ঢাকার সাভার পৌরসভায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে পাকা রাস্তা নির্মানের প্রায় ৩ মাসের মধ্যে বৃষ্টিতে রাস্তা দেবে গেছে। বিভিন্ন স্থানে খোঁয়া-সুরকি উঠে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। এতে করে প্রতিনিয়ত ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা। এই বর্ষায় রাস্তাটির আরো ক্ষতি হবে বলে আশংকা করছেন এলাকাবাসী।
সরেজমিনে গিয়ে এবং স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের ডিম মেশিনের মোড় থেকে পোড়াবাড়ি বেদে পাড়া পর্যন্ত প্রায় আধা কিলোমিটার পিচঢালা পাকা রাস্তা নির্মান করা হয়। নির্মান শুরু করার প্রায় ১ বছর পরে এসে গত ২০ ফেব্রæয়ারী পিচ ঢেলে রাস্তার কাজ সম্পন্ন করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ওই দিনই জনসাধারণের জন্য রাস্তাটি খুলে দেয়া হয়। গত ২০ এপ্রিল প্রথম বৃষ্টিতে একটি পিকআপ টিসিবির মাল বহন করতে গিয়ে প্রদীপের রিক্সা গ্যারেজের সামনে রাস্তায় চোরা গর্তে পরে দুর্ঘটনার শিকার হয়। এরপর থেকে প্রায় ১০/১২ জায়গায় ছোট-বড় অনেক গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
গ্যারেজের তত্বাবধায়ক শংকর চন্দ্র দাস জানান, স্থানীয়রা নিজেদের চলাচলের সুবিধার জন্য মাটি ও বালু দিয়ে গর্ত ভরাট করে দিয়েছে।
বাড্ডা ভাটপাড়ার আলমগীর মাষ্টারের ছেলে চাকুরীজীবি কাউসার উদ্দিন বলেন, আমার বাড়ির সামনে রাস্তা দেবে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ক্রমশই এ গর্ত আরো বড় হচ্ছে। প্রতিনিয়ত এখানে ঘটছে দুর্ঘটনা।
বাড্ডার রাজমিস্ত্রী ও দোকানী আলী হোসেন জানান, এবছর রাস্তা নির্মান করা হলেও আমরা এর সুফল ভোগ করতে পারছি না। পৌরসভার কেউ এসে এসব গর্ত ভরাট করারও উদ্যোগ নিচ্ছেন না।
সাভার পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রমজান আহমেদের অফিসের সামনে পাকা রাস্তায় বড় বড় দু’টি গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এর সামনেই বাড়ি বাশার মিয়ার। তিনি জানান, এসব গর্তে প্রতিনিয়ত রিক্সা ও মোটর সাইকেল দুর্ঘটনা ঘটছে। আহত হচ্ছেন সাধারণ যাত্রীরা। রাস্তাটি নির্মানে গাফিলতি করায় এবং নিম্মমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
ইজিবাইক চালক শরিফুল ইসলাম বলেন, স্থানীয়রা এসব গর্তে মাটি ভরাট করার কারণে বৃষ্টিতে তা আরো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠে। তখন যানবাহন চলাচলে মারাত্মক ঝুঁকি থাকে।
এ রাস্তাটি ছাড়াও ডিপমেশিনের মোড় থেকে লুৎফর বাজার পর্যন্ত আরসিসি ঢালাই রাস্তার পাশের বøক ভেঙ্গে গিয়ে ৩ স্থানে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ছায়াবীথি মোল্লানগর মসজিদের সামনে পিচঢালা রাস্তার একটি অংশ ভেঙ্গে দেবে গেছে।
১নং ওয়ার্ডের পৌর কাউন্সিলর রমজান আহমেদ বলেন, আধা কিলোমিটার রাস্তায় প্রায় ছোট-বড় ১০-১৫ টি গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী শরিফুল ইমামকে অবহিত করা হয়েছে।
সাভার পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী শরিফুল ইমাম বলেন, রাস্তাটি ভেঙ্গে যাওয়া ও দেবে যাওয়ার তথ্য আমাদের কাছে আছে। স্থানীয়রা রাস্তার নিচ দিয়ে পাইপ নিয়ে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।
তিনি আরো জানান, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের জামানতের টাকা এখনও ফেরৎ দেয়া হয়নি। রাস্তা মেরামত করে দেয়ার পরে টাকা ফেরৎ দেয়া হবে। তবে, রাস্তা নির্মানে কোন নিম্মমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়নি।