প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৬ মে, ২০২২, ৬:৫০ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার গজঘন্টা ইউনিয়নের চরছালাপাক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান চলছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ভবন এতই ঝুঁকিপূর্ণ যে, সবসময় দুর্ঘটনার আতঙ্কে থাকেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তবে ভবনটি দূর থেকে দেখে বিষয়টি বোঝার উপায় নেই, কিন্তু ভেতরে গেলে চোখে পড়ে ছাদে ও দেওয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ার চিত্র। দেখা মেলে পিলার ও গ্রেট বিমগুলোতে বিস্তৃত ফাটল।
ইতিমধ্যেই এই ভবনের ১টি কক্ষ পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অবশিষ্ট প্রায় সব কক্ষ গুলোই ঝুঁকিপূর্ণ। বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন জেনেও সেখানে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। এ কারণে সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়ে আতঙ্কে থাকেন অভিভাবকরাও।
জানাযায়, ১৯৭২ সালে চর ছালাপাক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। পরে ২০০০-২০০১ অর্থ বছরে ১ তলা বিশিষ্ট দুটি ভবন নির্মাণ হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে ৩০০ জন শিক্ষার্থী ও ৬ জন শিক্ষক রয়েছেন। এ বিদ্যালয় ভবনে ২০১৮ সালে ত্রুটি দেখা দেওয়ার পর ধীরে ধীরে শ্রেণিকক্ষগুলো জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। ছাদ ও দেওয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ছে। বৃষ্টির সময়ে ছাদ চুয়ে পানি পড়ছে মেঝেতে। ফলে সবসময় দুর্ঘটনার আতঙ্কে থাকেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। অবস্থা দিনদিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। পাঠদান চালু রাখার স্বার্থে ঝুঁকিপূর্ণ কক্ষেই চলছে ক্লাস। শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পিলার ও গ্রেট বিমগুলোতে বিস্তৃত ফাটল দেখা দেওয়ায় ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীরা ভয়ে ভয়ে ক্লাস করে থাকে। ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় অনেক অভিভাবক তাদের ছেলেমেয়েকে বিদ্যালয়ে আসতে দিতে চান না।
৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী,সুমাইয়া,রতনা, নুরআলম মাহফুজার জানান, ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে। ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটিতে তারা ভয়ে ভয়ে ক্লাস করেন।
শিক্ষক মশিয়ার, মাহজাবীন সুলতানা, সায়মা চৌধুরী বলেন, প্রায় ৪ বছর ধরে ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান করতে হচ্ছে। যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তারা শিক্ষার্থীদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। অনেকে তাদের ছেলেমেয়েদের বিদ্যালয়ে আসতে দিতে চান না। এতে দিনদিন শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমছে।
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক বলেন, বর্তমানে বিদ্যালয় ভবন বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। যে কারণে ভয়ে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসতে চায় না। অবকাঠামোগত উন্নয়ন করে শিক্ষার মৌলিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা না গেলে শিক্ষার্থীরা আরও স্কুলবিমুখ হবে এবং ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়তেই থাকবে। দ্রুত এ বিষয়ে একটি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। তিনি আরও জানান ২০১৯ সালে ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসার স্যারকে আবেদন দিয়েছি। কিন্তু কোন কাজ হয় নি। বৃহস্পতিবার (২৬ মে) পুনরায় আবেদন দিয়েছি।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার নাগমা সিলভিয়া খান বলেন, ইতোমধ্যে বিদ্যালয়টির ভবন ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষনা করে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য উপজেলা শিক্ষা কমিটিতে অনুমোদন নেয়া হয়েছে। এছাড়া টিন সেডের ঘর তৈরি করে বিকল্প ভাবে ক্লাস নেওয়ার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দ্রুতই নতুন ভবন নির্মাণে ব্যবস্থা নেয়া হবে।