ঝিকরগাছার আদর্শ কলাচাষী আরাফাত হোসেন(৫৫) দুধসাগরের পর এবার বাইসা ও চম্পাকলার আবাদ করে সবাইকে তাকলাগিয়ে দিয়েছেন। স্বাদে-গুণে অতুলনীয় নতুন জাতের এই কলা চমক সৃষ্টি করেছে ইতিমধ্যেই। গেলবার তার ১২বিঘা দুধসাগর জাতের কলা ছিল। এবার তার সাথে যুক্ত হয়েছে নতুন জাতের ৬বিঘা বাইসা ও চম্পাকলা। বাইসা জাতের এককাদি কলা ৩৫/৪০কেজি হতে পারে। তাই নতুন জাতের এই কলাচাষে ঝুঁকছেন এলাকার অনেক কৃষক।
বলছিলাম, ঝিকরগাছা সদর ইউনিয়নের হাড়িয়াদেয়াড়া গ্রামের সফল কলাচাষী আরাফাত হোসেনসহ এখানকার অনেক কলাচাষীর কথা। আরাফাত হোসেন জানান, উন্নত এজাতের কলা বছরে তিনবার পাওয়া যায়। ফলন ও বাজারদর ভালো পাওয়া যায়। দুধসাগর জাতের কলা পাওয়া যায় বছরে একবার। বর্তমানে বাজারে চম্পা ও বাইসা জাতের কলা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৫/৬০টাকা। তারা পাইকারি কাঁচাকলা দামপান ৪০/৪৫টাকা। প্রতিকাদি কলা বিক্রি হয় ৪’শ টাকায়। আরাফাতের ক্ষেতে দেখা যায়, তার ৬বিঘা জমিতে কলার পূর্ণমাত্রায় কাদি এসেছে।
তিনি জানান, ৬বিঘা জমির কলা ৫লাখ টাকা দাম উঠেছে। ৬লাখ টাকা হলে তিনি ৬বিঘা জমির কলা বিক্রি করবেন বলে জানান। ৬বিঘাা জমিতে ৩০হাজার টাকার চারা, সার, সেচ ও মজুরসহ তার আবাদে খরচ হয়েছে ৮০হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় ৩বার টিএসপি ১৫কেজি করে ৪৫কেজি, পটাশ ৩বার করে ৪৫কেজি ও ইউরিয়া ৩বারে ৩০কেজি প্রয়োগ করতে হয়। প্রতিকাদি কলার গড় ওজন দাঁড়ায় ১২/১৫কেজি। ৩বিঘা জমির কলার চারা (বোগ) বিক্রি হয়েছে ৬০হাজার টাকা। প্রতিটি চারা ১০টাকা। প্রতিবিঘা জমিতে ৩২০পিচ কলার চারা রোপণ করতে হয়।
কলাচাষী আরাফাত বলেন, ১৮বিঘা জমির পুরোটাই তিনি ৩বছরের চুক্তিতে লিজ নিয়েছেন। প্রতিবিঘা জমি বছরে ১২হাজার টাকা। কলার আবাদ করে নিজের ভাগ্য ফিরেছে বলে জানান আরাফাত হোসেন। তিনি বলেন, আমার কলার আবাদ দেখে এলাকার পাশাপাশি বাইরের বিভিন্ন এলাকার চাষীরা কলার আবাদ করছেন। তাদের কাছে কলার চারাও বিক্রি করেছি আমি।
কথা হয়, মিশ্রিদেয়াড়া গ্রামের কলাচাষী মহিউদ্দীন মৃধার সাথে। তিনি জানান, এলাকার কলাচাষী সাহেব আলী মৃধা ১০কাঠা, শুকুর মৃধা ১৫কাঠা, আবুল কাশেম দেড়বিঘা, সলেমান ১বিঘা, ইদ্রিস আলী ১০কাঠা, আকবার আলী দেড়বিঘা, শেরালী মৃধা ২৫কাঠা, হাকিম মৃধা ১৫কাঠাসহ অনেকেই কলার আবাদ করেছেন।
কলা চাষীরা ক্ষোভের সাথে জানান, গেল বছরের আম্ফান ঝড়ে তাদের কলাক্ষেতের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও কৃষি অফিস থেকে কোন প্রকার সাহায সহযোগীতা পাননি। এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা শ্যামল কুমার নাথকে তারা কখনও দেখেনি এবং চেনেন না বলে জানান।