#বিএনপি-জামায়াতের মদদেই সেদিন সিরিজ বোমা হামলা হয়েছিল: ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া কাঞ্চন। #বিএনপির আমলে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সন্ত্রাসী হামলা হয়েছিল: উইলিয়াম প্রলয় সমদ্দার।
প্রকাশ: বুধবার, ১৭ আগস্ট, ২০২২, ১১:৫৮ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
ঘাতকরা তাদের আগস্ট ষড়যন্ত্র বন্ধ করেনি। এই মাসেই ২১ আগস্ট, ২০০৪ সালে আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনার জীবনের উপর আক্রমণ চালিয়েছিল সেই খুনি জিয়ারপুত্র তারেক জিয়া। এই মাসেই ২০০৫ সালের ১৭ তারিখে বাংলাদেশের ৬৩ জেলায় একযোগে বোমা বিস্ফোরণ করেছিল ধর্মান্ধ জঙ্গিগোষ্ঠী। বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় শায়খ আবদুর রহমান ও সিদ্দিকুর রহমানের সংগঠনের লোকেরা তৎকালীন সময়ে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় এই সঙ্ঘবদ্ধ হামলা চালায়।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৭৯৯তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া কাঞ্চন, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক, খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক উইলিয়াম প্রলয় সমদ্দার। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।
অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া কাঞ্চন বলেন, বঙ্গবন্ধুই বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধুর অপর নাম বাংলাদেশ। স্বাধীনতা ও মুক্তির ডাক তিনি একইসঙ্গে দিয়েছিলেন। সেই ডাকে সাড়া দিয়েছিল বাঙালি। বীরের মতো লড়াই করে স্বাধীন ভূখণ্ড অর্জন করেছে। বিশ্ব-মানচিত্রে সার্বভৌম দেশ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে একাত্তরের স্বাধীনতাসংগ্রাম বাঙালি জীবনের শুধু নয়, সমগ্র মানবসমাজের ইতিহাসেই এক অবিনাশী গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। আর এ যুগের এক মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতাবিরোধী দেশি-বিদেশি ঘাতক চক্র কর্তৃক জাতির পিতাকে সপরিবারের হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে পাকিস্তানি ভাবধারায় পরিচালনা শুরু করা হয়। সেদিন আল্লাহ্র রহমতে বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় বেঁচে যান। কিন্তু ঘাতকরা তাদের আগস্ট ষড়যন্ত্র বন্ধ করেনি। এই মাসেই ২১ আগস্ট, ২০০৪ সালে আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনার জীবনের উপর আক্রমণ চালিয়েছিল সেই খুনি জিয়ারপুত্র তারেক জিয়া। এই মাসেই ২০০৫ সালের ১৭ তারিখে বাংলাদেশের ৬৩ জেলায় একযোগে বোমা বিস্ফোরণ করেছিল ধর্মান্ধ জঙ্গিগোষ্ঠী। এই মাসটিকে আমি বলবো কলঙ্কিত একটি মাস, কারণ বহু কলঙ্কিত ঘটনা এই মাসেই ঘটেছে। ৬৩টি জেলায় কিভাবে একই সময়ে ৫০০ বোমা বিস্ফোরণ হয়েছিল সেটি কিন্তু একটি অত্যন্ত কৌতুহলি ব্যাপার। সারা বিশ্বকে বিস্মিত করেছে এটি কিভাবে সম্ভব হয়েছিল। আমি মনে করি এটি সম্ভব হয়েছিল কারণ তখন যারা ক্ষমতায় ছিল অর্থাৎ বিএনপি-জামায়াতের মদদে এই ঘটনা ঘটিয়েছিল জঙ্গিগোষ্ঠী। সেদিনের হামলাই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। কোনো সংগঠন এ হামলার দায়িত্ব স্বীকার তাৎক্ষণিকভাবে করেনি। তবে প্রতিটি বোমা হামলার ঘটনাস্থলের আশপাশে নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থি সংগঠন জেএমবির লিফলেট পাওয়া গিয়েছিল।
উইলিয়াম প্রলয় সমদ্দার বলেন, ২০০৫ সালের সিরিজ বোমা হামলার কথা আমরা কিভাবে ভুলবো? একই সাথে ৪৩৫টি স্থানে ৫০০টি বোমার বিস্ফোরণ, এটা কি কোনভাবে ভুলা যায়। এটা ছিল একটি হুমকি, একটি মহড়া; যাতে করে স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তি ঘরে ঢুঁকে যায়। কারণ আমরা জানি ২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা ছিল স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিকে চিরতরে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া এবং তারই ধারাবাহিকতায় ২০০৫ সালের ১৭ই আগস্টের সিরিজ বোমা হামলা ছিল আমাদেরকে ভয় দেখিয়ে ঘরে ঢুকিয়ে দেওয়া।, কিন্তু তারা জানেনা যে নেতা তার জীবনকে হাসি মুখে বিলিয়ে দিতে পারে তার উত্তরসূরিরা কখনোই এই ধরণের কর্মকাণ্ডে ভয় পায়না। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) নামের একটি জঙ্গি সংগঠন পরিকল্পিতভাবে দেশের ৬৩ জেলায় একই সময়ে বোমা হামলা চালায়। মুন্সিগঞ্জ ছাড়া সব জেলায় প্রায় ৫০০ পয়েন্টে বোমা হামলায় দু’জন নিহত ও অন্তত ১০৪ জন আহত হন। বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের ইতিহাসে এটি সবচেয়ে বড় ঘটনা। বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর এবং মৌলবাদী রাষ্ট্ররূপে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে উগ্রবাদী জঙ্গি সংগঠন জেএমবি ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট এ সারা দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলা চালায়। তারা যে হামলাগুলো করেছিল তাদের টার্গেট ও আল কায়েদার টার্গেট একেবারেই একই ছিল। তারা যেমন এনজিও কর্মীদের হত্যা করেছে, মাজারের খাদেমদের হত্যা করেছে, হিন্দু ও মুসলমান থেকে যারা খ্রিস্টানে ধর্মান্তরিত হয়েছে তাদের হত্যা করা হয়েছে, এখানে শহীদ মিনারে আক্রমণ করা হয়েছে। মানে তারা সংস্কৃতি সম্পন্ন জায়গায় আক্রমণ করেছে। বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় শায়খ আবদুর রহমান ও সিদ্দিকুর রহমানের সংগঠনের লোকেরা তৎকালীন সময়ে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় এই সঙ্ঘবদ্ধ হামলা চালায়।