#পদ্মা সেতু বৃহত্তর বাঙালি জনগোষ্ঠীর স্বপ্ন পূরণ করেছে: অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল। #ষড়যন্ত্রকারীদের যেকোনো মূল্যে প্রতিহত করতে হবে: উইলিয়াম প্রলয় সমদ্দার। #বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছেন শেখ হাসিনা: রবিন মোহাম্মদ আলী।
প্রকাশ: বুধবার, ১ জুন, ২০২২, ১০:৪৪ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
পদ্মা সেতুর মাধ্যমে বৃহত্তর বাঙালি জনগোষ্ঠীর স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। এই সেতুর বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের জিডিপিতে এক শতাংশ যোগ করবে। এই সেতু আমাদের ২০৪১ সালের স্বপ্ন পূরণে আরও একটি বড় ধাপ এই নিয়ে কারও সন্দেহ নেই। পদ্মা সেতু আজ আর স্বপ্ন নয়, বাস্তবতা। অর্থনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতার জন্য পদ্ম সেতু বাংলাদেশের গর্ব। বিশ্বব্যাংক এবং তার সঙ্গে আরও কয়েকটি দাতা গোষ্ঠী যখন পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন করল না তখন এ দেশের সাহসী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা সুচিন্তিতভাবে দেশে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেন।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৭২২তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে লিভার বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক, খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক উইলিয়াম প্রলয় সমদ্দার, ভিয়েনা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি রবিন মোহাম্মদ আলী। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।
অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল বলেন, পদ্মা সেতুর মাধ্যমে বৃহত্তর বাঙালি জনগোষ্ঠীর স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। এই সেতুর বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের জিডিপিতে এক শতাংশ যোগ করবে। এই সেতু আমাদের ২০৪১ সালের স্বপ্ন পূরণে আরও একটি বড় ধাপ এই নিয়ে কারও সন্দেহ নেই। কিন্তু এই স্বপ্ন পূরণের বাধা দিতে একদল মানুষের স্বপ্ন ছিল যাতে যেকোনোভাবেই হোক এই পদ্মা সেতুর বাস্তবায়নকে ঠেকানো যায়। আজ বৃহত্তর বাঙালি জনগোষ্ঠীর স্বপ্ন পূরণের মাধ্যমে তাদের স্বপ্নভঙ্গের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক এই ষড়যন্ত্র গোষ্ঠীরা তাদের কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন পূরণের জন্য ফের সক্রিয় হচ্ছে। এই মানুষরা এখন পদ্মাকে যতভাবে খাটো করে দেখা যায় সেভাবে দেখানোর চেষ্টা করছে। পদ্মা সেতু উদবধনের আগে থেকেই কিন্তু আশপাশের এলাকায় বিনিয়োগ বাড়তে শুরু করেছে। শিল্প প্রতিষ্ঠান নির্মাণের কাজ চলছে দ্রম্নত গতিতে। কৃষি-শিল্প-অর্থনীতি-শিক্ষা-বাণিজ্য সব ক্ষেত্রেই পদ্মা সেতু বিশাল ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে পদ্মা সেতু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আগামী ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের দিন নির্ধারণ করে দিয়েছেন। তাই পদ্মার দুই পারের মানুষসহ সমগ্র দেশবাসী গভীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় আছে সেই মাহেন্দ্রক্ষণের জন্য।
উইলিয়াম প্রলয় সমদ্দার বলেন, পদ্মা সেতু আজ আর স্বপ্ন নয়, বাস্তবতা। অর্থনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতার জন্য পদ্ম সেতু বাংলাদেশের গর্ব। বিশ্বব্যাংক এবং তার সঙ্গে আরও কয়েকটি দাতা গোষ্ঠী যখন পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন করল না তখন এ দেশের সাহসী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা সুচিন্তিতভাবে দেশে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেন। দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে বাঙালি জাতির স্বপ্ন এখন বাস্তব। পদ্মা সেতু যাতে না হয় সে জন্য ষড়যন্ত্রকারীদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল এ দেশের কয়েকটি সংবাদপত্র, যেগুলো দিনের পর দিন পদ্মা সেতুর কল্পিত দুর্নীতি নিয়ে মনগড়া গল্প চালিয়ে গেছে। শতসহস্র এসব গল্প উড়িয়ে দিয়ে পাঁচ বছরের বেশি সময়ের বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে কানাডার আদালত বলেছে, এই মামলায় যেসব তথ্য দেয়া হয়েছে, তা অনুমানভিত্তিক, গালগল্প এবং গুজবের বেশি কিছু নয়। দুর্নীতির এই অভিযোগ নিয়েই টানাপোড়েনের জের ধরে ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন থেকে সরে দাঁড়ায় বিশ্বব্যাংক। পরে নিজস্ব অর্থায়নেই বাংলাদেশ পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করে। আজকে যখন পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের প্রায় দ্বারপ্রান্তে তখন আবার সেই ষড়যন্ত্রকারীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এখনি সময় তাদেরকে চিহ্নিত করার এবং এই ষড়যন্ত্রকারীদের যেকোনো মূল্যে প্রতিহত করতে হবে।
রবিন মোহাম্মদ আলী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপ্ন দেখেছিলেন বলেই সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তারই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জুন মাসের ২৫ তারিখে যে সেতুটি উদ্বোধন হতে যাচ্ছে সেই সেতুকে সবাই বলে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। বাংলাদেশে আজ যেসব মেগাপ্রজেক্ট চলমান আছে সে গুলো একে একে বাস্তবায়ন হবে। পদ্মা সেতুর মাধ্যমে অর্থনৈতিক সুবিধার নানা দিক সামনে চলে আসছে। এই সেতু অর্থনীতিতে নতুন বিনিয়োগ আনবে। শিল্পায়নের ফলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলায় কর্মসংস্থান বাড়বে। এ অঞ্চলের দারিদ্র্য কমবে। এই সেতু দেশের মধ্যে আঞ্চলিক সংযোগ সম্প্রসারণ করবে এবং বিভিন্ন ধরনের পরিবহন চলাচল বাড়াবে। এ সময় তথাকথিত দেশি-বিদেশি বুদ্ধিজীবিরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের নানা রকম সমস্যার কথা তুলে সরকারের সমালোচনা করে পদ্মা সেতুর কাজ বন্ধ করার নানা রকম ফন্দি আঁটতে থাকে এবং নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা সম্ভব নয় এটাও দেশবাসীকে জানতে থাকে। পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের উপযুক্ত কোন প্রমান না পাওয়ায় কানাডার টরন্টোর এক আদালত এ সংক্রান্ত মামলা খারিজ করে দেয় এর মাধ্যমে বিশ্ব ব্যাংক যে অভিযোগ করেছিল বাংলাদেশ তা থেকে দায়মুক্তি পায়।বিশ্ব ব্যাংকের অভিযোগ মিথ্যা প্রমানীত হয়। আজ সমালোচকরা ফের সমালোচনা শুরু করেছে, অপপ্রচার শুরু করেছে। কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনা জবাব দিচ্ছে কাজের মাধ্যমে।এখন আমাদের কাজ হচ্ছে এই সকল অপপ্রচারকারীদের রুখে দেওয়া।