প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৯ জুলাই, ২০২২, ৭:৫১ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
হাজার-হাজার পাহাড়ি জনসাধারণকে উদ্ভাস্তু বানিয়ে সেই ১৯৬০ সালে রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করে ক্ষতিগ্রস্থ উদ্ভাস্তু জনগণকে বিনামূল্যে বিদ্যুত সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও দীর্ঘ ৬২ বছরেও এই প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন করেনি সংশ্লিষ্ট্য কর্তৃপক্ষ। এতেও তেমন একটা আক্ষেপ থাকতো না যদি টাকা দিয়ে কিনে হলেও নিয়মিত বিদ্যুত সুবিধার আওতায় আসতো রাঙামাটির বাসিন্দারা। এখনো পর্যন্ত পাহাড়ের অর্ধেকাংশ মানুষ বিদ্যুতের সংযোগই পায়নি।
মাত্র ৬০ হাজার ৩১৫ জন গ্রাহককে বিদ্যুত সংযোগের আওতায় এনে সেবা দিয়ে যাচ্ছে রাঙামাটির বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ কর্তৃপক্ষ। যার বিপরীতে চলতি বছরের জুন মাসে বিল আদায় হওয়ার কথা ছিলো ৬ কোটি ৩২ লাখ ৪১ হাজার ৪শ টাকা। কিন্তু বিল আদায় হয়েছে ৫ কোটি ৭৬ লাখ ৩৭ হাজার ৫২৫ টাকা।
রাঙামাটির বিদ্যুত বিভাগের দায়িত্বশীল সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যে জানাগেছে পার্বত্য রাঙামাটির সরকারী-বেসরকারি,স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানসহ ব্যক্তি পর্যায়ের গ্রাহকদের কাছে প্রায় ১০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা বিদ্যুত বিল বাবদ বকেয়া পাওয়া রয়েছে রাঙামাটি বিদ্যুত বিতরণ কর্তৃপক্ষ।
রাঙামাটির বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আদিল-উজ-জামান জানিয়েছেন, জেলার সরকারি অফিসগুলোতেই বিদ্যুৎ বিল বাবদ বকেয়া রয়েছে ৫ কোটি ৩২ লাখ ৩৬ হাজার ৮৩৫ টাকা। তার মধ্যে রাঙামাটি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কাছে বকেয়া পাওনা ৪ কোটি ৭০ লাখ, পৌরসভার কাছে বকেয়া পাওনা ৩৮ লাখ ও পুলিশ বিভাগের কাছে বকেয়া পাওয়া রয়েছে ৪৭ লাখ টাকা।
এদিকে রাঙামাটি বিদ্যুত বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সাইফুর রহমান জানিয়েছেন, বকেয়া রয়েছে এটা সঠিক এবং আমরা গ্রাহকদের কাছ থেকে বকেয়া আদায়ে নিয়মিত চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছি। তিনি জানান, এখনো পর্যন্ত আমরা দেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় ভালোই সার্ভিস প্রদান করতে পারছি। প্রতিদিন গড়ে এক ঘন্টা করে লোডশেডিং দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে রাঙামাটির বিদ্যুত গ্রাহকদের চাহিদানুসারে প্রতিদিন গড়ে ২০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকলেও পূর্ণাঙ্গ সুবিধা প্রদান করতে পারছেনা বিদ্যুত বিতরণ কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় জনগনের প্রয়োজনীয় চাহিদানুসারে রাঙামাটিতে বর্তমান সময়ে গড়ে প্রতিদিন ১২ থেকে ১৪ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকলেও পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৮ মেগাওয়াট।
অপরদিকে কাপ্তাইয়ে চাহিদা রয়েছে ৬ মেগাওয়াটের। প্রতিদিনই চাহিদার বিপরীতে ঘাটতি রয়েছে অন্তত ৬ মেগাওয়াট বিদ্যুত। এই ঘাটতি পূরণ করতেই বর্তমানে জাতীয় সিদ্ধান্তের আলোকে রাঙামাটি শহরে ভোর ৬টা থেকে বেলা ১২টার মধ্যে এলাকাভেদে এক ঘন্টা করে লোডশেডিং দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাঙামাটি বিদ্যুত বিতরণ বিভাগ কর্তৃপক্ষ। শহরে বিদ্যুতের গ্রাহকের সংখ্যা ২৮ হাজার ৯শ। পুরো জেলায় ৬০ হাজার ৩১৫ জন গ্রাহক নিয়ে চলছে রাঙামাটি বিদ্যুত বিতরণ বিভাগ কর্তৃপক্ষ।