#বাংলাদেশের প্রকৌশলীদের বিস্ময়ের প্রতীক পদ্মা সেতু: ড. শাহিনূর রহমান #পদ্মা সেতু আমাদের অহংকারের প্রতীক: মাহবুব খান
স্বপ্নের পদ্মা সেতু এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তবতা। গত ২৫ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হয়েছে। পদ্মার বুক চিরে এখন এই সেতু বাঙালির গৌরবের প্রতীক। পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে। আর এর ফলে বাংলাদেশ আত্মমর্যাদার নতুন উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৭৪৯তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়ার ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহিনূর রহমান, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব খান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।
ড. শাহিনূর রহমান বলেন, স্বপ্নের পদ্মা সেতু এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তবতা। গত ২৫ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হয়েছে। পদ্মার বুক চিরে এখন এই সেতু বাঙালির গৌরবের প্রতীক। পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে। আর এর ফলে বাংলাদেশ আত্মমর্যাদার নতুন উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে। আমাজন পৃথিবীর সবচেয়ে খরস্রোতা নদী। এর পরই পদ্মার অবস্থান। এই খরস্রোতা ও প্রমক্তা পদ্মার ওপরে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাস যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে বাংলাদেশের প্রকৌশলীদের সক্ষমতার বিষয়টি। এই নির্মাণকে কেন্দ্র করে ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। বিশ্বে বাংলাদেশের মর্যাদা বৃদ্ধির একমাত্র কারণ পদ্মা সেতু নয়। আরও বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে আকাশচুম্বী সাফল্য অর্জন করেছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ। কৃষি বিপ্লব, পোশাক রপ্তানি, স্বাস্থ্য সেবা, নারীর ক্ষমতায়ন, বিদ্যুৎ উৎপাদন, দ্রুত সময়ে ব্যাপকভিত্তিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, এসডিজি অর্জনে বিশ্বে শ্রেষ্ঠত্ব, সামাজিক নিরাপত্তা চিশ্চিতকরণ, সমুদ্রে অধিকার প্রতিষ্ঠা, তথ্য প্রযুক্তিতে বৈপ্লবিক উন্নয়ন- এসকল ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক সাফল্য দেখিয়ে বিশ্বে বাংলাদেশ মর্যাদার স্থান করে নিয়েছে। গত একযুগেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ এই সাফল্য দেখিয়ে আসছে। তাই শেখ হাসিনার পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘটনাটি তাঁর নিরবচ্ছিন্ন সাফল্যের ধারাবাহিকতা। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি, জিডিপি প্রবৃদ্ধি, বিভিন্ন সামাজিক সূচকে ক্রমবর্ধমান অগ্রগতি এখন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। পদ্মা সেতুর মতো মেগা প্রকল্প নিজের টাকায় বাস্তবায়ন করার সাহসী সিদ্ধান্ত ও কৃতিত্বের কারণেই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতা সারা বিশ্বে বিশ্বাসযোগ্য হয়েছে। এই একটি মাত্র আত্মবিশ্বাসী যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত দৃঢ়চেতা, সফল, জনকল্যাণকামী রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে সারা বিশ্বে মর্যাদার আসনে আসীন করেছে।
মাহবুব খান বলেন, পদ্মা সেতু এখন দৃশ্যমান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রমত্তা পদ্মা, কীর্তিনাশা পদ্মার ওপর সেতুর স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন দক্ষিণ-পশ্চিম বাংলার মানুষকে। দেশের মানুষকে। জনগণের মধ্যে পদ্মা সেতুর আকাঙ্ক্ষা জাগ্রত করেছিলেন। তিনি পদ্মা সেতু তৈরি করে মানুষের স্বপ্নকে পূরণ করলেন। কিন্তু এই পদ্মা সেতুর নির্মাণ কেবল একটি স্থাপনা নির্ভর নয়। পদ্মা সেতু নির্মিত হয়েছে অনেক ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত উপেক্ষা করে। সব ষড়যন্ত্র, চক্রান্তকে পরাজিত করেই রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুকে বাস্তব রূপ দিয়েছেন। পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যাংকের তথাকথিত দুর্নীতির অভিযোগ শুধু ভিত্তিহীন ও বানোয়াটই ছিল না, তা ছিল পুরোপুরি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রসূত। যার ভিত্তি ছিল গালগল্প আর গুজব। বিশ্বব্যাংক, দেশি-বিদেশি কিছু চক্র পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের শুরুতেই বাধার সৃষ্টি করে। এই গোষ্ঠী সম্মিলিতভাবে অসত্য প্রচারে লিপ্ত হয়। কিন্তু কোন ষড়যন্ত্র জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দমাতে পারেননি এবং ভবিষ্যতেও পারবে না। পদ্মা সেতুর মাধ্যমে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৯টি জেলা সরাসরি সারা দেশের সঙ্গে যুক্ত হবে। এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি লাঘব হবে। ঢাকা থেকে খুলনা, মোংলা, বরিশাল, কুয়াকাটা অর্থনৈতিক করিডর খুলে যাবে। এ সেতুকে ঘিরে বিশদ অঞ্চল জুড়ে গড়ে উঠবে নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাই-টেক পার্ক। ফলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট হবে এবং দেশের শিল্পায়নের গতি ত্বরান্বিত হবে। সেতু ঘিরে পদ্মার দু'পারে পর্যটন শিল্পের ব্যাপক প্রসার এখন শুধু সময়ের অপেক্ষায় মাত্র।