প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৫:৩০ পিএম আপডেট: ২৪.০২.২০২২ ৮:৫৮ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
বখাটে কর্তৃক অব্যাহত যৌণ হয়রানীতে অতিষ্ঠ হয়ে অবশেষে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যা করেছে শিউলী আক্তার (১৬) নামে এক মাদ্রাসা ছাত্রী।
আজ বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে নিজ বাড়িতে ওই ছাত্রী মৃত্যু হয়। ঘটনাটি জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের জাহাপুর গ্রামের। নিহত শিউলী ওই গ্রামের শওকত আলী বেপারীর মেয়ে ও জাহাপুর দাখিল মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেনীর ছাত্রী ছিলো।
এ খবর পেয়ে থানা পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
নিহতের মা রহিমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, তার মেয়ে শিউলীকে পাশ্ববর্তী ঠাকুরমল্লিক গ্রামের মৃত মোবারেক ফকিরের ছেলে বখাটে রাকিব ফকির (৩০) দীর্ঘদিন থেকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলো। তার মেয়ে ওই প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় বখাটে রাকিব বিভিন্ন ধরনের যৌণ হয়রানী করে আসছিলো।
রহিমা বেগম বলেন, তার মেয়ে (শিউলী) পুরো ঘটনাটি তাকে জানানোর পর রাকিবের পরিবারের সদস্যদের কাছে বিষয়টি জানিয়ে বিচার দাবি করা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বখাটে রাকিব যৌণ হয়রানীর মাত্রা আরো বাড়িয়ে দেয়।
তিনি বলেন, গত ২১ জানুয়ারি তিনি বখাটে রাকিবের বাড়িতে গিয়ে তাকে (রাকিব) শেষবারের মতো শ্বাসিয়ে আসেন। নতুবা তিনি আইনের আশ্রয় নেয়ার হুমকি দেন। এতে পূর্ণরায় ক্ষিপ্ত হয়ে বখাটে রাকিব মোবাইল ফোনে শিউলীকে গণধর্ষণের হুমকি দেয়। এরপর অভিমান করে ওইদিন বিকেলে পরিবারের সবার অজান্তে মাদ্রাসা ছাত্রী শিউলী নিজ ঘরে বসে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্ঠা করেন। এ সময় বাড়ির লোকজন টের পেয়ে মুমূর্ষ অবস্থায় শিউলীকে উদ্ধার করে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করেন।
রহিমা বেগম আরো বলেন, সেখানে তার মেয়ে শিউলীর অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানেও তার (শিউলীর) অবস্থার অবনতি হওয়ায় ও আর্থিক সংকটে চিকিৎসা করাতে না পেরে মেয়েকে বাড়ি নিয়ে আসেন। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে নিজ বাড়িতে শিউলী মৃত্যুবরন করে।
বাবুগঞ্জ থানার ওসি মো. মাহবুবুর রহমান জানান, খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহত ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।