প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৯ জুলাই, ২০২২, ৭:৫০ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের কৃষকেরা পাট নিয়ে বিপাকে পড়েছে। পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারছেন না তারা। ভরা বর্ষা মৌসুমেও বৃষ্টির কোন দেখা নেই। এবার গোয়ালন্দ উপজেলায় পাটের আবাদ হয়েছে ৪হাজার ৬শ ৬০ হেক্টর জমিতে।
সরেজমিনে মঙ্গলবার ১৯ জুলাই উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় অধিকাংশ খাল, বিল, ডোবা এবং জলাশয়ে পানি নেই। যেটুকু পানি আছে তা পাট পচানোর জন্য যথেষ্ট নয়। ফলে পাট চাষিরা বৃষ্টির আশায় পাট কেটে জমিতে ফেলে রাখতে বাধ্য হচ্ছে। এতে পাট জমিতেই শুকিয়ে যাচ্ছে।
আবার কেউ ঘোড়ার গাড়ি,ভ্যানে করে বিল অথবা মরা পদ্মা নদীতে নিয়ে জাগ দেওয়ার চেষ্টা করছেন। অনেকে আবার বাড়ি বা সড়কের পাশের ডোবা,খাল ও জলাশয়ের অল্প পানিতেই পাট পচানোর জন্য জাগ দিচ্ছেন। অল্প পানিতে পাট জাগ দেওয়ার কারনে পাটের আশ কালো হয়ে যাচ্ছে।
পাট আবাদের শুরুতে বৃষ্টি পানিতে নিচু জমির কিছু পাট তলিয়ে নষ্ট হয়। এখন আবার অনাবৃষ্টি আর টানা খরার কারণে পাট জাগ দেওয়ার পানি পাচ্ছেন না কৃষকেরা। তবে হাট বাজারে পাটের ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি রয়েছে।
উপজেলার উজানচর ইউনিয়নে রমজান মাতুব্বর পাড়া গ্রামের কৃষক আমজাদ দেওয়ান বলেন, এ বছর ৬ বিঘা জমিতে পাট আবাদ করেছি। ফলনও ভাল হয়েছে। কিন্তু পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারছি না। তাই ঘোড়ার গাড়িতে করে পাট এনে মরা পদ্মা নদীতে জাগ দিচ্ছি। হাটে পাটের দাম ও চাহিদা ভালো থাকায় একটু স্বস্তিতে রয়েছি।
দৌলতদিয়া ইউনিয়নের সোহবাপ মন্ডল পাড়া গ্রামের কৃষক মদন ফকির বলেন, ৪ বিঘা জমিতে পাট আবাদ করেছি। ডোবায় পানি না থাকায় পাট কেটে মাঠে ফেলে রেখেছি। রোদে পাট পুড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তবে এবার শ্রমিক সংকট রয়েছে। শ্রমিকের মজুরি ৭শত থেকে ৮শত টাকা। তার পরেও এলাকাতে পাট কাটার শ্রমিক পাওয়া যায় না। পাট আবাদ ভালো হলেও এখন পাট কাটা ও জাগ দেওয়া নিয়ে বিপদে পড়েছি।
গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. খোকন উজ্জামান বলেন, এ মৌসুমে উপজেলায় ৪ হাজার ৬শত ৬০হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে অনাবৃষ্টি ও প্রচন্ড রোদের কারনে ডোবা, নালে পানি না থাকায়, কৃষক পাট জাগ দিতে পারছে না। এতে কৃষক পাট জাগ দেওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে। তিনি আরও বলেন, পর্যাপ্ত বৃষ্টি হলে এ সমস্যা দূর হবে বলে তিনি আশা করেন।