প্রকাশ: বুধবার, ১৭ আগস্ট, ২০২২, ৭:৫৭ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে হাফিজুর রহমান নামের এক শিক্ষক ও তার ছেলের বিরুদ্ধে দুই বাউল শিল্পী ও তার সফরসঙ্গীদের মারধরের অভিযোগ ওঠেছে।
মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নের কাস্তা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি তাড়াশ উপজেলা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক মো.রাকিবুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, আহত এক শিল্পীকে আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিরাজগঞ্জ শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে স্থানান্তর করেছি।
শিল্পীদের মারধর করা শিক্ষক হাফিজুর রহমান কাস্তা গ্রামের বাসিন্দা ও কাস্তা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তিনি ৭নং মাধাইনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিলের বড় ভাই।
স্থানীয়রা জানান, নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার কাছিকাটা গ্রামের বাউল শিল্পী কামনা সরকার (২৮) তার স্বামী বাবু সরকার ও অপর আরেক শিল্পী উল্লাপাড়া উপজেলার রামকৃ পুর ইউনিয়নের ঘোনা কালজানি গ্রামের রাঙ্গা হোসেনের মেয়ে বন্যা খাতুনকে নিয়ে তাড়াশের ভোগমান গ্রামের এক স্বজনের বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন। পথে কাস্তা বাজারে এসে নাজমুল নামের তাদেরই একজন যন্ত্র সঙ্গীত বাদ্যকরের সঙ্গে চা পান করছিলেন। এ সময় সেখানে থাকা শিক্ষক হাফিজুর রহমান শিল্পী কামনা সরকার ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে কটূক্তি করেন। এতে ওই শিল্পীরা প্রতিবাদ করলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের গালাগাল করতে থাকেন। এক পর্যায়ে ওই শিক্ষকের ছেলে হৃদয় হোসেন (২০) ঘটনাস্থলে এসে বাবার সঙ্গে শিল্পীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন।
তারা আরও জানান, এক পর্যায়ে শিক্ষক হাফিজুর রহমান বাউল শিল্পী কামনাকে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেন। পাশাপাশি বাবা ছেলে মিলে দুই শিল্পীকে মারধর করেন। তাদের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করে প্রথমে তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভর্তি করেন। পরে রাত সাড়ে ৮ টার দিকে দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক রাকিবুল ইসলাম উন্নত চিকিৎসার জন্য সিরাজগঞ্জ শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হাসপাতালে শিল্পী কামনা সরকারকে স্থানান্তর করেন।
এ প্রসঙ্গে মাধাইনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিল জানান, তার বড় ভাইয়ের সঙ্গে আলাপ করতে গিয়ে শিল্পীরা গালাগাল করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। তারপর খবর পেয়ে আমি হাসপাতালে গিয়ে শিল্পী কামনা সরকারকে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিজ উদ্যোগে সিরাজগঞ্জে পাঠিয়েছি।
তবে বুধবার দুপুরে অভিযুক্ত শিক্ষক হাফিজুর রহমানের মুঠোফোনে আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেন, ওই শিল্পীরাই আমাকে গালাগাল করেছে। আর পেটানোর ঘটনাটি মিথ্যা।
তাড়াশ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম জানান, বিষয়টি গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে জেনেছি। নির্যাতিত ওই শিল্পী অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।