পিরোজপুরের স্বরূপকাঠির সোহাগদলের খোকন মেম্বরের এক চোরকে অমানবিক নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
ওই ফেসবুক পোস্টে চোরে চোর পিটাচ্ছে কমেন্টস্ করেছেন অনেকেই। এ নিয়ে বেরিয়ে পড়েছে ৮/১০ বছর আগের গাছ চুরির সাথে এই মেম্বারের সম্পৃক্ততার ঘটনা।
শনিবার দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদে শত শত জনতার উপস্থিতিতে চুরির কথা স্বীকার করার পরেও ক্রিকেট স্ট্যাম্প দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয় জহিরুল নামের এক ব্যাক্তিকে।
পরে নেছারাবাদ থানার টহল পুলিশ এএসআই শহিদুল ঘটনস্থলে উপস্থিত হয়ে জহিরুলকেসহ খোকন মেম্বরকে থানায় নিয়ে যায়।
জহিরুলের বাড়ি ঝালকাঠি উপজেলার শেখের হাটে। সে জানায় ক্ষুধার জ্বালা সহ্য করতে না পারায় মসজিদ থেকে সকেট চুরি করেছে সেটা বিক্রি করে ক্ষুধা নিবারণ করতে চেয়েছিলো সে। এ ঘটনা সরকারি স্বরূপকাঠি কলেজের রেজাউল নামের এক তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী ভিডিও করার সময় নেছারাবাদ থানা পুলিশ তার মোবাইল জব্দ করে ভিডিও ডিলেট করে অনেক অনুরোধের পর সেই মোবাইল তাকে ফেরৎ দেয় বলে জানান উপস্থিত লোকজন।
এব্যাপারে এএসআই শহিদুল বলেন, খবর পেয়ে সোহাগদল ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে মারধর করতে দেখি। সে সময় কেউ তা না থামিয়ে ভিডিও ধারণ করতে থাকে তখন আমি তাদের ভিডিও করতে নিষেধ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি এবং বিট অফিসার এসআই আলমগীর স্যার এসে আইনি পদক্ষেপ নেন।
এই ঘটনায় নেছারাবাদ থানায় ওই দিন একটি চুরির মামলা হয়েছে এবং কোনো এক অজ্ঞাত কারণে থানা থেকে মেম্বার খোকনকে রাত ১০টার সময় ছেড়ে দেয়া হয়।
এব্যপারে ৬নং ওয়ার্ডের একাধীক শালিসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বর্তমান মেম্বর খোকন সহ তিন চার জনের একটি চোর চক্র বিগত ৮/১০বছর আগে এনডব্লিউ কাঠের চর থেকে ব্যবসায়িদের গাছ চুরি করে যা নিজস্ব ছেলে পেলে হওয়ায় অবিভাবকরা তাদের শাসন করে নিয়ে যায়। এনডব্লিউ স্কুলে বসে এ শালিস বৈঠক হয়েছিল।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত খোকন মেম্বরের সাথে যোগাযোগের জন্য তার বাড়ি ও সোহাগদল ইউনিয়ন পরিষদে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে একাধীকবার কল করা হলে রিসিভ না করে কেটে দেন।
ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ বলেন, এনডব্লিউ স্কুলের সেই গাছ চুরির ঘটনা মৌখিক ভাবে শুনেছি। পরিষদের বারান্দায় বসে এভাবে পেটানোটা লজ্জাজনক।
এব্যাপারে নেছারাবাদ থানা ইনচার্য আবির মোহাম্মদ হোসেন জানান, আইন কেউ নিজের হাতে নিতে পারবেন না। এব্যাপারে অভিযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মারপিটের সময় এএসআই শহিদুল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে তাদের থানায় নিয়ে আসে।
নেছারাবাদ ও কাউখালী থানার সার্কেল এএসপি রিয়াজ হোসেন পিপিএম বলেন, চোরের পক্ষে কেউ থানায় অভিযোগ না করায় পেটানোর বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেয়া যাচ্ছে না।