পাওনা টাকা আদায়ের জন্য ঠাকুরগাঁওয়ের সদর উপজেলায় আবু নাইম (১৮) নামে এক কলেজ শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে বিদ্যালয়ের কক্ষে আটকে রাতভর নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গতকাল সোমবার রাত ১০টার দিকে আখানগর ইউনিয়নের গুঞ্জুরাহাট থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর ৯৯৯ এ ফোন পেয়ে আজ মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে ঝাড়গাঁও উচ্চবিদ্যালয়ের কমনরুম থেকে তাঁকে উদ্ধার করে পুলিশ।
আবু নাইম ঝাড়গাঁও গ্রামের তহিদুল ইসলামের ছেলে। সে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আবুল হোসেন কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষা দেবে। বিষয়টি আবুল হোসেন কলেজের শিক্ষক মনোয়ার হোসেন নিশ্চিত করেছেন।
নির্যাতনের শিকার নাইম জানান, গতকাল সোমবার রাত ১০ টার দিকে গুঞ্জরহাট এলাকা থেকে দেলোয়ার ও তার ছেলে মুন্নাসহ চার পাঁচজন তাকে তুলে নিয়ে যান। পরে তারা স্থানীয় ঝড়গাও উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে আটকে সারারাত মারধর করে।
আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আখানগর ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো.বিপ্লব ঘটনাটি নাইমের বাবাকে জানান। পরে তিনি জাতীয় জরুরী সেবা নম্বর ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে পুলিশকে ঘটনাটি জানান l বেলা আড়াইটার দিকে পুলিশ এসে নাইমকে উদ্ধার করে l
অভিযুক্ত দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে তার ছেলে মোহাম্মদ মুন্না বলেন, বছর খানেক আগে তার বাবা নাইমকে ধারে ৪৫ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। সেই টাকা নাইম পরিশোধ করছিলো না। কয়েক দফা তাগাদা দেওয়ার পর টাকা না পেয়ে তাকে আটকে টাকাটা উদ্ধার করার চেষ্টা করা হয়েছিলো। বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্যকে জানানো হয়। তবে নাইমকে মারধর করার অভিযোগটি অস্বীকার করেন তিনি।
আখানগর ইউপি চেয়ারম্যান রোমান বাদশা বলেন, কাল রাতেই আমাকে বিষয়টি তারা জানিয়েছিলেন। টাকা ধার নেওয়ার পক্ষে কোনো প্রমাণ না থাকায় আমি বিষয়টির দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করি। অন্য কাজে ব্যস্ত থাকায় এরপর কী হয়েছে আর খোঁজ নিতে পারিনি। আজ জেনেছি তারা ছেলেটিকে স্কুলের রুমে নিয়ে আটকে রেখেছিলো।
খবর পেয়ে বেলা আড়াইটার দিকে রুহিয়া থানা পুলিশ ঝাড়গাঁও উচ্চবিদ্যালয়ে যায়। সেসময় নাইম বিদ্যালয়ের কমনরুমে আটক ছিলো। পরে ওয়ার্ড সদস্য মো. বিপ্লব নাইমকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। এ ঘটনাটি ভিডিও করতে গেলে মো. বিপ্লব স্থানীয় সাংবাদিক আপেল মাহমুদের মুঠোফেনটি কেড়ে নেন। পরে স্থানীয় লোকজনের প্রতিবাদের মুখে মুঠোফোনটি ফেরত দেন তিনি।
কলেজ শিক্ষার্থী নাইমকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধরের ঘটনায় আজ বেলা চারটার দিকে রুহিয়া থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন তার বাবা তরিকুল ইসলাম।
এ বিষয়ে তহিদুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলে পড়ালেখার পাশাপাশি দিন,মজুরের কাজ করে। তাকে দেলোয়ার কোন স্বার্থে একগুলো টাকা ধার দেবে। বিষয়টা সন্দেহজনক।
রুহিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল রানা বলেন, এ ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।