প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২ আগস্ট, ২০২২, ৯:০৮ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
উজানের পাহাড়ি ঢলে ও গত কয়েকদিনের বৃষ্টিপাতে বৃদ্ধি পেয়েছে তিস্তা নদীর পানি। ফলে রংপুরের গঙ্গাচড়ায় বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল, চর ও দ্বীপচরে বসবাসরত প্রায় আড়াই হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যা পরিস্থিতির কারণে চরে আবাদ করা আমন ধান, পাটসহ বিভিন্ন শাক-সবজির ক্ষেত তলিয়ে গেছে, দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, উজানের পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে সোমবার (১ আগস্ট) রাতে ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বন্যার পানি নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড ( পাউবো)। তবে মঙ্গলবার (২ আগস্ট) সকালে তিস্তা নদীর পানি কিছুটা কমে আসে। বেলা ৩টায় ডালিয়া পয়েন্টে ৫২ দশমিক ৭৪ সেন্টিমিটার পানি রেকর্ড করা হয়, যা বিপদসীমার ১৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
এর আগে দুপুর ১২টায় ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৭৭ সেন্টিমিটার, যা বিপদসীমার ১৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করায় রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার তিস্তা নদী বেষ্টিত নোহালী, কোলকোন্দ, লহ্মীটারী, গজঘন্টা ও মর্ণেয়া ইউনিয়নের আড়াই হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এসব এলাকায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। অনেকে ঘরের আসবাবপত্র, গবাদী পশু নিয়ে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন।
লহ্মীটারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আমার ইউনিয়নের অধিকাংশ ওয়ার্ডের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বিগত সময়ে যেসব গ্রামে পানি ঢোকেনি এবার সেসব গ্রামও প্লাবিত হয়েছে। চরের মানুষের ঘরবাড়ি, গাছপালা, ফসলি ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পশ্চিম বাগেরহাট আশ্রয়ণ কেন্দ্র এলাকার ৪শ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
মঙ্গলবার (২ আগস্ট) গঙ্গাচড়ায় বন্যা এলাকা পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এরশাদ উদ্দীন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মুনিমুল হকসহ অন্যরা। বন্যা কবলিতদের সহায়তার জন্য চাহিদা জেলা প্রশাসক দপ্তরে পাঠানোর কথা জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীব বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন ভারতের উজানের বিভিন্ন স্থানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের শঙ্কা রয়েছে। এতে করে উত্তরাঞ্চলের নদ-নদীগুলোর পানি আরও বৃদ্ধি পেতে থাকবে। সেই সাথে আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা নদীর অববাহিকাভূক্ত নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে। নদীভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে।