রোমে বাংলাদেশ দূতাবাসে ভাঙচুর-বিশৃঙ্খলার ঘটনায় রাষ্ট্রদূত মো. শামীম আহসান বলেছেন, দূতাবাসে ভাঙচুর করা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। এই বিশৃঙ্খলায় কারো কোন ইন্ধন আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এর আগে রোমে বাংলাদেশ দূতাবাসে পাসপোর্টের বয়স সংশোধন ও ফিঙ্গার প্রিন্টসহ অন্যান্য সমস্যার সমাধান না পেয়ে বিক্ষুব্ধ কয়েকশ প্রবাসী বাংলাদেশি দূতাবাসে ভাঙচুর করেছেন। মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) স্থানীয় সময় বেলা ১১টার দিকে দূতাবাসে এ ঘটনা ঘটে।
বিক্ষুব্ধ প্রবাসীরা সেখানে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত অবস্থান করেন। পরে দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাইরে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এ সময় রাষ্ট্রদূত মো. শামীম আহসান প্রবাসীদের এ সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন তাদের। এরপর বিক্ষুব্ধ কয়েকজন বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূতের হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন।
ওই দিন ১৭ জনের একটি প্রতিনিধি দল দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে পাসপোর্ট সংক্রান্ত বৈঠক করে। বৈঠক শেষে পুলিশ দুজনকে আটক করে। কিন্তু পরে আবার তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
জানা গেছে, কয়েক বছর ধরে প্রায় ৭ হাজার পাসপোর্ট আটকে আছে দূতাবাসের অধীনে। এ কারণে এসব বাংলাদেশিরা পাসপোর্ট জটিলতার কারণে বিপদে আছেন। এর কোন সমাধান না পেয়ে দূতাবাসে এসে বিক্ষুব্ধ প্রবাসীরা ভাঙচুর করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী বলেন, গত তিন বছর ধরে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সমস্যার কারণে আমার পাসপোর্টটি আটকে আছে। আমার মতো আরও অনেক বাংলাদেশিদের একই সমস্যা। খুবই বিপদে আছি। রাষ্ট্রের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ ও সুদৃষ্টি কামনা করছি। আমাদের মত অসহায় প্রবাসীদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার জন্য।
তিনি বলেন, ইতালিতে আমরা বৈধ হলেও পাসপোর্টের কারণে চরম বিপদে আছি। যেকোনো মুহূর্তে অবৈধ হয়ে যেতে পারি। এরমধ্যে আমার বাবা মারা গেছেন পাসপোর্টের কারণে দেশে যেতে পারিনি।
এ ব্যাপারে ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোঃ শামীম আহসান বলেন, দূতাবাসে পাসপোর্টের বয়স সংশোধনসহ অন্যান্য চলমান প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। এরপরেও দূতাবাসের এরকম একটি সুশৃঙ্খল কাজে বিশৃঙ্খলা করার কোন কারণ দেখছি না। বিষয়টি সমাধান করতে ঢাকা অফিসে নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে। তারপরেও দূতাবাসে ভাঙচুর এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা।
তিনি আরও বলেন, এই বিশৃঙ্খলায় কারো কোন ইন্ধন আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে যদি এরকম কিছু পাওয়া যায় তবে এদেশের নিয়ম মেনে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাংলাদেশ যেমন সবার, দূতাবাসও তেমন সবার।
প্রসঙ্গত, গতকাল পাসপোর্টের বয়স সংশোধনসহ অন্যান্য সমাধান না পেয়ে দূতাবাসের ভিতরে বিক্ষুব্ধ কয়েকশ প্রবাসী বাংলাদেশিরা ভাঙচুর করে। পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রশাসনের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।