কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, সরকার রেমিট্যান্স পাঠাতে বিভিন্ন নীতিসহায়তা দিয়ে আসছে। এতে আগের চেয়ে বেশি অর্থ পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। এ কারণে অর্থবছরের প্রথম মাসেই রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে। আগামীতে এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে জানান তারা। এছাড়া ঈদের মাস হওয়ায় এ মাসে তুলনামূলক বেশি রেমিট্যান্স এসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন প্রক্রিয়া সহজ করেছে। সরকারও রেমিট্যান্সের প্রণোদনা বাড়ানোর পাশাপাশি নীতি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। এখন ডলারের রেটও বেশি পাচ্ছে। এছাড়া গত মাসে ঈদুল আজহা ছিল, প্রবাসীরা পরিবারের ঈদ উৎসব সুন্দরভাবে পালনের জন্য অর্থ পাঠিয়েছেন। এসব কারণে রেমিট্যান্স বেড়েছে। আশা করছি এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
রেমিট্যান্স বাড়ার আরেকটি কারণের কথা বলেছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর অর্থনীতি চাঙা হয়েছে। সেখানে কর্মরত আমাদের প্রবাসীরা বেশি আয় করছেন। দেশেও বেশি টাকা পাঠাতে পারছেন।
‘দেশে ডলারের সংকট চলছে। মুদ্রাবাজারে অস্থিরতা চলছে। রিজার্ভ কমছে। এই মুহূর্তে রেমিট্যান্স বাড়া অর্থনীতির জন্য খুবই ভালো হবে।’
তথ্য অনুযায়ী, জুলাই মাসে ২ বিলিয়নের বেশি অর্থাৎ ২০৯ কোটি ৬৯ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। একক মাস হিসাবে এ অংক গত ১৫ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয়। এর আগে সবশেষ ২০২০ সালের মে মাসে ২ বিলিয়নের বেশি অর্থাৎ ২১৭ কোটি ১০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে।
জুলাইয়ে তার আগের মাস জুনের চেয়ে প্রায় ২৬ কোটি ডলার বেশি এসেছে। জুন মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৮৩ কোটি ৭২ লাখ ডলার। তার আগের মাস মে-তে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৮৮ কোটি ৫৩ লাখ ডলার। এছাড়া চলতি বছরের জুলাইয়ে আগের বছরের জুলাইয়ের তুলনায় ২২ কোটি ৫৪ লাখ ডলার বেশি এসেছে। গত বছরের জুলাই মাসে প্রবাসীরা পাঠিয়েছিলেন ১৮৭ কোটি ১৫ লাখ ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সদ্য বিদায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ (২১ দশমিক ৩ বিলিয়ন) মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম। ২০২০-২১ অর্থবছরে দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ (২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।
উল্লেখ্য, গত ১০ জুলাই দেশে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে।