অন্ধকারের পথে যাত্রা শুরু করে, মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত গোষ্ঠী, উগ্রসাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর উত্থান ঘটে দেশ আবার পাকিস্তানি ভাবধারার দিকে ধাবিত হয়। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট কালরাতে ঘাতকের নির্মম বুলেটে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হন। এ সময় বিদেশে থাকায় বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। ১৯৮১ সালের ১৩-১৫ ফেব্রুয়ারি। আওয়ামী লীগের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন। জাতির এক ক্রান্তিলগ্নে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ডাক আসে দেশমাতৃকার হাল ধরার। সামরিক শাসকদের রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ১৯৮১ সালের ১৭ মে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন শেখ হাসিনা। এরপর দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে সামরিক জান্তা ও স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে চলে তার একটানা অকুতোভয় সংগ্রাম। জেল-জুলম, অত্যাচার কোনোকিছুই তাকে তার পথ থেকে টলাতে পারেনি এক বিন্দু। এক বর্ণাঢ্য সংগ্রামমুখর জীবন শেখ হাসিনার। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস তিনি গৃহবন্দি থেকেছেন। সামরিক স্বৈরশাসনামলেও বেশ কয়েকবার তাকে কারানির্যাতন ভোগ ও গৃহবন্দি থাকতে হয়েছে। বারবার তার জীবনের ওপর ঝুঁকি এসেছে। অন্তত ১৯ বার তাকে হত্যার অপচেষ্টা করা হয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়েও তিনি অসীম সাহসে তার লক্ষ্য অর্জনে থেকেছেন অবিচল।