প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৯ জুলাই, ২০২২, ১১:০৩ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
আমাদের মূল পরিচয় আমরা সবাই বাঙালি। আজকে কেন সংখ্যালঘু কথাটা বার বার সামনে আসছে। নড়াইলের লোহাগড়ায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, দোকানপাট ও মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আমরা যেমন উদ্বিগ্ন। একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ পরিচালনা করেন। আজ স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরের মাথায় এসে যখন আমাদের এই স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেছে।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৭৭০তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক কর্নেল (অব.) কাজী শরীফ উদ্দীন, বেলজিয়াম আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা, বেলজিয়াম বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. ফারুক মির্জা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।
শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, আমাদের মূল পরিচয় আমরা সবাই বাঙালি। আজকে কেন সংখ্যালঘু কথাটা বার বার সামনে আসছে। নড়াইলের লোহাগড়ায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, দোকানপাট ও মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আমরা যেমন উদ্বিগ্ন, তেমনই বিস্মিত। গত ১৮ জুন নড়াইল সদর উপজেলার ইউনাইটেড কলেজের এক শিক্ষার্থীর ফেসবুক বার্তাকে কেন্দ্র করে সেখানকার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসের গলায় জুতার মালা পরিয়ে চরমভাবে অপদস্থ করা হয়। আমাদের মুক্তিযুদ্ধে মহান বিজয় অর্জনে একক ও সক্রিয়ভাবে যে উপাদানটি কাজ করেছে সেটি হলো আমাদের অসাম্প্রদায়িক চেতনার শক্তি। স্বাধীনতার পর একটি আধুনিক, প্রগতিশীল, সাম্য, সমতা, সবার জন্য ন্যায়বিচার ও কল্যাণকর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার রাষ্ট্রদর্শন নিয়ে যাত্রা শুরু করে দেশটি। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় স্বাধীনতার মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে যে রাষ্ট্রটির জন্ম হয়েছিল স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও সে রাষ্ট্রটি সাম্প্রদায়িক দর্শন ও চিন্তা-চেতনা থেকে মুক্ত হতে পারেনি। কেবল ধর্মের দোহাই দিয়ে, ধর্মকে পুঁজি করে, ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে একটি অশুভ শক্তির দ্বারা বিভিন্ন সময়ে নির্যাতিত-নিপীড়িত হয়ে আসছে এদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টিকারী এক অশুভ শক্তির সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রে হিন্দু-মুসলমান সম্প্রদায়ের হাজার বছরের সম্প্রীতির ঐতিহ্য এক নিমিষে ধুলায় মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। অপপ্রচারকে সম্বল করে বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে ‘ইস্যু’ বানিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুরের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার প্রচেষ্টা নতুন কিছু নয়। যারা লোহাগড়ায় সংখ্যালঘুর বাড়িঘরে হামলা ও আগুনের ঘটনা ঘটিয়েছেন, অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।