সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: বিএনপির বড় বিশৃঙ্খলার চেষ্টা আ.লীগের সতর্কতায় বিফল: তথ্যমন্ত্রী   সংকটকে সম্ভাবনায় রূপ দিতে কাজ করছে সরকার: কাদের   নাটোরে ট্রেনে কাটা পড়ে ৩ জনের মৃত্যু   ‘কিছুই করি নাই শ্রেণিটা’ চোখ থাকতেও দেখে না: প্রধানমন্ত্রী   রাজকে আমার জীবন থেকে ছুটি দিয়ে দিলাম: পরীমনি   সৌদি আরবের ক্লাবে যোগ দিলেন রোনালদো   বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
পদ্মা সেতুর উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: শনিবার, ২৫ জুন, ২০২২, ৯:৩৮ এএম | অনলাইন সংস্করণ

বহুল প্রতিক্ষিত পদ্মা সেতু উদ্বোধন করতে পদ্মার মাওয়া প্রান্তের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (২৫ জুন) সকাল সাড়ে ৯টায় তেজগাঁওয়ের পুরাতন বিমানবন্দর থেকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পদস্থ কর্মকর্তারা তার সঙ্গে ছিলেন।

দিনের কার্যসূচি অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী সকাল ১০টায় মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন। সেখানে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে সুধী সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করবেন। বেলা ১১টায় পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকিট, স্যুভেনির শিট, উদ্বোধন খাম ও সিলমোহর প্রকাশ করবেন। ১১টা ১০ মিনিটে টোলপ্লাজার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে টোল দিয়ে ১১টা ১৫ মিনিটে মাওয়া প্রান্তে উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল-১ উন্মোচন করে মোনাজাতে অংশ নেবেন।

১১টা ২৩ মিনিটে সড়ক পথে জাজিরা প্রন্তের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন। বহুল কাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতু পার হয়ে তিনি ১১টা ৪৫ মিনিটে পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল-২ উন্মোচন করে আবারও মোনাজাতে অংশ নেবেন। সেখান থেকে ১১টা ৫০ মিনিটে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ির উদ্দেশ্যে সড়ক পথে যাত্রা করবেন। দুপুর ১২টায় কাঁঠালবাড়িতে আওয়ামী লীগের জনসভায় অংশ নেবেন। দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে জনসভা শেষ করে শরীয়তপুরের জাজিরার সার্ভিস এরিয়া-২ এর উদ্দেশ্যে সড়কপথে যাত্রা করবেন। সেখানে কিছু সময় অবস্থান করবেন। পরে জাজিরা প্রান্ত থেকে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করবেন।

এক নজরে পদ্মা সেতুর স্বপ্ন থেকে বাস্তবায়ন

১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ১৯৯৮-৯৯ সালে প্রমত্তা পদ্মা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের প্রাক-সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা হয়। এরপর ২০০১ সালের ৪ জুলাই পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২০০৩-২০০৫ সালে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা হয়। ২০০৪ সালে জাপানি উন্নয়ন সংস্থা জাইকা একটি সমীক্ষা চালিয়ে মাওয়া-জাজিরা পয়েন্টে সেতু নির্মাণের পরামর্শ দেয়। এরপর ২০০৬ সালে পদ্মা সেতুর জন্য জমি অধিগ্রহণের প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু করা হয়।

২০০৭ সালে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সহায়তায় এ সেতু নির্মাণের আলোচনা শুরু করে। তখন একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ১০ হাজার ১৬২ কোটি টাকা।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর পদ্মা সেতু নির্মাণে গতি পায়। দায়িত্বগ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন আঙ্গিকে পদ্মা সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করেন। পদ্মা সেতুকে শুধু সড়কে সীমাবদ্ধ না রেখে এতে রেল সংযুক্ত করেন। দুই তলা এ সেতুর ওপরে সড়ক এবং নিচ তলা দিয়ে রেল লাইন নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়।

২০০৯ সালে পদ্মা সেতুর জন্য ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়। ২০০৯ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে বিস্তারিত নকশা প্রণয়ন করা হয়। নকশা প্রণয়নের দায়িত্ব পায় নিউজিল্যান্ডভিত্তিক মাউনসেল লিমিটেড। ২০১০ সালের ১১ এপ্রিল মূল সেতুর দরপত্র আহ্বান করা হয়।

২০১১ সালের ১১ জানুয়ারি রেলপথ যুক্ত করে একনেকে ২০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকায় পদ্মা বহুমুখী সেতু সংশোধিত নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়।

২০১১ সালের ২৮ এপ্রিল পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে ১২০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি হয়। একই বছরের ১৮ মে জাইকার সঙ্গে সরকারের ৪১ কোটি ৫০ লাখ ডলার এবং ৬ জুন  এডিবির সাথে ৬১ কোটি ৫০ লাখ ডলারের ঋণচুক্তি করে সরকার।

২০১১ সালের ১০ অক্টোবর পদ্মা প্রকল্পে অর্থায়ন স্থগিত করেছে বিশ্ব ব্যাংক। দুর্নীতির অভিযোগ আনে সংস্থাটি।

২০১১ সালের ১৪ নভেম্বর সেতু বিভাগের সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াকে বদলি করে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া হয়। একই বছরের ৫ ডিসেম্বর তৎকালীন যোগাযোগ মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।

২০১২ সালের ২৯ জুন ঋণচুক্তি বাতিলের কথা জানায় বিশ্ব ব্যাংক। পরে অন্যান্য দাতা সংস্থাগুলোকে একই পথ ধরে। পদ্মা সেতুতে বিশ্ব ব্যাংক অর্থায়ন বন্ধে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দায়ী করে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২০১২ সালের ৪ জুলাই জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করার কথা বলেন। ৮ জুলাই নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ পরিকল্পনা সংসদে পেশ করেন তিনি।

২০১২ সালের ৯ জুলাই নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রিসভা। বৈঠকে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহের সিদ্ধান্ত হয়।

২০১২ সালের ২৩ জুলাই বিশ্ব ব্যাংকের দেওয়া শর্ত মেনে সৈয়দ আবুল হোসেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকে পদত্যাগ করেন। ২৪ জুলাই আগেই সেতু সচিব থেকে সরিয়ে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান করে পাঠানো মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াকে ও এসডি করে ছুটিতে পাঠায় সরকার।

২০১২ সালের ২৫ ‍জুলাই লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ব ব্যাংক আসুক আর না আসুক। আমরা পদ্মা সেতু করব। আমাদের নিজেদের প্রস্তুতি আছে।

২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্বর সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াকে প্রধান আসামি করে সাত জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। ২৬ ডিসেম্বর রাজধানীর শাহবাগ এলাকা থেকে মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেয় দুদক। গ্রেপ্তার করা হয় আরও দু’জনকে। ২০১৩ সালের ১৬ জানুয়ারি মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করে সরকার। ২০১৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি জামিনে মুক্ত হন তিনি।

২০১৩ সালের ৩১ জানুয়ারি পদ্মা সেতুতে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থ আর নেওয়া হবে না সরকার এমন সিদ্ধান্তের কথা জানায়।

২০১৪ সালের ১৭ জুন পদ্মা বহুমুখী সেতুটি নির্মাণে চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি করে সেতু বিভাগ।

২০১৪ সালে ১৭ সেপ্টেম্বর দুদক জানায় পদ্মা সেতুতে কোন দুর্নীতি হয়নি। ২৬ অক্টোবর পদ্মা সেতু দুর্নীতির মামলার অবসান হয়।

২০১৭ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি কানাডার গণমাধ্যম জানায়, পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের যে অভিযোগ তুলে বিশ্ব ব্যাংক ঋণ বাতিল করেছিল তার প্রমাণ পায়নি কানাডার আদালত।

২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর মূল পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পদ্মা নেতুর পিয়ারে প্রথম স্প্যান বসানো হয়। এ প্রথম দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে ৪২টি পিয়ারে ৪১টি স্প্যান বসানো হয়। ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর শেষ স্প্যান বসানোর মাধ্যমে সংযুক্ত হয় মাওয়া-জাজিরা, দৃশ্যমান হয় ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটারের পদ্মা সেতু।

২০২১ সালের ১০ নভেম্বর পদ্মা সেতুতে পিচ ঢালাইয়ের কাজ শুরু হয়। ২০২২ সালের ৪ জুন প্রথম সেতুর ল্যাম্প পোস্টে আলো জ্বলে। ১৪ জুন মাওয়া থেকে জাজিরা পর্যন্ত ৪১৫ বাতি একযোগে জ্বালানো হয়। উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত করা হয় পদ্মা সেতু।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]