মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: বিএনপির বড় বিশৃঙ্খলার চেষ্টা আ.লীগের সতর্কতায় বিফল: তথ্যমন্ত্রী   সংকটকে সম্ভাবনায় রূপ দিতে কাজ করছে সরকার: কাদের   নাটোরে ট্রেনে কাটা পড়ে ৩ জনের মৃত্যু   ‘কিছুই করি নাই শ্রেণিটা’ চোখ থাকতেও দেখে না: প্রধানমন্ত্রী   রাজকে আমার জীবন থেকে ছুটি দিয়ে দিলাম: পরীমনি   সৌদি আরবের ক্লাবে যোগ দিলেন রোনালদো   বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
নতুন প্রজন্মকে অগ্নিঝরা মার্চের ইতিহাস জানাতে হবে
#মার্চ বাঙালির জীবনে নিয়ে আসে নতুন বার্তা: ড. জাকারিয়া মিয়া। #ভাষা আন্দোলন থেকেই মার্চ মাসের পটভূমি শুরু হয়: ড. সন্তোষ কুমার দেব।
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: শনিবার, ১২ মার্চ, ২০২২, ১১:১৭ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

আমাদের মহান স্বাধীনতা আন্দোলনের মধ্যে বিভিন্ন মাসের যে বিভিন্ন তাৎপর্য রয়েছে তারমধ্যে মার্চ মাসের গুরুত্ব অনেক। এ মাস বাঙালির স্বপ্নসাধের যৌক্তিক পরিণতির মাস। আটচল্লিশের মার্চে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা উর্দু ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাঙালিকে দাবিয়ে রাখার প্রক্রিয়া শুরু হয়- যার ফলশ্রুতিতে সংগঠিত হয় ৫২’র ভাষা আন্দোলন। এরপর একে একে ১৯৬২ সালে বৈষম্যমূলক শিক্ষানীতি প্রত্যাখ্যান, ৬৬’র শিক্ষা আন্দোলন ও ছয় দফা উপস্থাপন, ৬৮’র আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ৬৯-এর গণআন্দোলন ও ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার, ৭০-এর সাধারণ নির্বাচন ও বাঙালিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে বিলম্ব- এতসব ঘটনাবলী পেরিয়ে আসে একাত্তরের মার্চ মাস।

দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৬৪১তম পর্বে শনিবার (১২ মার্চ) এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-  জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের চেয়ারম্যান, প্রগতিশীল শিক্ষক সংগঠন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (নীলদল) সাবেক সভাপতি, লাইফ এন্ড আর্থ সাইন্স অনুষদের প্রাক্তন ডিন অধ্যাপক ড. জাকারিয়া মিয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সন্তোষ কুমার দেব। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।

ড. জাকারিয়া মিয়া বলেন, আমাদের মহান স্বাধীনতা আন্দোলনের মধ্যে বিভিন্ন মাসের যে বিভিন্ন তাৎপর্য রয়েছে তারমধ্যে মার্চ মাসের গুরুত্ব অনেক। এ মাস বাঙালির স্বপ্নসাধের যৌক্তিক পরিণতির মাস। বাংলাদেশের সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাসে শ্রেষ্ঠতম ঘটনা হচ্ছে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের এ ঐতিহাসিক ঘটনার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির সামাজিক-রাজনৈতিক স্বপ্নসাধ পূরণ হয়। ১৯৭১ সালে এসে যে রাজনৈতিক সংঘাত তীব্র আকার ধারণ করে, যদিও তার গোড়াপত্তন হয়েছিল বহু বছর আগে। তারপর ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬৬’র শিক্ষা আন্দোলন ও ৬৯’র গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের মার্চে এসে বাঙালির সেই স্বপ্নসাধ যৌক্তিক পরিণতিকে স্পর্শ করে। প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ের গহীনে লালন করা তখনো অধরা ‘স্বাধীনতা’ যেন অগ্নিস্ফুলিঙ্গের মতো সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণে ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ স্বাধীনতার অমর কাব্যের এই পঙক্তিটি বাঙালি জাতিকে ইস্পাত কঠিন দৃঢ়তায় বলীয়ান করে তোলে। এ মার্চেই পাকিস্তানকে বাঙালি বিদায় সম্ভাষণ জানায়। পাকিস্তানি সৈন্যরা ২৫ মার্চ রাতে কামান, মর্টার, রাইফেল নিয়ে অতর্কিতে ঘুমন্ত নিরীহ বাঙালিদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। বঙ্গবন্ধু তখন গ্রেফতার হওয়ার ঠিক পূর্ব মুহূর্তে তার সর্বশেষ বাণী বাংলার মানুষের কাছে পাঠান এই বলে, ‘এই হয়তো তোমাদের জন্য আমার শেষ বাণী। আজ থেকে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ। যে যেখানেই থেকে থাক, যে অবস্থায়ই থাক, যার যা আছে তাই নিয়ে দখলদার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত প্রতিরোধ গড়ে তোল। ততদিন পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবে, যতদিন পর্যন্ত না দখলদার পাকিস্তানিদের শেষ সৈনিকটি বাংলাদেশের মাটি থেকে বহিষ্কৃত হচ্ছে এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হচ্ছে।’

ড. সন্তোষ কুমার দেব, আমি শুরুতে দৈনিক ভোরের পাতা দেড় যুগে পদার্পণ করায় পত্রিকাটির সকল কলাকুশলীদের অভিনন্দন জানাচ্ছি। আজকের ভোরের পাতা সংলাপের বিষয় অগ্নিঝরা মার্চ। আমি প্রথমেই আজকের এই দিনে আমি আমার বক্তব্যের শুরুতে গভীর শ্রদ্ধা জানাই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যে মহামানবের অবদানে আজ আমরা লাল সবুজের পতাকা নিয়ে পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছি। গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি ১৫ আগস্টের সেই কালরাতে তাঁর পরিবারের যেসব সদস্যরা শাহাদাতবরণ করেছিলেন। গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লাখ ইজ্জতহারা মা-বোনদের। আমরা যদি মার্চ মাসের দিনগুলো নিয়ে পর্যালোচনা করি তাহলে দেখতে পাবো এর পটভূমিতেই রয়েছে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন। আটচল্লিশের মার্চে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা উর্দু ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাঙালিকে দাবিয়ে রাখার প্রক্রিয়া শুরু হয়- যার ফলশ্রুতিতে সংগঠিত হয় ৫২’র ভাষা আন্দোলন। এরপর একে একে ১৯৬২ সালে বৈষম্যমূলক শিক্ষানীতি প্রত্যাখ্যান, ৬৬’র শিক্ষা আন্দোলন ও ছয় দফা উপস্থাপন, ৬৮’র আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ৬৯-এর গণআন্দোলন ও ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার, ৭০-এর সাধারণ নির্বাচন ও বাঙালিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে বিলম্ব- এতসব ঘটনাবলী পেরিয়ে আসে একাত্তরের মার্চ মাস। উত্তপ্ত মার্চের  ৭ তারিখে রমনার রেসকোর্স ময়দানের জনসমুদ্রে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, শতাব্দীর মহাপুরুষ বাংলার অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা পৃথিবী কাঁপানো ভাষণে আগুনজ্বলা বজ্রকণ্ঠে উচ্চারণ করলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ এই মার্চেরই ভয়াল কালরাত্রিতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী অস্ত্র, গোলা, ট্যাঙ্ক-কামান নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল নিরস্ত্র বাঙালির ওপর। মেতে উঠেছিল নির্মম গণহত্যায়। অগ্নিঝরা রক্তঝরা উত্তাল অগ্নিগর্ভ এই ঝঞ্ছা-বিক্ষুব্ধ রক্তিম মার্চেই বাংলার স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়েছিল। এই মার্চেই শুরু হয়েছিল রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম, সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]