প্রকাশ: শনিবার, ১২ মার্চ, ২০২২, ৪:০০ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
বাজারে ভোজ্যতেলের সঙ্কটকে কাজে লাগিয়ে বাড়তি লাভের আশায় ৫১২ লিটার সয়াবিন তেল কিনে মজুত করেন লায়েকুজ্জামান। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক এই কর্মকর্তা গত ৬ দিনে ব্যক্তিপর্যায়ে বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করে বাসায় এই তেল মজুত করেন।
শুক্রবার (১১ মার্চ) রাতে রাজধানীর লালমাটিয়া এলাকা থেকে ৫১২ লিটার সয়াবিন তেলসহ তাকে গ্রেফতার করে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।
শনিবার (১২ মার্চ) দুপুরে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার তার নিজস্ব কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ৫১২ লিটার সয়াবিন তেল ব্যক্তি পর্যায়ে কারও কাছে রাখা ফৌজদারি অপরাধ। ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হতে এবং অন্যান্যরা যেন তেলের সংকটে পড়ে—এরকম অসৎ উদ্দেশ্যে তেলের এই মজুত করে সে। বাজারে তেলের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এই মজুতদারি। তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা নিয়েছি। এর তদন্ত স্বাভাবিক গতিতে চলবে।
তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমরা জানতে পেরেছি, গত ৬ মার্চ থেকে সে তেল মজুত শুরু করে। সে ৫১২ লিটার তেল বিভিন্ন জায়গা থেকে গত ৬ দিনে সংগ্রহ করে। ৪০ লিটার তেল সে এক জায়গা থেকে সংগ্রহ করেছে। আরও বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করেছে বাকি ৪৭৮ লিটার তেল। কোন কোন জায়গা থেকে এসব সংগ্রহ করেছে সে বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আমরা প্রাথমিকভাবে কিছু তথ্য পেয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ৪০ লিটার তেল কেনার একটি ভাউচার পর্যবেক্ষণ করে আমরা জেনেছি—সে ওই তেল ৬৩৬০ টাকায় কেনে। অন্যান্য সয়াবিন তেলের দাম সে মেনুপুলেট করে নিজ হাতে বসিয়েছে। গ্রেফতার লায়েকুজ্জামান একসময় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী পদে চাকরি করতো। এর আগে তিনি এ ধরনের কাজ করেছেন কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে তাকে আরও ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে। আমরা আদালতে তার সাত দিনের রিমান্ড চাইব। ব্যক্তি পর্যায় বা ব্যবসা পর্যায়—যাই হোক আমরা প্রতিনিয়ত সবগুলো মনিটরিং করে যাচ্ছি। আমাদের আওতাধীন মার্কেটগুলো আমরা প্রতিনিয়ত প্রকাশ্যে ও গোপনে পর্যবেক্ষণ করছি। যখনই কোন সংবাদ পাই তখনই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
গ্রেফতার লায়েকুজ্জামানের বরাত দিয়ে বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, তার কাছ থেকে পাওয়া তথ্য আমরা সত্য মনে করছি না। এর পেছনে আরও কোনও উদ্দেশ্য কিংবা ঘটনা থাকতে পারে। পেছনে আরও লোকজন থাকতে পারে। সে এই তেলগুলো বিভিন্ন সময়ে জোগাড় করেছে বলে দাবি করছে। এর পেছনে অন্য কোনও লোকজন বা কোনও অসৎ উদ্দেশ্য রয়েছে কিনা জানতে আরও তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে। গ্রেফতার ব্যক্তি কাদের কাছ থেকে তেল সংগ্রহ করেছে এবং কত টাকা করে কিনেছে—এ বিষয়গুলো আমরা তদন্ত করব। এর সঙ্গে জড়িত সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। একটি রশিদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমরা জানতে পেরেছি—৪০ লিটার তেল সে একজন ব্যক্তির কাছ থেকে কিনেছে। সেই ব্যক্তিকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করব—তিনি কিসের ভিত্তিতে এই পরিমান তেল তার কাছে বিক্রি করলেন।