প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১২ জুলাই, ২০২২, ৮:১১ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
বিদ্যুতের দাবিতে আন্দোলনরত জনতার বুকে গুলি চালানো বিএনপি নেতাদের বিদ্যুত নিয়ে কথা বলার অধিকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
মঙ্গলবার (১২ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ানজি পুকুর পাড়স্থ বাসায় সমসাময়িক বিষয়ে ব্রিফিংকালে বিদ্যুৎ নিয়ে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী’র বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এর আগে চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধির সাথে বৈঠক করেন তথ্যমন্ত্রী।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপির আমলে তো ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছাতে পারেনি। বরং তখন বিদ্যুতের দাবিতে মানুষ বিক্ষোভ করেছে, তখন কানসাটে তাদের ওপর গুলি করে অনেককে হত্যা করেছে। চট্টগ্রামে মোমবাতি নিয়ে মিছিল হয়েছে। ঢাকায় বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও হয়েছে। মানুষ হারিকেন নিয়ে মিছিল করেছে। এখন হারিকেন কি এটি বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের জিজ্ঞাসা করলে বলতে পারবে না। কারণ হারিকেনের ব্যবহার নাই। কারণ বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছেন।
অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন প্রদেশে ১৫ থেকে ১৮ ঘন্টা লোডশেডিং হচ্ছে বলে আবারো দাবি করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, চার দেয়ালের ভেতরে বসে সরকারের সমালোচনা করতে গিয়ে বিশ্ব পরিস্থিতি সম্পর্কে অজ্ঞাত রয়েছে বিএনপি নেতারা।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় ভর্তুকি কমাতে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ি হতে জনগনের প্রতি আহবান জানান ড. হাছান মাহমুদ।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সরকারের কঠোর অবস্থান ও সিদ্ধান্তের কারণেই সীমান্ত দিয়ে কোন পশু দেশে ঢুকতে পারেনি, যাতে আমাদের দেশের খামারিরা উপকৃত হয়। এক্ষেত্রে দেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে আমাদের দেশ আয়তনের দিক দিয়ে পৃথিবীর ৯২ তম দেশ। কিন্তু আমরা উৎপাদনের দিক দিয়ে পৃথিবীর শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। ধান উৎপাদনে আমরা পৃথিবীতে তৃতীয়, মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে তৃতীয়, সবজি উৎপাদনে চতুর্থ, আলু উৎপাদনে সপ্তম।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের গরু ছাগল দিয়েই এবার ঈদুল আযহার চাহিদা পূরণ করা সম্ভবপর হয়েছে। অনেক গরু ছাগল বিক্রি না হওয়ায় ফেরতও গেছে। অর্থাৎ চাহিদার তুলনায় বেশি যোগান ছিল। এগুলো সরকারের নানামুখি নীতির কারণেই সম্ভব হয়েছে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, সমগ্র পৃথিবী, অর্থনৈতিকভাবে অনেক সামর্থবান দেশগুলোও সাশ্রয়ীভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে। প্রধানমন্ত্রী সেভাবেই সাশ্রয়ীভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহারের আহবান জানিয়েছেন। যারা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিতে পারেনি, বিদ্যুতের দাবিতে মিছিলকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ করেছে তাদের বিদ্যুৎ নিয়ে কথা বলারই অধিকার থাকে না। আসলে বিএনপির কাছে কোন ইস্যু নেই তো, তাই কিছু একটা তো বলতে হবে, সেজন্যই কথা বলে।
তিনি আরও বলেন, পৃথিবীতে মহামারি চলছে, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে পৃথিবীতে অর্থনৈতিক সঙ্কট তৈরি হয়েছে। আপনারা জানেন পদ্মা সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রেও নানা প্রতিবন্ধকতা ও ষড়যন্ত্র ছিল। সমস্ত প্রতিবন্ধকতা ও ষড়যন্ত্রকে পেছনে ফেলে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পদ্মা সেতু যেমন নির্মিত হয়েছে পৃথিবীর এই সঙ্কটকালীন সময়ের মধ্যেও সমস্ত প্রতিবন্ধকতা ও সীমাবদ্ধতাকে উপড়ে ফেলে দেশ সমৃদ্ধির পথে অভিযাত্রা অব্যাহত থাকবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ঠিকানায় দেশ পৌঁছাবে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। পবিত্র ঈদ উপলক্ষে সেই প্রার্থনা আমরা করেছি, আজকেও একই প্রত্যাশা করি।