দেশীয় অর্থায়নে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প সঠিকভাবে সম্পন্ন করায় বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। একই সঙ্গে বাংলাদেশের দারিদ্র্য নিরসন ও প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধিতে পদ্মা সেতু অবদান রাখবে বলেও আশা প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
শনিবার (২৫ জুন) মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে সুধী সমাবেশে যোগ দিয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি মিয়াং টেম্বন এসব কথা বলেন।
‘এটি একটি আনন্দঘন মুহূর্ত’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী। আমরা মনে করি পদ্মা সেতু বাংলাদেশের মানুষকে অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবে। এই সেতুর মাধ্যমে নতুন কর্মসংস্থান হবে, পণ্য অনেক দ্রুত বাজারে চলে আসবে, জীবনযাত্রার মান বাড়াবে এবং দারিদ্র কমাবে।
বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুর অর্থায়ন থেকে সরে দাঁড়িয়েছিল। এনিয়ে কোনও অনুশোচনা রয়েছে কিনা, জানতে চাইলে তিনি সরাসরি কোনও জবাব দেননি। তিনি বলেন, আমরা খুবই আনন্দিত যে পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হয়েছে। আমরা আনন্দের সঙ্গে সামনের দিনগুলো দেখবো, পিছনে ফিরে দেখবো না।
উল্লেখ্য, পদ্মা সেতু প্রকল্পের নকশা চূড়ান্ত হওয়ার পর ২০১১ সালের এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে সেতু প্রকল্পে অর্থায়নের বিষয়ে বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), জাইকা ও ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবি) সঙ্গে ঋণচুক্তি সই করে সরকার। কিন্তু নির্মাণকাজের তদারক করতে পরামর্শক নিয়োগে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনে বিশ্বব্যাংক। এরপর একে একে সব অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠান প্রতিশ্রুত অর্থায়ন স্থগিত ঘোষণা করে।
বিশ্বব্যাংকসহ অন্যরা অর্থায়ন স্থগিত করার পর প্রকল্পে যুক্ত হওয়ার প্রস্তাব নিয়ে আসে মালয়েশিয়ার সরকার। এ নিয়ে কিছুদিন আলোচনা চলার পর তা আর এগোয়নি।
২০১২ সালের ৯ জুলাই মন্ত্রিপরিষদের এক বৈঠকে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আন্তর্জাতিক অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে পদ্মা সেতুর জন্য অর্থ না নেওয়ার কথা জানিয়ে দেয় সরকার।
অবশ্য ২০১৪ সালে তদন্ত শেষে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) জানায়, দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ২০১৭ সালে কানাডার টরন্টোর এক আদালত জানায়, পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের উপযুক্ত প্রমাণ পাননি তারা।