প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৫:৩১ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
বরগুনার পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে দখল হয়ে যাওয়া বাবার জমি ও বাড়ি ফেরত পেলেন কাফনের কাপড় পরে অনশন কর্মসূচি পালন করা তিন বোন।
বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ফেরত পাওয়া জমিতে দু এক দিনের মধ্যে ঘর তুলতে শুরু করবেন তাঁরা।
এর আগে পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন মল্লিক অনশন ভাঙিয়ে তাঁদের গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান এবং বাবার জমি ও বাড়ি বুঝিয়ে দেন। অনশন করা ওই তিন বোন হলেন, রুবি আক্তার (২৭), জেসমিন আক্তার (১৮) ও মোসা. রোজিনা (১৬)। তারা বরগুনার বামনা উপজেলার গোলাঘাটা গ্রামের মৃত আবদুল রশীদের মেয়ে।
বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে বরগুনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অনশনে বসেন ওই তিন বোন। খবর পেয়ে বরগুনা জেলা পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর মল্লিক গিয়ে তাদের বুঝিয়ে অনশন প্রত্যাহার করান। পরে তিনি ওই তিন বোনকে নিয়ে বামনা উপজেলার গোলাঘাটায় তাদের গ্রামের বাড়িতে যান। সেখানে অভিযুক্ত স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন এবং ওই তিন বোনকে তাদের পৈতৃক ১৫ শতাংশ জমি বুঝিয়ে দেন পুলিশ সুপার। তাৎক্ষণিক ওই জমিতে ঘর তোলার জন্য তাঁদের অর্থও প্রদান করেন তিনি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন-বামনা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইতুল ইসলাম, বামনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিবেক সরকার, বামনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.বশিরুল আলম প্রমুখ।
বড় রুবি আক্তার বলেন, ‘আমাদের মা-বাবা নেই। বাবার বাড়ি ও জমি সব আমার স্বজনেরা দখল করে রেখেছিলেন। ওই জমি দখলমুক্ত করতে প্রশাসনসহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরেও কোনো লাভ হয়নি। বাধ্য হয়ে ডিসি অফিসের সামনে অনশনে বসেছিলাম। পুলিশ সুপার স্যার এসে আমাদের জমি দখলমুক্ত করার আশ্বাস দিলে আমরা অনশন প্রত্যাহার করি। এরপর তিনি আমাদের গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসেন। বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) স্যারের অর্থায়নে আমাদের জমিতে একটি ঘর তুলতে শুরু করি।
রুবি আক্তার আরও বলেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চাই। আমাদের একটি স্থায়ী আয়ের পথ দরকার।’
পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর মল্লিক বলেন, ‘মানবিক কারণে ওই তিন বোনের পাশে দাঁড়িয়েছি। আমরা তাঁদের ১৫ শতাংশ জমি বুঝিয়ে দিতে পেরেছি। জেলা পুলিশের অর্থায়নে তাঁদের থাকার জন্য দু-এক দিনের মধ্যে একটি ঘর তুলে দেব আমরা।
এব্যপারে জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, অনশন শুরু করার পর তিনি ওই তিন বোনকে তাঁর কার্যালয়ে ডেকেছিলেন। তবে তাঁরা কেউ আসেননি। পরে তিনি নিজে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলেও, কেউ কথা বলতে রাজি হননি। ওই তিন বোন এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।