প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৭ মে, ২০২২, ১১:১৮ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
আজ ১৭ই মে, এই দিনটি বাঙালি জাতীয় জীবনে একটি ঐতিহাসিক দিন। বাঙালি জাতির জীবনে ৭ই মার্চ, ২৬শে মার্চ এবং ১৬ই ডিসেম্বরের মতো আজকের দিনটিও আমাদের জন্য একটি ঐতিহাসিক গুরুত্ববহ দিন। শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসার কারণেই আজ গণতন্ত্রের মুক্তি মিলেছে, উন্নয়ন আর অগ্রযাত্রার পথে বিশ্বে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ একটা কীর্তি স্থাপন করেছে যেটা শুধুমাত্র যে দক্ষিণ এশিয়ায় নয়, এটা সারা বিশ্বের কাছে অনন্য নজীর স্থাপন করেছে।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৭০৭তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সিরাজগঞ্জ -১ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য, তানভীর শাকিল জয়, প্রেসক্লাব অব ইন্ডিয়ার সাবেক সভাপতি গৌতম লাহিড়ী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়ার ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহিনূর রহমান, জার্মান দূতাবাসে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনারারি কনস্যুলেট, ফর বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার হাসনাত মিয়া, নিরাপত্তা বিশ্লেষক, লেখক ও কলামিস্ট, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক কর্নেল (অব.) কাজী শরীফ উদ্দীন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।
কর্ণেল (অব.) কাজী শরীফ উদ্দীন বলেন, ১৭ মে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নিজ দেশে ফিরে আসার দিন। ১৯৮১ সালের এই দিনেই তিনি দেশে ফিরে এসেছিলেন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য। সেদিনের ঢাকায় লক্ষ মানুষের বাঁধ ভাঙা স্রোত তাঁকে কেন্দ্র করে সমবেত হয়েছিল। তাদের কণ্ঠে ছিল বিচিত্র ধ্বনি ও প্রতিধ্বনি। শেখ হাসিনার আগমন শুভেচ্ছা স্বাগতম, ‘শেখ হাসিনা তোমায় কথা দিলাম, মুজিব হত্যার বদলা নেব, জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।’ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে নৃশংস হত্যার মধ্য দিয়ে উল্টো স্রোতে চলছিল বাংলাদেশ। স্বাধীনতার আদর্শ, মুক্তিযুদ্ধের গর্ব দিন দিন লুণ্ঠিত হতে হতে মিশে যাচ্ছিল মাটির সঙ্গে। বাংলার মানুষেরও দিনবদল ঘটেনি। বরং শোষণের জাঁতাকলে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বেড়ে চলছিল। সেদিন তার আগমন বাংলাদেশের মানুষের মনে আশা জাগিয়েছিল নতুন করে। ঠিক যেমন ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বাংলার মানুষের স্বাধীনতার আনন্দকে পরিপূর্ণ করেছিল। আর তার আগমনে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ পুনরুজ্জীবিত হওয়ার আশা জাগল। বঙ্গবন্ধু-কন্যা দেশে এসে আন্দোলন ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে সকল ষড়যন্ত্র বানচাল করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে স্বৈরশাসনের কবল থেকে দেশকে রক্ষা করেন। এরপর গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামের বাঁকে বাঁকে ২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট ন্যাক্কারজনক গ্রেনেড হামলাসহ ২১ বার তার প্রাণনাশের চেষ্টা করা হয়। জীবনকে তুচ্ছজ্ঞান করে বঙ্গবন্ধুর মতো অকুতোভয় নেতৃত্ব দিয়ে তিনি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন অবিরত। শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ সারা বিশ্বে উন্নয়নের অনুকরণীয় মডেল। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, জনশক্তি রপ্তানি, ব্যাংকিং, প্রশাসন থেকে শুরু সকল সেবা বিস্তৃত ও সহজলভ্য করে জনগণের দোর গোঁড়ায় পৌঁছে দিয়ে তিনি এক অভূতপূর্ব বিপ্লব সাধন করেছেন। গণতন্ত্র, শিক্ষা, শান্তি ও দারিদ্র্য হ্রাসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি স্বরূপ জাতিসংঘ, ইউনেস্কো, এফএওসহ বিভিন্ন বিশ্বসংস্থা কর্তৃক অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেছেন। বিশ্বের খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলা এবং পরিবেশ উন্নয়নে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তাকে জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়ন্স অব দ্যা আর্থ’ সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনরুদ্ধার এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অভিযাত্রায় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। বর্তমানে শেখ হাসিনা তার অঙ্গীকার বাস্তবায়নের জন্য যেভাবে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এটা তিনি তার কাজের মাধ্যমে বুঝিয়ে দিচ্ছেন।