প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৬ মে, ২০২২, ১০:২৭ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
পৃথিবীর প্রত্যেক জাতিরই একেকটা সময় একেকটা সুবর্ণ সময় আসে। আমাদেরও কয়েকটি সুবর্ণ সময় এসেছে। এর মধ্যে প্রথমটি ছিল আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ যার মাধ্যমে আমরা একটা স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র পেয়েছি। পদ্মা সেতু যখন বাস্তবায়ন হবে তখন থেকে এক বছরের পর প্রতি বছরে বাংলাদেশের জিডিপিতে ১.২% গ্রোথ যোগ করবে। আমাদের এখন জিডিপি গ্রোথ আছে ৭% এবং এই পদ্মা সেতু হয়ে গেলে হবে ৮% এবং এটা যদি আগামী ১০ বছর পর্যন্ত স্থায়িত্ব থাকে তাহলে আমাদের অর্থনীতি আরও অনেক দূরে চলে যাবে।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৭১৬তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- প্রধানমন্ত্রীর সাবেক বিশেষ দূত, বাংলাদেশ হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট ড. ওয়ালি-উর রহমান, পিএসসি, নিরাপত্তা বিশ্লেষক, গবেষক ও লেখক মে. জে. (অব.) এ কে মোহাম্মদ আলী শিকদার, মাদারীপুর অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি ওয়াদুদ মিয়া জনি। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।
ওয়াদুদ মিয়া জনি বলেন, বাঙালি জাতির বহুদিনের স্বপ্ন পূরণ হতে আর মাত্র দিন কয়েক বাকি। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বপ্ন দেখে, স্বপ্ন দেখায় এবং তা বাস্তবায়ন করেন, স্বপ্নের পদ্মা সেতু তারই জ্বলন্ত প্রমাণ। প্রধানমন্ত্রীর এই কৃতিত্বের জন্য সারাবিশ্বে বাংলাদেশের মাথা উঁচু হয়েছে। তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টা, দৃঢ় মনোবল আর আত্মবিশ্বাসের কারণেই বাংলাদেশ নিজেদের প্রচেষ্টায় পদ্মা সেতুর মতো একটি ব্যয়বহুল নির্মাণের স্বপ্নকে বাস্তবে রুপ দিতে পেরেছে। পদ্মা সেতুকে ঘিরে আনন্দের হিল্লোল বইছে দেশের প্রতিটি মানুষের মনে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ ও বিচক্ষণ নেতৃত্বে শত বাধা অতিক্রম করে স্বপ্নের সেই পদ্মা সেতু অবশেষে দৃশ্যমান হলো। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী নেতৃত্বই এই অসম্ভবকে সম্ভব করে বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছে- আমরাও পারি। বিশ্বকে অবাক করে দিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ স্বপ্নের পদ্মা সেতুর সর্বশেষ স্প্যানটি বসিয়ে। শুধু তাই নয়, একই সঙ্গে রচিত হতে যাচ্ছে এক থেকে দেড় শতাংশ প্রবৃদ্ধি বাড়ার এবং দারিদ্র্যের হার দশমিক ৮৪ শতাংশ কমিয়ে আনার সুন্দরতম স্বপ্ন। এই সেতু চালু হলে শিল্পায়ন ও বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধির পাবে। যার মাধ্যমে সরাসরি সুবিধার কারণে পরিবর্তন আসবে দেশের তিন কোটিরও বেশি মানুষের জীবনে। পদ্মা সেতু নির্মাণের সঙ্গে জ্বালানির চাহিদা নিশ্চিত হলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যুগান্তকারী উন্নয়ন হবে। এ অঞ্চলের বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের গতি আসবে, আয় বৈষম্যও কমে যাবে। পদ্মা সেতুর বাস্তবায়নের ফলে শুধু ঢাকা নয়, খুলনা-বরিশাল ছাড়া দেশের বেশিরভাগ বড় শহরে যেতে পদ্মানদী পাড় হতে হয়। পদ্মা পার হওয়ার সময়, ঘাটে অনেক বিড়ম্বনায় পড়তে হয় যাত্রীদের। সেতু চালু হলে এই বিড়ম্বনার হাত থেকে যাত্রীরা যেমন বাঁচবে, তেমনি সময়ও বাঁচবে আমদের। ইতোমধ্যে মাদারীপুর, ফরিদপুর এবং খুলনার খালিশপুরের অর্থনৈতিক জোনের সীমানা নির্ধারণ হয়ে গেছে।