#সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্রদল নেতাদের ধৃষ্টতা খতিয়ে দেখতে হবে: সোহান খান। #ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতির সুষ্ঠু বাতায়ন হোক: ইয়াজ আল রিয়াদ। #ঢাবিতে ত্রাসের রাজনীতি কায়েম করতে চায় বিএনপি-জামায়াত: মাহবুব খান। #ছাত্রদলের উস্কানির ফাঁদে পা দেবে না ছাত্রলীগ: শেখ নকিবুল ইসলাম সুমন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে অস্থির পরিবেশ সৃষ্টি হয় মাঝে মাঝে সেটার নীল নকশা কিন্তু ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে করা হয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই দল গুলো যখন ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য রাজনীতি করে এবং ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য যে নগ্ন রাজনীতির প্রদর্শন করে তখন এটা কিন্তু কোনভাবেই কাম্য নয়। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের অভিভাবক জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর সেই অভিভাবককে নিয়ে আপনারা অশালীন বক্তব্য দিবেন তখন আমরা কি চুপ করে বসে থাকব। আপনাদের খুঁজে খুঁজে বের করে চামড়া টেনে তবলা বানানো হবে, আপনাদের বাংলাদেশ থেকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হবে।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৭১৭তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সহ সভাপতি সোহান খান, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সহ সভাপতি ইয়াজ আল রিয়াদ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব খান, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাবেক উপ দপ্তর সম্পাদক শেখ নকিবুল ইসলাম সুমন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।
সোহান খান বলেন, যদি আজকের বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে যাই তাহলে আমাকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ২৯তম সম্মেলনের কিছু পটভূমি চলে আসে। ছাত্রলীগের ২৯তম সম্মেলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে যে অস্থির পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল সেটা আমার কাছে মনে হয় ১/১১ এর সময়ও যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে সেটার পুনরাবৃত্তি হয়েছিল ২৯ তম সম্মেলনের সময়। ঠিক এইরকম একটি সময়ে ছাত্রলীগের ২৯তম সম্মেলন আয়োজন তো দূরের কথা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য পড়াশুনার পরিবেশটা তাদের জন্য অনুকূলে রাখাও আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তখন আমরা দেখেছি ছাত্রলীগের হল কমিটির কিছু প্রেসিডেন্ট সেক্রেটারিরা হল থেকে অনেক ছেলে মেয়েকে মাঠে নামিয়েছিল আন্দোলন করার জন্য। নিশ্চয় কোন ইন্ধনে তাদেরকে সেদিন মাঠে নামানো হয়েছিল। এই ক্ষেত্রে আমি বলতে চাই, আজ যখন ছাত্রলীগের ৩০তম সম্মেলনের দ্বারপ্রান্তে আমরা তখন আমরা সবাই বলি এই সম্মেলনের পক্ষে আমরা। কিন্তু আমাদের শীর্ষ নেতৃত্বে যারা আছে তারা মুখে বলে এক কথা আর কাজে আরেক। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সম্মেলন কিন্তু একটি বিরাট ইস্যু। আজ যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের পাশে হাইকোর্ট এলাকায় ছাত্রদল ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে তখন এটার পিছনে আমি দুইটা কারণ দেখতে পাই। একটা হতে পারে, ক্যাম্পাসে অস্থির পরিস্থিতি রাখলে বর্তমানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের যে একটি সম্মেলন হওয়ার কথা সেটা ভিন্ন দিকে প্রভাবিত করা হতে পারে।
ইয়াজ আল রিয়াদ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে অস্থির পরিবেশ সৃষ্টি হয় মাঝে মাঝে সেটার নীল নকশা কিন্তু ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে করা হয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই দল গুলো যখন ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য রাজনীতি করে এবং ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য যে নগ্ন রাজনীতির প্রদর্শন করে তখন এটা কিন্তু কোনভাবেই কাম্য নয়। ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ে যা কিছু ঘটে তা কিন্তু আমাদের জাতীয় রাজনীতিতে ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলে। সাধারণ মানুষের কাছে কিন্তু এখনও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি একটি ন্যূনতম বিশ্বাসের জায়গা রয়েছে। এখন ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠকে গরম রাখতে চান, যারা লন্ডনে বসে নীল নকশা প্রণয়ন করে, যারা গুলশানে বসে বিভিন্ন এজেন্ডা প্রণয়ন করেন সেইগুলো এখন তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রয়োগ করার পায়তারা করছে। আমরা চাচ্ছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতির সুষ্ঠু বাতায়ন হোক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম সহ সকল কিছুই সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক থাকুক। আমরা চাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ বাদে সকল রাজনৈতিক দলের ছাত্র রাজনীতি সুস্থভাবে পরিচালনা হোক। কিন্তু এখন মোটা দাগে একটা প্রশ্ন দাড়ায় কেন এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এই পরিবেশ দেখতে হচ্ছে আমাদের? আসলে যখন জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসে তখন সর্বপ্রথম টার্গেট করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে। কিভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতিকে অশান্ত করা যায়, কিভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসকে উত্তপ্ত করা যায় এবং এটা যদি কোনভাবে তারা করতে পারে তাহলে রাজনীতিকে তারা ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে পারে।
মাহবুব খান বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলন আসলেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অস্থির হয়ে যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশের বিনষ্ট ঘটে, সেটা আসলে ২০১১ সালের ২৫ ও ২৬ জুলাই, ২০১৫ সালের ১০ ও ১১ জুলাই, ২০১৮ সালের ১০ ও ১১ মে এবং আবারো ২০২২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হচ্ছে ঢাকার প্রাণকেন্দ্র। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে এদেশের সকল আন্দোলন সংগ্রাম, এদেশের স্বাধিকার আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, পাকিস্তান স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন, জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে আন্দোলন, খন্দকার মোস্তাকের বিরুদ্ধে আন্দোলন, স্বৈরাচার শাসক এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন, ঘসেটি বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আন্দোলন সহ সকল আন্দোলনের সূত্রপাত কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই শুরু হয়। যারা বাংলাদেশকে পাকিস্তান রাষ্ট্রে পরিণীত করতে চায়, যারা বাংলাদেশে ত্রাসের রাজনীতি কায়েম করতে চাই তারাই আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের অভিভাবক জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর সেই অভিভাবককে নিয়ে আপনারা অশালীন বক্তব্য দিবেন তখন আমরা কি চুপ করে বসে থাকব। আপনাদের খুঁজে খুঁজে বের করে চামড়া টেনে তবলা বানানো হবে, আপনাদের বাংলাদেশ থেকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হবে।
শেখ নকিবুল ইসলাম সুমন বলেন, ছাত্রদলের রাজনীতির যে ধারাবাহিকতা সেটা কিন্তু তারা এখনও বজায় রেখেছে। তারা ক্যাম্পাসকে বিভিন্ন সময় উত্তপ্ত করার জন্য পায়তারা করেছে এবং এখনও করে যাচ্ছে। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা লাঠিসোঁটা, রড, পাইপ, রামদা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের শোডাউন চালিয়ে যাচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা তাদের নৈরাজ্য চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। একটার উপর হামলা হলে আরেকটার উপর স্বাভাবিকভাবেই হামলা হয়। এখন যখন ছাত্রদলের নেতারা আমাদের জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে এই ধরণের অশোভনীয়মূলক বাক্যে সম্বোধন করছে তখন কিন্ত এটা সুস্থ রাজনীতির জন্য কোনভাবেই কাম্য নয়। বিএনপি নামক যে রাজনীতি সংগঠন আছে সেটা কোনভাবেই রাজনৈতিক সংগঠন হতে পারে না। তারা বাংলাদেশে তাঁবেদারি এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায়। তারা পাকিস্তানি ভাবধারা আমাদের দেশে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। এখন আমাদেরকে চোখ কান খোলা রাখতে হবে যেন তারা কোনভাবেই যেন আমাদেরকে ব্যাবহার না করতে পারে।