শুক্রবার ২২ নভেম্বর ২০২৪ ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: বিএনপির বড় বিশৃঙ্খলার চেষ্টা আ.লীগের সতর্কতায় বিফল: তথ্যমন্ত্রী   সংকটকে সম্ভাবনায় রূপ দিতে কাজ করছে সরকার: কাদের   নাটোরে ট্রেনে কাটা পড়ে ৩ জনের মৃত্যু   ‘কিছুই করি নাই শ্রেণিটা’ চোখ থাকতেও দেখে না: প্রধানমন্ত্রী   রাজকে আমার জীবন থেকে ছুটি দিয়ে দিলাম: পরীমনি   সৌদি আরবের ক্লাবে যোগ দিলেন রোনালদো   বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
‘বুড়া হইনো বাহে, চৈত মাসে এমন বান দেখং নাই’
লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১২ এপ্রিল, ২০২২, ৪:৫৩ পিএম আপডেট: ১২.০৪.২০২২ ৬:৪২ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

উজানের ঢেউ আর ৭/৮ দিনের বৃষ্টিতে লালমনিরহাটের তিস্তা ধু-ধু বালুচরের নদী হঠাৎ ফুলে ফেপে উঠে দু'কূল উপচে বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। চৈত্র মাসের এ আকস্মিক বন্যায় ফসল ডুবে কান্নার রোল পড়েছে কৃষকদের। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানান, চৈত্র মাসের আকস্মিক বন্যায় জেলার ৫টি উপজেলার তিস্তার তীরবর্তি নিম্নাঞ্চলের ফসল ডুবে গেছে। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছর শুস্ক মৌসুমে বোরো ধান, কাউন, পেঁয়াজ, রসুনসহ নানা জাতের শাক সবজিতে ভরে উঠেছিল তিস্তা চরাঞ্চল। আকস্মিক এ বন্যায় তিস্তা চরাঞ্চলের প্রায় ৪০ হেক্টর জমির ফসল ডুবে যায়। যার মধ্যে বোরো ১৮, আউশ ৫, পাট ৭ দশমিক ৭, কাউন ৭, পিঁয়াজ রসুনসহ সবজি ২ হেক্টর। 

জানা গেছে, তিস্তা নদী লালমনিরহাটের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কুড়িগ্রামের চিলমারী বন্দর হয়ে ব্রক্ষপুত্র নদের সঙ্গে মিশে যায়। যার দৈর্ঘ্য প্রায় ৩১৫ কিলোমিটার হলেও বাংলাদেশ অংশে রয়েছে প্রায় ১২৫ কিলোমিটার। ভারতের গজল ডোবায় বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে ভারত সরকার একতরফা তিস্তার পানি নিয়ন্ত্রণ করায় শীতের আগেই বাংলাদেশ অংশে তিস্তা মরুভূমিতে পরিণত হয়। বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত পানি প্রবাহের ফলে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয় তিস্তার বাম তীরের জেলা লালমনিরহাট। প্রতিবছর শুস্ক মৌসুমে তিস্তার চরাঞ্চলে জেগে ওঠা বালুতে বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ করেন চাষীরা। এ বছরও এর ব্যতয় ঘটেনি। 

চাষীদের কঠোর পরিশ্রমে তিস্তার বালুচর সবুজ সমারোহে পরিণত হয়। বোরো-আউশ ধান, পাট, ভুট্টা, মিষ্টি কুমড়া, কাউন, রসুন, পেঁয়াজ, মরিচ, আলু, তামাক, বাদামসহ নানা জাতের শাক-সবজিতে ভরে ওঠে তিস্তার চরা ল। যা বর্ষার আগেই ঘরে তোলার স্বপ্ন বুনেন চাষীরা। কিন্তু চাষীদের সেই স্বপ্ন এবার ডুবেছে চৈত্র মাসের আকস্মিক বন্যায়। গত ৭/৮ দিন ধরে টানা বৃষ্টি আর উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বেড়ে যায়। চৈত্র মাসের ধু-ধু বালু চরের তিস্তায় হঠাৎ দেখা দিয়েছে আকস্মিক বন্যা। 

এতে ডুবে যায় চরা লের চাষীদের উৎপাদিত ফসল। পেঁয়াজ, রসুন, কাউন আর বোরো ধান মাত্র ১০-১৫ দিনের মধ্যেই ঘরে তোলা শুরু হতো। উঠতি ফসল অসময়ের বন্যায় ডুবে নষ্ট হওয়ায় কান্নার রোল পড়েছে তিস্তা পাড়ের প্রতিটি কৃষক পরিবারে। খাবার যোগান তো দূরের কথা ঋণের কিস্তি নিয়েও মহাবিপদে পড়েছেন অনেকেই। 

চরা লের চাষী মোক্তার আলী বলেন, পানিটা ছাড়া আগে জানালে উৎতি ফসলগুলো তোলা যাইত। উঁচু অ লের ধানের চেয়ে চরের ধানে ফলন বেশি। সেই ধান, পেঁয়াজ, কাউন, মিষ্টি কুমড়া পানিতে ডুবি নষ্ট হইচে। বুড়া হইনো বাহে, চৈত মাসে এমন বান (বন্যা) দেখং নাই। বর্ষার বানেও এত ক্ষতি হয় না। এমন কোন আবাদ ছিল না যা চরে এবার চাষ হয় নাই। এলা সউগ পানির নিচত ডুবি আছে বাহে। চরবাসীর ক্ষতি হলেও কৃষি প্রণোদনা বা পুনবাসন চরবাসীর একটি লোকও পায় না। 

রসুন চাষী বাবু জানান, পিঁয়াজ, রসুন তুলে ক্ষেতেই শুকানো লাগে। তাই রোদের অভাবে পাকা ক্ষেতের রসুন তুলিনি। এখন সব স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার। প্রায় ৫০ মণ রসুন ডুবে আছে বানের পানিতে। ডুবে ডুবে যেটুকু তুলতেছি, তা তো দ্রুত পঁচে যাবে। পেঁয়াজ আর রসুন পানি পেলে পঁচে যায়। কে জানতো অসময়ে বন্যা হবে? আর আমাদের কপাল পুড়বে? 

এ বিষয়ে লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ডিডি) শামীম আশরাফ বলেন, আকস্মিক বন্যায় ডুবে থাকা ফসলের তালিকা মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে। পানি নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতির বিবরণসহ পাঠানো হবে। তবে, বর্তমান চরাঞ্চলের মাঠে থাকা সকল ফসলই ঘরে তোলার উপযোগী ছিল। পানি নেমে গেলে বোরো আর ভুট্টা কিছুটা রক্ষা পেলেও পেঁয়াজ, রসুনসহ সবজি ক্ষেত পুরো ঝুঁকিতে রয়েছে।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]