আমাদের মুসলিম সম্প্রদায়ের দুটি বড় ধর্মীয় পর্ব একটি হচ্ছে ঈদুল ফিতর ও আরেকটি হচ্ছে ঈদুল আযহা। ঈদুল ফিতর মূলত রমজানের সিয়াম সাধনার সমাপ্তি ও আনন্দ এবং ঈদুল আজহা হচ্ছে হজরত ইব্রাহিম (আ.)এর কুরবানির অনুসরণে মুসলিম উম্মাহ প্রতি বছর ১০ই যিলহাজ তারিখে পশু কুরবানি করে থাকে।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৭৬২তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক, জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের (জানিপপ) চেয়ারম্যান ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, সর্ব ইউরোপীয় আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি, ইতালি বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনের প্রথম নির্বাচিত সভাপতি কে এম লোকমান হোসেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।
ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, আমাদের মুসলিম সম্প্রদায়ের দুটি বড় ধর্মীয় পর্ব একটি হচ্ছে ঈদুল ফিতর ও আরেকটি হচ্ছে ঈদুল আযহা। ঈদুল ফিতর মূলত রমজানের সিয়াম সাধনার সমাপ্তি ও আনন্দ এবং ঈদুল আজহা হচ্ছে হজরত ইব্রাহিম (আ.)এর কুরবানির অনুসরণে মুসলিম উম্মাহ প্রতি বছর ১০ই যিলহাজ তারিখে পশু কুরবানি করে থাকে।বাঙালির সংস্কৃতি একটি মিশ্র সংস্কৃতি। বর্তমান বাঙালি সংস্কৃতিতে হিন্দু, মুসলিম, আদিবাসীসহ এ ভূমির ভূমিজ সকল সম্প্রদায়ের অবদান বা প্রভাব রয়েছে। তাই দেশে উৎসব বা ধর্মীয় উৎসব হয়তো কোনো বিশেষ সম্প্রদায়ের হলেও, সে সকল উৎসবের আনন্দ সকল সম্প্রদায়ের মানুষই আনন্দের সাথে উদযাপন করে। পবিত্র ঈদুল আজহা আমাদের ত্যাগের শিক্ষাই দেয়। ঈদুল আজহা একই সঙ্গে ত্যাগ এবং আনন্দের। পরিবার-পরিজন মিলে একসঙ্গে ঈদ উদযাপন করার মধ্য দিয়ে এ আনন্দের ধারা বইয়ে যায়। বিশেষ করে শিশু-কিশোররা এক নির্মল আনন্দে মেতে ওঠে।
কে এম লোকমান হোসেন বলেন, ঈদের আনন্দে দল-মত নির্বিশেষে সব শ্রেণির মানুষের সাথে ভাগ করার মাঝেই সর্বাঙ্গীণ কল্যাণ। ঈদুল আজহা মুসলিম উম্মাহকে সাম্য, মৈত্রী, ঐক্য এবং ইসলামি ভ্রাতৃত্ববোধ শিক্ষা দেয়। এভাবে ঈদুল আজহার উৎসব ইসলামি জীবন পদ্ধতির ভিত্তিতে একটি বিশ্বজনীন নীতির ওপর গুরুত্বারোপ করে থাকে। এ আনন্দের দিনে প্রতিটি মুসলিম তার সামাজিক অবস্থান ভুলে যায় এবং ভ্রাতৃত্ববোধের পর তৃপ্তিতে একে অপরকে আলিঙ্গন করে। পার্থক্য থাকে না ধনী-দরিদ্র, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, সবল-দুর্বল, বংশ গৌরব, কৌলীন্য ও মান-মর্যাদা। পবিত্র ঈদুল আজহায় পশু কোরবানি মানুষের মধ্যে ত্যাগের আবহ নিয়ে আসে। কোরবানির মাংস গরিব-দুঃখীদের মধ্যে বিলিয়েও অপার আনন্দ ও সওয়াব পাওয়া যায়। ধর্মীয় বিধানও এমনই। ঈদুল আজহাকে কেবল পশু জবাই আর মাংস খাওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না। কোরবানির ত্যাগের যে মহান আদর্শ সেটি ছড়িয়ে দিতে হবে সর্বত্র। মনের পশুকে পরাস্ত করে মানবিকতার উন্মেষ ঘটানোই হচ্ছে মূলকথা। মানুষে মানুষে ভেদাভেদ ভুলে ঐক্য এবং সংহতির পরিবেশ গড়ে তোলাটা জরুরি।