পানি সম্পদ উপ-মন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম এমপি বলেছেন, বর্তমান সরকারের অধীনেই আগামী সংসদ নির্বাচন হবে। নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন। সেই নির্বাচন হবে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ। নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত সব দলের অংশগ্রহণে সংবিধান অনুযায়ী এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর সেই নির্বাচনে আপনারা তাদের বর্জন করবেন, ঘৃণা করবেন, যারা রাজাকারের গাড়িতে পতাকা তুলে দিয়েছিল। আর যেন কখনো রাজাকারর গাড়িতে ৩০ লাখ শহীদের রক্তে ভেজা লাল সবুজের পতাকা না ওঠে। দেশবাসীকে সজাগ ও সর্তক থাকতে হবে। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে বিশ্বাস করি দেশের তরুন প্রজন্ম এবং সচেতন মানুষ আর কখনো রাজাকারের গাড়িতে পতাকা উড়তে দেবে না। স্বাধীনতা বিরোধীদের গাড়ীতে জাতীয় পতাকা উড়বে না।
শনিবার (১২ মার্চ) ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে কে -ফোর্স এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দেশের অগ্রযাত্রা থামিয়ে দিতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়েছিল উল্লেখ করে এনামুল হক শামীম বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যায়, জিয়াউর রহমান ও খন্দকার মোশতাকের ইন্ধন ছিলো। হত্যা পরবর্তী বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে খুনিদের বক্তব্যেই তা প্রমাণ হয়েছে। ক্ষমতা কুক্ষিগত করার পরে আর সামান্য কাল অপেক্ষা করেননি জিয়াউর রহমান। দেশকে পাকিস্তানে পরিণত করার জন্য এমন কিছু নেই যা তিনি করেননি।
উপ-মন্ত্রী এনামুল হক বলেন, জেনারেল জিয়া প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন কুখ্যাত রাজাকার শাহ আজিজুর রহমানকে। শাহ আজিজ ছাড়াও জিয়া আরও কয়েকজন ‘রাজাকার’কে মন্ত্রী বানিয়েছিলেন। তারা হলেন- মসিউর রহমান (যাদু মিয়া), মির্জা গোলাম হাফিজ, আবদুল আলিম, সামসুল হুদা চৌধুরী, এস এম শফিউল আজম ও খন্দকার আবদুল হামিদ।
উপ-মন্ত্রী বলেন, ১৯৭৮ সালের ১১ জুলাই পাকিস্তানের পাসপোর্ট নিয়ে কুখ্যাত রাজাকার গোলাম আযম ঢাকায় আসেন। তার ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে গেলেও জিয়া সরকার তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। পরবর্তীতে কয়েক দফা ভিসার মেয়াদ বাড়িয়ে ’৯২ সাল পর্যন্ত অবস্থান করেন। ’৯৪ সালে খালেদা জিয়ার আমলে আদালতের রায়ে নাগরিকত্ব ফেরত পায়।
উপ- মন্ত্র্রী শামীম আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পৃষ্ঠপোষকতার ক্ষেত্রে সবচেয়ে সবচেয়ে বশি ভূমিকা ছিল বেগম খালেদা জিয়ার। খালেদা জিয়ার শাসনামলেও খুনিচক্রের প্রধান রশিদকে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির ভোটারবিহীন তথাকথিত নির্বাচনে ফ্রিডম পার্টির প্রার্থী হিসেবে কুমিল্লা-৬ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত করা হয়। বিরোধী দলের আসনে বসার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে কুখ্যাত রাজাকার নিজামী, মুজাহিদের গাড়িতে পতাকা দিয়ে শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানি করেছিল। লাখে শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত পতাকা আর যেন রাজাকারের গাড়িতে না ওঠে, সেজন্য সজাগ ও সর্তক থাকতে হবে।
খালেদ মোশাররফের কন্যা ও কে-ফোর্সের উপদেষ্টা মাহজাবিন খালেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, কে-ফোর্সের উপদেষ্টা ও যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. হেলাল উদ্দিন, যুব মহিলালীগের সহ-সভাপতি কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি, যুবলীগের উপ-মহিলা সম্পাদক সৈয়দা সানজিদা মহসিন, সদস্য আসাদুজ্জামান আজম প্রমূখ। এসময় সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।