বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: বিএনপির বড় বিশৃঙ্খলার চেষ্টা আ.লীগের সতর্কতায় বিফল: তথ্যমন্ত্রী   সংকটকে সম্ভাবনায় রূপ দিতে কাজ করছে সরকার: কাদের   নাটোরে ট্রেনে কাটা পড়ে ৩ জনের মৃত্যু   ‘কিছুই করি নাই শ্রেণিটা’ চোখ থাকতেও দেখে না: প্রধানমন্ত্রী   রাজকে আমার জীবন থেকে ছুটি দিয়ে দিলাম: পরীমনি   সৌদি আরবের ক্লাবে যোগ দিলেন রোনালদো   বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী হামিদার খামারে ৪৫ মণের ষাঁড়
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রকাশ: রোববার, ৩ জুলাই, ২০২২, ৮:৫৬ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

চাকরি নয়, গরুর বড় খামারি হওয়ার স্বপ্ন দেখেন টাঙ্গাইল সরকারি সা’দত কলেজ থেকে ইতিহাসে অর্নাস পাশ করা ছাত্রী হামিদা আক্তার। স্বপ্ন বাস্তবায়নে গত পাঁচ বছর ধরে অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের গাভিসহ ষাঁড় গরু লালন পালন করেছেন তিনি।   

বর্তমানে তার খামারে আছে অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের তিনটি গরু। দেশীয় পদ্ধতিতে লালন-পালন করে এরই মধ্যে বড় করে তুলেছেন পাঁচ বছর বয়সী বিশালাকৃতির একটি ষাঁড়। ষাঁড়টির নাম দিয়েছেন মানিক। 
 
ঈদুল আজহায় বিক্রির জন্য প্রস্তুত ৪৫ মণ ওজনের ষাঁড় মানিক। যার দাম হাঁকাচ্ছে ১৫ লাখ টাকা। জেলার সবচেয়ে বড় এই ষাঁড়টি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে প্রতিদিন মানুষ আসছেন হামিদার বাড়িতে। ন্যায্য দামে ষাঁড়টি বিক্রি হলেই তার খামার করার স্বপ্ন পূরণ সম্ভব হবে, এমনটাই মনে করছেন হামিদা।

হামিদা টাঙ্গাইলের নাগরপুর ও দেলদুয়ার উপজেলার সীমান্তবর্তী লাউহাটি ইউপির ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ভেঙ্গুলিয়া গ্রামের কৃষক আব্দুল হামিদ ও রিনা বেগমের মেয়ে। 

হামিদ-রিনা দম্পতির তিন মেয়ের মধ্যে বড় হামিদা। উপার্জনের টাকায় দুই বোনের লেখাপড়ার ব্যয় বহনসহ কৃষক বাবার সংসারের হাল ধরেছেন তিনি। এরইমধ্যে ছোট দুই বোনকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশও করিয়েছেন। এক বোনের বিয়ে দেয়াসহ আরেক বোনকে লেখাপড়া করাচ্ছেন নার্সিংয়ে।  

ভিটেবাড়িসহ বাবার জমির পরিমাণ মাত্র ৫০ শতাংশ। বাবার পক্ষে সংসারের খরচ বহন অসম্ভব হওয়ায় ২০১১ সাল থেকে লেখাপড়ার পাশাপাশি শুরু করেন তিনি দর্জির কাজ। গত ৫ বছর যাবত করেছেন গরু, রাজহাঁস ও কবুতর লালন পালন। বাড়ির সামনে বসিয়েছেন একটি মুদি দোকান। সেই দোকানেই নানা ধরণের খাদ্য সামগ্রী বিক্রির পাশাপাশি চালিয়ে যাচ্ছেন বিকাশ এজেন্ট, ফ্ল্যাক্সি লোড আর দর্জির কাজ। যার আয় থেকেই চলছে তাদের লেখাপড়াসহ সংসারের ভরণ পোষণ।

তিনি বলেন, পরিবারের সদস্যের মতোই বড় হচ্ছে তার অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের গরুগুলো। তাদের থাকার ঘরে রয়েছে দুটি সিলিং ফ্যান আর মশারি। নিয়মিত খাবারের তালিকায় রয়েছে খড়, ভুষি, কাঁচাঘাস, মাল্টা, পেয়ারা, কলা, মিষ্টি কুমড়া ও মিষ্টি আলু। রোগ জীবাণুর হাত থেকে বাঁচতে প্রতিদিন তাদের সাবান আর শ্যাম্পু দিয়ে গোসল করানো হয়। 

হামিদা বলেন, ৫ বছর আগে তার নিজের খামারের ফ্রিজিয়ান জাতের একটি গাড়ি থেকেই জন্ম নেয় মানিক ও রতন নামের দুটি ষাঁড় বাছুর। 

মানিকের পেছনে দৈনিক খাবার লাগছে ১৭ কেজি গমের ভূষি, ৪ কেজি ছোলা, ২ কেজি খুদের ভাত, আধা কেজি সরিষার খৈল। এছাড়াও দৈনিক তাকে খাওয়ানো হচ্ছে নানা জাতের পাকা কলা।  

হামিদা বলেন, বাড়ি থেকেই ষাঁড় বিক্রি করার চেষ্টা করছি। বাড়িতে এসে কোনো ক্রেতা ন্যায্য দাম বললে, সেক্ষেত্রে নিজ খরচে মানিককে ক্রেতাদের বাড়িতে পৌঁছে দেব। আসা করছি এ বছর ভালো দামে মানিককে বিক্রি করতে পারবো। 

হামিদা বলেন, আমার স্বপ্ন একজন বড় গরুর খামারি হওয়া। এ বছর ভালো দামে মানিককে বিক্রি করতে পারলে স্বপ্নের খামারটি নির্মাণ করবো।  

হামিদার মা রিনা বেগম বলেন, ওর বাবা গরু লালন পালন করতেন। যা দেখে হামিদাও গরু লালন পালনে আগ্রহী হয়েছে।  

ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম বুদ্দু বলেন, হামিদা একজন কৃষক বাবার মেয়ে ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রী। তার ছোট খামারে এবার ৪৫ মণের একটি ষাঁড় গরু হয়েছে। আমি চাই দরিদ্র পরিবারের ওই মেয়ের ষাঁড়টি ভালো দামে বিক্রি হোক।  

লাউহাটি ইউপি চেয়ারম্যান শাহীন মোহাম্মদ খান বলেন, হামিদার গরু লালন পালনের বিষয়টি অবগত আছি। বড় ধরণের খামার করতে চাইলে তাকে সহযোগিতা করা হবে। 

হামিদার বাবা আব্দুল হামিদ বলেন, ‘মানিক-রতনকে চার বছর ধরে পালছি। গত বছরও কোরবানির হাটে বিক্রি করিনি। নাম ধরে ডাকলে মাথা ও কান নাড়িয়ে সাড়া দেয়। তবে লকডাউনের কারণে এদের দাম নিয়ে চিন্তিত।’

দেলদুয়ার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. বাহাউদ্দিন সারোয়ার রিজভী জানান, এ উপজেলায় হামিদার ষাঁড়টিই সবচেয়ে বড়। অনলাইন হাটে তার ষাঁড়টির ছবি, ওজন ও দাম উল্লেখ করে বিক্রির জন্য প্রচারণা চালানো হবে।  



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]