#কঠিনতর কাজ শেষ করেছেন সার্চ কমিটি: ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ। #একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন চাই আমরা: বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল মাবুদ। #যোগ্য ব্যক্তিদেরকেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ দিবেন: আফছার খান সাদেক।
আজকে আমাদের সার্চ কমিটির তরফ থেকে রাষ্ট্রপতির কাছে যে ১০ জনের নাম সুপারিস করেছেন এবং তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলেন যে এই মাসের ২৪ তারিখের মধ্যেই তারা তাদের আরদ্ধ কাজ সম্পন্ন করবেন এবং তারা এই নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই তারা তাদের কাজ শেষ করেছেন। দেশের স্বার্থে, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে যে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে আমরা তার পক্ষেই কাজ করবো। কে পছন্দ করলো, কেউ করলো না, এটা যার যার ব্যাপার। কিন্তু কাদেরকে নির্বাচন কমিশনে বসানোর জন্য নির্বাচিত করবেন এটা সম্পূর্ণ রাষ্ট্রপতির ব্যাপার।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৬২৫তম পর্বে বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক, জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের (জানিপপ) চেয়ারম্যান ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, সেক্টর কমান্ডার ফোরামের যুগ্ম মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল মাবুদ, বহির্বিশ্বে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য প্রতিষ্ঠাতা, লন্ডন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক, আফছার খান সাদেক। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।
ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, আজকে আমাদের সার্চ কমিটির তরফ থেকে রাষ্ট্রপতির কাছে যে ১০ জনের নাম সুপারিস করেছেন এবং তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলেন যে এই মাসের ২৪ তারিখের মধ্যেই তারা তাদের আরদ্ধ কাজ সম্পন্ন করবেন এবং তারা এই নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই তারা তাদের কাজ শেষ করেছেন। এজন্য অবশ্যই তাদেরকে আমরা সাধুবাদ জানাবো। কারণ এটা একটি কঠিন কাজ। এই ৩০০ জন তালিকার মধ্য থেকে ছেকে ছেকে অনেক যাচাই বাছাই করে চূড়ান্তভাবে ১০ জনের তালিকা করা হয়েছে। সেসঙ্গে পুরো জাতি অপেক্ষা করছে রাষ্ট্রপতির উপর কারণ তিনি কোন ৫ জনের নাম চূড়ান্ত মনোনয়ন প্রদান করে নিয়োগ প্রদানের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল মাবুদ বলেন, আমরা একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন চাই। অর্থাৎ মানুষ যাকে ইচ্ছা তাকে ভোট দিবে, যেখানে পরিবেশ সন্ত্রাসমুক্ত থাকবে এবং অত্যন্ত সাবলীল নির্বাচন সম্পন্ন করা; এইসকল কাজ যারা করতে পারবে তাদেরকেই আমরা নির্বাচন কমিশনে দেখতে চাই। বর্তমান ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন-২০২২’ আওয়ামী লীগ সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ, যা নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করবে বলে মনে হয়। এটি বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের রাজনৈতিক সমঝোতার মানসিকতাকেই তুলে ধরে। ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন-২০২২’-এর মাধ্যমে পুনরায় নির্বাচনের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরে এসেছে। একই সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোরও সমঝোতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রত্যয়ে একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠনে উদ্যোগী হয়েছেন এবং বিরোধী দলগুলোর সুপারিশ গ্রহণ করে একটি সর্বজন গ্রহণযোগ্য আইন প্রণয়নে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি নির্বাচন ব্যবস্থায় জনগণের অংশগ্রহণ ও গণতান্ত্রিক ধারাকে অক্ষুণ্ন রাখতে সচেষ্ট হয়েছেন।
আফছার খান সাদেক বলেন, এই মাসটি ভাষার মাস, তাই আমি সংলাপের শুরুতে ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লাখ ইজ্জত হারা মা-বোনদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। সঙ্গে আরও শ্রদ্ধা জানাচ্ছি ২১ ফেব্রুয়ারি নিহত সকল ভাষা শহীদদের প্রতি। ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট অত্যন্ত বিরাট, বলা যেতে পারে এটি ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত বিস্তৃত। আর এই বিশাল প্রেক্ষাপটে ততোধিক বিশালত্ব নিয়ে বিরাজিত একটি নাম, শেখ মুজিবুর রহমান। ভাষা আন্দোলন ও বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা সংগ্রাম, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ একটি অপরটির সঙ্গে এমনি অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত যে, একটিকে ছেড়ে অন্যটি কল্পনাতে আসে না। ভাষা আন্দোলনের ফসল এসেছে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের মাধ্যমে। বঙ্গবন্ধু ভাষা আন্দোলন করেছিলেন, ভাষার চেতনাকে বুকে ধারণ করেছিলেন। তার চিন্তা-চেতনায় ছিল মাতৃভাষার মর্যাদা ও স্বীকৃতি বিধানের সংকল্প। বাঙালিদের জন্য একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে এ চেতনা ছিল সর্বদা সক্রিয়। এ ব্যাপারে তিনি আমৃত্যু ছিলেন আপাসহীন, কঠোর। বাঙালি জাতি তার এই অনন্য সাধারণ ভূমিকার কথা কখনো ভুলবে না। এখন আসি নির্বাচন কমিশন প্রসঙ্গে। আমি বিশ্বাস করি দেশের স্বার্থে, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে যে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে আমরা তার পক্ষেই কাজ করবো। কে পছন্দ করলো, কেউ করলো না, এটা যার যার ব্যাপার। কিন্তু বাংলাদেশের সরকার কাকে নির্বাচন করবে এটা রাষ্ট্রপতির ব্যাপার। অবশ্যই যোগ্য ব্যক্তিদেরকেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ দিবেন।