রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: বিএনপির বড় বিশৃঙ্খলার চেষ্টা আ.লীগের সতর্কতায় বিফল: তথ্যমন্ত্রী   সংকটকে সম্ভাবনায় রূপ দিতে কাজ করছে সরকার: কাদের   নাটোরে ট্রেনে কাটা পড়ে ৩ জনের মৃত্যু   ‘কিছুই করি নাই শ্রেণিটা’ চোখ থাকতেও দেখে না: প্রধানমন্ত্রী   রাজকে আমার জীবন থেকে ছুটি দিয়ে দিলাম: পরীমনি   সৌদি আরবের ক্লাবে যোগ দিলেন রোনালদো   বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
ছোট গরুর চাহিদা বেশি হওয়ায় দাম ভাল পাচ্ছেন খামারিরা
বেড়া (পাবনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৫ জুলাই, ২০২২, ৮:৫৪ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে পাবনা-সিরাজগঞ্জের গো-খামারিরা তাদের গরু বিক্রির জন্য আসেন উত্তরবঙ্গের বৃহৎ পশুর হাট বেড়ার "চতুর হাট" পশুর হাটে।এখানে আসা ঢাকা চট্রগ্রামের ব্যাপারীরা তাদের বড় গরু গুলো কিনে থাকেন। তবে গত দুই তিন বছর ধরে বড় গরুর ক্রেতা কমে যাওয়ায় 
ব্যাপারীদের অনেকেই আসছেন না হাটে।ফলে ক্রেতা স্বল্পতায় বড় গরু কাঙ্খিত দাম পাচ্ছেন না খামারিরা। অন্যদিকে ছোট মাঝারি গরু চাহিদা বেশি থাকায় কিনতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন ক্রেতারা।

সরেজমিনে মঙ্গলবার (৫ জুলাই) হাটে গিয়ে দেখা যায় পাবনা সিরাজগঞ্জ জেলার হাজারো খামারি ট্রাক ও নসিমনে গরু নিয়ে বেড়া চতুর হাটে এসেছেন। ছোট বড় সব বিক্রেতাকে হাটে আসতে দেখা যায়।কিন্তু ছোট ও মাঝারি ধরনের গরু বেশি বিক্রি হলেও বড় গরুগুলো কম বিক্রি হয়েছে বলে ক্রয় 
বিক্রয় সংশ্লিষ্টরা জানান।

বেড়া পৌর এলাকার শুম্ভুপুর মহল্লার গরুর ব্যাপারী  মোঃ সামছুল ইসলাম বলেন, এবারে তিনি ১৭টি 
গরু কিনেছেন। যে গুলো প্রতিটি গড়ে ৯০হাজার  টাকার মধ্যে  কেনা। গরুগুলোকে তিনি সাভার পল্লী 
বিদ্যুৎ হাট ও নারায়ণগঞ্জের পাগলা হাটে নেবেন। বড় গরু কেন? কিনছেন না এমন প্রশ্নে তিনি 
বলেন, গত তিন চারবছর ধরে ও-ই সকল হাটে বড় গরুর চাহিদা অনেক কমে গেছে। সে কারণে 
তিনি ঝুকি নিচ্ছেন না। 

সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নের পার করমজা গ্রামের খামারি আব্দুল্লাহ বলেন,বছর দশেক 
আগে তিনি  মালয়শিয়া থেকে দেশে ফিরে নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় একটি খামার গড়ে তুলেছেন। প্রথম 
পাঁচ ছয় বছর তিনি গো-লালন পালন ও ক্রয় বিক্রয় করে ভাল  লাভ করেছেন। এখন বাড়তি দামে 
 গো-খাদ্য কিনে গরু লালন পালন করতে হিমশিম খাচ্ছেন। গত মঙ্গলবার এমন ছয়টি গরু তিনি হাটে 
তুলেছিলেন, দিনভর অপেক্ষা করে তিনি সেগুলো বিক্রি করতে পারেননি আজ আবার গরু গুলো হাটে 
তুলেছেন।দুপুর গড়িয়ে যাচ্ছে দেড় লাখ টাকা দামের দুইটা গরু বেচে অপেক্ষায় আছেন আড়াই তিন 
লাখ টাকা দামের চারটি গরু বিক্রি করবেন বলে। তিনি বলেন বর্তমান হাটে এ গরু গুলো ব্যাপারীরা 
যে দাম কচ্ছে তাতে কসাই দামও হচ্ছে না।  তিনি লোকসান দিয়ে গরু বেচবেন না বলে শেষ পর্যন্ত 
হাটে অপেক্ষা করবেন।

 সাঁথিয়া উপজেলার ছেচানিয়া গ্রামের কুতুব আলী বলেন, তিনি চারমাস আগে এই হাট থেকে ২ লাখ 
২২ হাজার টাকা দিয়ে ৩ টি গরু কিনেছিলেন। চার মাস লালনপালন করে গরু ৩টির পরন ছিল ২ 
লাখ ৭৫ হাজার টাকার মতো । গরু তিনটি তিনি ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা বেচে মুখে হাসি নিয়ে হাট 
থেকে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। 

 হাটে গরু কিনতে আসা বেড়া মনজুর কাদের মহিলা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক আবুল 
কালাম আযাদ বলেন, তার আয়ের সাথে সংগতি রেখে একটি তিন মণ (মাংসের হিসেব) সাইজের 
একটি ষাড় কিনলেন ৭৮ হাজার টাকা দাম ধরে। বাজার ঘুরে দেখলেন এমন সাইজের গরু
বিক্রেতারা ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে। হাটে এমন গরু  ক্রেতাদের গরু কিনতে হচ্ছে প্রতিযোগিতা 
করে। তিনি আরো জানালেন, গরুটি যদি ছয় সাত মণের হতো তবে তুলনামূলক ভাবে কম মূল্যে
কিনতে পারতেন।

বেড়া পৌর এলাকার বৃশালিখা মহল্লার সৌদ সরকার যিনি এলাকার সফল গরুর ব্যাপারী হিসেবে 
পরিচিত তিনি বলেন, এলাকার বড় বড় গরু কিনে তিনি ঢাকা নারায়ণগঞ্জে নিয়ে বিক্রি করতেন। 
কৃষক ও খামারিদের কাছে বিশ্বস্ত ছিলেন তিনি। অনেক কৃষক ও খামারি তাকে বাঁকিতে গরু দিতেন। 
ঢাকা কেরানীগঞ্জে  কুরবানির হাটে সে গরু বিক্রি করে এসে তাদের টাকা শোধ করতেন । কিন্ত গত 
তিন বছরে তিনি প্রায় চল্লিশ লক্ষ টাকা লোকসান দিয়ে বড় গরু কেনাবেচা বাদ দিয়েছেন।

বেড়া পৌর এলাকার দক্ষিন পাড়া মহল্লার মটর শ্রমিক বাকি বিল্লাহ বলেন, তিনি আলহামড়া পরিবহনে 
গেটম্যান হিসেবে চাকরি করেন। বাড়িতে তিনি একটি ষাড় লালন পালন করেছেন অনেক কস্ট করে। 
ছয়মন (মাংস) ওজনের গরুর দাম উঠছে ১ লাখ ৩০হাজার টাকা। তিনি এ দামে ষাঁড়টি বিক্রি করতে 
চান না। তার কথা এত দাম দিয়ে খৈল ভূষি কিনে গরু পালন করে এমন দামে বেচলে তার লোকসান 
হবে।

এভাবে হাটে বড় গরু নিয়ে আসা প্রতিটি খামাড়ি ও কৃষকেরা জানান, তারা বড় সাইজের গরু পালন 
করে ব্যাপক ক্ষতির মধ্যে পড়েছেন। হাটে বড় গরুর চাহিদা এমন হবে জানলে তারা গরু গুলো  
রোযার ঈদের মধ্যেই কসাই দরে বিক্রি করে দিতেন। তিনমাস অতিরিক্ত পালনে বাড়তি খরচই এখন 
তাদের কান্নার কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। 

হাট কমিটির সমন্বয়ক ও বেড়া পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবু সাইয়িদ বলেন, গত দুই  
বছরের (করোনাকালীন) অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে রয়েছে দেশ। অনেক উচ্চবিত্ত মানুষ এবার গরু
কেনার বাজেট কমিয়ে দিয়েছে আবার অনেক এলাকার মানুষ পানি বন্দি রয়েছে এর কিছুটা প্রভাব 
পড়েছে পশু ক্রয় বিক্রয়ে। তবে মাঝারি ও ছোট গরু বিক্রি বেশি হয়েছে বলে তিনি জানান। 

বেড়া উপজেলা প্রাণিস¤পদ কর্মকর্তা ডাঃ মিজানুর রহমান বলেন,বেড়া উপজেলাসহ পাবনা সিরাজগঞ্জ 
 জেলায় এবার রেকর্ড পরিমান কোরবানির গরু প্রস্তুত করা হয়েছে। শুধু বেড়া উপজেলাতেই প্রায় ৫৪ 
হাজার কোরবানীর পশু গরু, ছাগল,ভেড়া প্রস্তত করা হয়েছে যা স্থানীয় চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি।

বড় গরুর দাম কম হওয়ায় খামারিদের ক্ষতি স্বীকার করে তিনি বলেন, খামারিদের প্রশিক্ষন দেয়া 
হচ্ছে কিভাবে কাঁচা ঘাষ ও প্রাকৃতিক খাদ্য খাইয়ে গরুর উৎপাদন খরচ কমিয়ে আনা যায়। তিনি আশা করেন খামারিরা এ সুযোগ গ্রহন করে ভবিষ্যতে গরু পালন করে লাভবান হবে।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]