প্রকাশ: শনিবার, ১২ মার্চ, ২০২২, ৮:৩৩ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর, ছাত্রলীগের প্রথম সভাপতি ভাষা সৈনিক এ্যাড. দবিরুল ইসলামের জন্মশতবার্ষিকী আজ। আজ রোববার শততম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে জেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহন করা হয়।
১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর স্বাধীকার আন্দোলনে পাকিস্তানি শাসকদের রোষানলে পরে ভাষা আন্দোলনের সাথে জড়িত দবিরুল ইসলাম। তিনি সর্ব প্রথম ছাত্রনেতা হিসেবে জেলখানায় বন্দি হন। রাষ্ট্রভাষা সংগ্রামে ঠাকুরগাঁওয়ের দবিরুল ইসলাম বারবার কারারুদ্ধ হয়ে নির্যাতনের শিকারে অকালেই প্রাণ হারিয়েছেন।
বাংলা ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় ভুমিকা রাখা দবিরুল ইসলাম তখন ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ে আইন বিভাগের ছাত্র ছিলেন। ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহপাঠি। ১৯৪৯ থেকে ৫৩ সাল পর্যন্ত তিনি পূর্বপাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। জেলা সুদুর ঠাকুরগাঁওয়ে সেই সময় মাতৃভাষা সংগ্রামের সাথে জড়িত ছিলেন দবিরুল ইসলাম। ১৯৪৯ সালে ১১ মার্চ ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয় অনির্দ্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষনা হলে নিজ জেলায় চলে আসেন দবিরুল ইসলাম। ওই বছরের ১৩ মার্চ পূর্ববঙ্গ বিশেষ ক্ষমতা অর্ডিন্যান্স বলে গ্রেফতার করে দবিরুল ইসলামকে। দিনাজপুর কারাগারে কারারুদ্ধ হন তিনি। কারা কর্তৃপক্ষ সরকারি মুসলিমলীগ কর্তাদের ইঙ্গিতেই দবিরুল ইসলামের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায়। এ সংবাদ শুনে দবিরুল ইসলামকে দেখতে দিনাজপুর ছুটে আসেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কিন্তু তখন ১৪৪ ধারা জারি থাকায় বঙ্গবন্ধু তাঁর সাথে দেখা করতে পারেনি। কারাগারে ঘন্টা বাজিয়ে অকথ্য সেই নির্যাতনের কথা যে কেউ শুনলে আতকে উঠবে। এসব মনে হলে নিস্তব্দ হয়ে যান দবিরুল ইসলামের স্ত্রী আবেদা খাতুন।
এর পর ৫২ ভাষা আন্দোলনে এ্যাড. দবিরুল ইসলাম তৎকালীন দিনাজপুর জেলায় আসেন আইন পেশায়। তখন রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই দাবিতে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। সক্রিয় ভাবে ভুমিকা পালন করায় তৎকালীন সরকার দবিরুল ইসলামকে গ্রেফতার করে কারারুদ্ধ করে রাখেন। সেই সময়ও তিনি নির্যাতনের শিকার হয়ে ১৯৬১ সালের ১৩ জানুয়ারি অকালে ঝরে পড়েন দবিরুল ইসলাম। ১৯৫৪ সালে সাধারণ নির্বাচনে এ্যাড. দবিরুল ইসলাম যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হিসাবে এমএলএ নির্বাচিত হন।
তিনি বৃহত্তর দিনাজপুরের তৎকালীন ঠাকুরগাঁও মহকুমার বালিয়াাডাঙ্গী থানার পাড়িয়া ইউনিয়নের বামুনিয়া গ্রামের ১৯২২ সালে ১৩ মার্চ এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। এ্যাড. দবিরুল ইসলামের ছোট ছেলে মো: আহসান উল্ল্যাহ ফিলিপের উদ্যোগে শহরে পোষ্টার ও ফেসটুন টাঙ্গানো হয়। অপরদিকে জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে জেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে সকালে র্যালি, আলোচনা সভা ও এ্যাড. দবিরুল ইসলামের স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।