#পদ্মা সেতু আমাদের গর্বের প্রতীক: ড. শাহিনূর রহমান। #পদ্মা সেতুর পেছনে প্রবাসীদের অবদান অনেক: কে এম লোকমান হোসেন। #মুক্তিযুদ্ধের পর সবচে বড় অর্জন পদ্মা সেতু: শাহিদুল হাসান খোকন।
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন আমাদের কাছে আজকে এতো গুরুত্বপূর্ণ কারণ পদ্মা সেতু আজকে কেবল আমাদের কাছে একটি সাফল্য গাথার প্রমাণ এবং দক্ষিণ বঙ্গের সাথে পুরো ঢাকা শহর অন্যান্য সকল বিভাগে যে যোগাযোগ ব্যবস্থার দিক উন্মোচন হতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসিকতা ও দৃঢ়তার ফলে দেশে দীর্ঘতম এই সেতু আজ বাস্তবে পরিণত হয়েছে। পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হলে সবার আগে উপকার হবে এই পিছিয়ে পড়া মানুষগুলোর। দৃঢ়চেতা শেখ হাসিনার লৌহ ইস্পাত অঙ্গীকারের কারণে আজ এই পদ্মা সেতুর স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছি।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৭১৮তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়ার ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহিনূর রহমান, সর্ব ইউরোপীয় আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি, ইতালি বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনের প্রথম নির্বাচিত সভাপতি কে এম লোকমান হোসেন, সেন্টার ফর ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ রিলেশনসের পরিচালক, কলকাতা টিভির কান্ট্রি ইনচার্জ (বাংলাদেশ), শহিদুল হাসান খোকন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।
ড. শাহিনূর রহমান বলেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধন আমাদের কাছে আজকে এতো গুরুত্বপূর্ণ কারণ পদ্মা সেতু আজকে কেবল আমাদের কাছে একটি সাফল্য গাথার প্রমাণ এবং দক্ষিণ বঙ্গের সাথে পুরো ঢাকা শহর অন্যান্য সকল বিভাগে যে যোগাযোগ ব্যবস্থার দিক উন্মোচন হতে যাচ্ছে। সেজন্য আমি মনে করি পদ্মা সেতু আজকে কেবল শুধুমাত্র সেতুতেই সীমাবদ্ধ থাকতো যদি না এই সেতু নিয়ে এতো ষড়যন্ত্র না হতো। যাই হোক এতো ষড়যন্ত্র মাড়িয়ে পদ্মা সেতু আজ আমাদের গর্বের জায়গায় স্থান নিয়ে নিয়েছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেভাবে আমাদের এই দেশটাকে উপহার দিয়ে গিয়েছিলেন সেখান থেকে আজ বহুদূরে নিয়ে গেছেন তারই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়ন করার জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে কাজ করে যাচ্ছেন এবং দেশকে যেভাবে উন্নয়নের মহাসড়কে নিয়ে যাচ্ছেন তা কল্পনাতীত। শেখ হাসিনা-ম্যাজিকেই গত এক যুগে বদলে গেছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। দারিদ্র্য বিমোচন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, মাথাপিছু আয়, নারীর ক্ষমতায়ন, গড় আয়ু বৃদ্ধি, শিশু ও মাতৃমৃত্যু হ্রাসসহ বেশ কিছু সামাজিক সূচকে বাংলাদেশের অগ্রগতি বিশ্ব নেতৃত্বকে চমকে দিয়েছে। যেখানে উন্নত বিশ্বের অনেক দেশ গত বছর ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, সেখানে বাংলাদেশ কিভাবে তার উন্নয়নের চাকা সচল রাখতে সক্ষম হয়েছে, সেটাই ছিল বিস্ময়ের মূল কারণ। আসুন আমরা জননেত্রী শেখ হাসিনার এই গৃহীত পদক্ষেপগুলোকে আরও সামনের দিকে নেওয়ার জন্য তার হাতকে আরও শক্তিশালী করি যাতে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মগুলো বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে।
কে এম লোকমান হোসেন বলেন, আমি নিজেকে অনেক গর্বিত মনে করি কারণ পদ্মা সেতু পিছনে আমার কিছু অবদান রয়েছে। যখন বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুর অর্থায়ন দেওয়া থেকে যখন সড়ে দাঁড়ালো ঠিক তখন আমি সরাসরি আবুল বারাকাত সাহেবকে ফোন করে বললাম এই পদ্মা সেতু আমরা প্রবাসীরা করে দেব। তিনি তখন বললেন এই কথা কিন্তু আমি নেত্রীকে বলবো। পরে তিনি যখন নেত্রীকে এই কথা জানালেন তখন নেত্রী আমাদের কথায় সহমত পোষণ করলেন। আজ পদ্মার বুকে মাথা উঁচু করে কেবল সেতুই দাঁড়ায় নাই, বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। আগামী ২৫ জুন উদ্বোধন করা হবে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। এই সেতু বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে। এই স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করবেন বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয়-আন্তর্জাতিক অনেক বাধা, ঘাত-প্রতিঘাত, প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে দীর্ঘ-প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু। শুরুতেই অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মুখে পরে এই মেগা প্রকল্পটি। তবে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসিকতা ও দৃঢ়তার ফলে দেশে দীর্ঘতম এই সেতু আজ বাস্তবে পরিণত হয়েছে। পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হলে সবার আগে উপকার হবে এই পিছিয়ে পড়া মানুষগুলোর। কারণ পদ্মা সেতুর কল্যাণে ওইসব এলাকায় ব্যাপক আকারে শিল্পায়ন হবে, লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। শুধু তাই নয়, এতে মানুষের আয় বাড়বে এবং জীবন-জীবিকায় পরিবর্তন আসবে। আল্লাহ্ জননেত্রী শেখ হাসিনাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য। বিশ্বব্যাংক ও ইউনুস গংদের শত ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতির বহু কাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের পদ্মাসেতু আজ বাস্তব সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে জননেত্রী শেখ হাসিনার সুদৃঢ় নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
শাহিদুল হাসান খোকন বলেন, আমি প্রথমেই ভোরের পাতা কর্তৃপক্ষকে বিশেষ করে ড. কাজী এরতেজা হাসানকে, যিনি দীর্ঘদিন ধরে এমন একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে চলেছেন যেখানে বাংলাদেশের সমসাময়িক রাজনীতি, বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশের অর্থনীতিকে তুলে ধরছেন। সত্যিকার অর্থে এটি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। ভোরের পাতা নতুন প্রজন্মের মানুষকে জানার সুযোগ করে দিচ্ছে। আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অক্লান্ত পরিশ্রমে, তার সাহসিকতায়, তার দৃঢ় মনোভাবের কারণে বিশ্বের বুকে আজ পদ্মা সেতু একটি সাহসের নাম। আসলে সত্যি কথা বলতে কি, বাংলাদেশের ইতিহাসে মহান মুক্তিযুদ্ধের পর সবচে বড় অর্জন পদ্মা সেতু। আজ এই পদ্মা সেতু আমাদের আনন্দে যে নতুন মাত্রা যোগ করেছে সেটার পিছনের ইতিহাসটা কিন্তু অনেক ভয়াবহ। যে প্রতিবন্ধকতা আমাদের সামনে ছিল সেটার পাশ কাটিয়ে একটি পদ্মা সেতু করা আমাদের জন্য ছিল একটি বড় চ্যালেঞ্জ। পদ্মা সেতুর নির্মাণে যে অসহযোগিতা ছিল সেটা আমাদের জন্য একটি ভয়ঙ্কর পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল। তারা এদেশে খেয়ে, এদেশের মানুষের অর্থ লুণ্ঠন করে বাইরে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে, বিশেষ করে আমাদের দেশের একজন নোবেল বিজয়ী সরাসরি এই পদ্মা সেতুর বিরুদ্ধে কাজ করেছিল। কিন্তু দৃঢ়চেতা শেখ হাসিনার লৌহ ইস্পাত অঙ্গীকারের কারণে আজ এই পদ্মা সেতুর স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছি।