শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে মালদ্বীপে পালিয়ে যাওয়ার পর দেশটির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নিয়ে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে।
তার মুখপাত্র দিনুক কলোম্বেজের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, জরুরি অবস্থা জারির পাশাপাশি দেশের পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশে কারফিউ জারি করা হয়েছে।
শ্রীলঙ্কার নিউজওয়্যার জানিয়েছে, প্রেসিডেন্টের দেশত্যাগের পর প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহের পদত্যাগের দাবিতে মঙ্গলবার তার কার্যালয়ের দিকে মিছিল নিয়ে এগোয় একদল বিক্ষোভকারী।
পরে পুলিশ টিয়ার শেল ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এর পরপরই জরুরি অবস্থা আর কারফিউয়ের ঘোষণা আসে।
নিউজওয়্যার লিখেছে, রাস্তায় যাদের ‘হাঙ্গামার মেজাজে’ দেখা যাবে, কিম্বা লরি বোঝাই করে যারা সমবেত হওয়ার চেষ্টা করবে, তাদের গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রবল গণবিক্ষোভের মধ্যে ক্ষমতা ছাড়তে রাজি হয়ে প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে বার্তা দিয়েছিলেন, বুধবারই তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেবেন। কিন্তু তার আগেই মঙ্গলবার গভীর রাতে তিনি সামরিক উড়োজাহাজে করে স্ত্রীকে নিয়ে মালদ্বীপে পালিয়ে যান।
বিবিসি জানিয়েছে, গোটাবায়া রাজাপাকসে পদত্যাগ পত্র লিখে সই করে গেছেন, কিন্তু সেটা এখনও নিয়ম অনুযায়ী স্পিকারের কাছে পৌঁছায়নি। ফলে তার পদত্যাগও আইন অনুযায়ী কার্যকর হয়নি।
আইন অনুযায়ী গোটাবায়া রাজাপাকসেই যেহেতু এখনও প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে কোন ক্ষমতাবলে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিয়েছেন সেই প্রশ্ন রেখেছিল ভারতের পত্রিকা হিন্দু।
জবাবে তার মুখপাত্র দিনুক কলোম্বেজ বলেছেন, “এ বিষয়ে আইনি ব্যাখ্যা আমরা পরে দেব। আপাতত আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছি।”
এদিকে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে একটি সামরিক বিমানে তিনি মালদ্বীপ গেছেন বলে জানিয়েছেন অভিবাসন কর্মকর্তারা।
অভিবাসন কর্মকর্তারা এএফপিকে বলেছেন, শ্রীলঙ্কার ৭৩ বছর বয়সী নেতা গোতাবায়া, তাঁর স্ত্রী ও একজন দেহরক্ষীসহ চার যাত্রী নিয়ে সামরিক বিমান অ্যান্তোনভ–৩২ মঙ্গলবার মধ্যরাতে বন্দরনায়েক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মালদ্বীপের উদ্দেশে রওনা করে।
শ্রীলঙ্কায় ক্ষমতাসীন কোনো প্রেসিডেন্টকে গ্রেপ্তারের সুযোগ নেই। গোতাবায়া আশঙ্কা করছিলেন, প্রেসিডেন্ট পদ ছাড়ার পর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। এ জন্য তিনি সোমবার রাতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের উদ্দেশে দেশত্যাগের চেষ্টা করেন। তবে অভিবাসন কর্মকর্তারা তাঁকে আটকে দেন। তিনি ও তাঁর স্ত্রীসহ পরিবারের ১৫ সদস্য আরব আমিরাতের চারটি ফ্লাইট ধরতে পারেননি। পরে বন্দরনায়েক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পাশের সামরিক ঘাঁটিতে ফিরে যান তাঁরা।