প্রকাশ: শনিবার, ২৮ মে, ২০২২, ২:২৬ পিএম আপডেট: ২৮.০৫.২০২২ ২:৩৩ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
মহান একুশের অমর সংগীত ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’— রচয়িতা, বরেণ্য সাংবাদিক, সাহিত্যিক ও কলাম লেখক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর মরদেহ সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয়েছে।
শনিবার (২৮ মে) দুপুর ১টার দিকে মরদেহ শহীদ মিনারে পৌঁছালে পুলিশের একটি চৌকস দল তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। এরপর সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য মরাদেহ শহীদ মিনারের বেদীতে রাখা হয়।
এ সময় প্রথমে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তার সামরিক সচিব মেজর জে. এস এম সালাউদ্দিন ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে তার সামরিক সচিব বিগ্রেডিয়ার জেনারেল কবির আহমেদ। এরপর জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরী ফুলেল শ্রদ্ধা জানান। পরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী ও নুরুল ইসলাম নাহিদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, বাহাউদ্দিন নাসিম প্রমুখ। এছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
দুপুর ৩টা পর্যন্ত শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাড়ে ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর বিকাল ৪টায় শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য জাতীয় প্রেসক্লাবে মরদেহ আনা হবে। বিকাল সাড়ে ৪টায় সেখান থেকে মরদেহ নেওয়া হবে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে। সেখানে বিকাল সাড়ে ৫টায় তাকে সমাহিত করা হবে।
আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী গত ১৯ মে লন্ডনের একটি হাসপাতালে ৮৮ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। পরে ২০ মে (শুক্রবার) পূর্ব লন্ডনের ব্রিক লেন মসজিদে তার প্রথম নামাজে জানাজা হয়। এরপর পূর্ব লন্ডনের ঐতিহাসিক শহীদ আলতাব আলী পার্কের শহীদ মিনারে বাংলাদেশি-ব্রিটিশ কমিউনিটির সদস্যরা তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে। গত ২৩ মে গাফ্ফার চৌধুরীর স্মরণে পূর্ব লন্ডনে এক মিলাদ মাহফিল ও শোকসভা আয়োজন করে বাংলাদেশ হাইকমিশন।
১৯৭৪ সাল থেকে লন্ডনে বসবাস করলেও মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার পক্ষে গাফ্ফার চৌধুরীর কলম সোচ্চার ছিল বরাবর। প্রবাসে থেকেও ঢাকার পত্রিকাগুলোয় তিনি রাজনৈতিক ধারাভাষ্যের পাশাপাশি সমকালীন নানান বিষয়ে লিখে গেছেন। রচনা করেছেন কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক, স্মৃতিকথা ও প্রবন্ধ।
বিশেষ করে, গত শতকের আশির দশকজুড়ে স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারের আমলে গাফ্ফার চৌধুরীর লেখা কলাম দেশের সব রাজনীতি-সচেতন পাঠকের কাছে ভীষণ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এভাবেই বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম, সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক বুদ্ধিজীবী পরিমণ্ডলে তিনি হয়ে উঠেছিলেন এক পরিচিত নাম।