প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৫:২৪ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
আবারও সাভারে করোনা টিকা কেন্দ্রে উপচেপড়া ভিড় সামলাতে পুলিশের লাঠিপেটা ও হুড়োহুড়িতে আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। আহতদের মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্যকর্মী ও আনসার সদস্যও। তাঁদের অনেকেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
বৃহষ্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে ঢাকার সাভার উপজেলা নার্সিং প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে। এর আগেও গত কয়েকদিনে টিকা নিতে আসা সাধারণ মানুষের সাথে পুলিশ ও আনসার সদস্যদের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সাভারে প্রায় ১৫ লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। কোভিড-১৯ এর টিকা কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে নিয়মিত রেজিস্ট্রেশন করে যারা টিকা পেয়েছেন তা জনসংখ্যার তুলনায় অপ্রতুল। সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ বি এম খুরশীদ আলম গণমাধ্যমে জানান যে, করোনা টিকার প্রথম ডোজ ২৬ ফেব্রুয়ারীর পরে আর দেয়া হবে না। মূলত: এই ঘোষনার পর থেকে সাভারের নার্সিং ইনস্টিটিউটে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজারেও অধিক মানুষ টিকা নিতে ভিড় করছেন। যা সামাল দিতে পারছে না পুলিশ, আনসার সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবকরা। ভিড়ের কারণে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সাভার মডেল থানা, অধরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়সহ তৎসংলগ্ন এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় বৃহষ্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারী) সকাল থেকেই হাজার হাজার মানুষ করোনার টিকার প্রথম ডোজ নিতে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র সংলগ্ন নার্সিং প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আসেন। এরপর টিকা নেওয়াকে ঘিরে শুরু হয় হুড়োাহুড়ি। এ সময় স্বেচ্ছাসেবক ও আনসার সদস্যেরা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। পরে সাভার মডেল থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। দুপুরের দিকে পুলিশ, আনসার ও স্বেচ্ছাসেকদের বেষ্টনী ভেদ করে সাধারণ মানুষ নার্সিং ইনস্টিটিউটের ভিতরে প্রবেশের চেষ্টা করে। এতে ব্যহত হয় টিকা প্রকান কার্যক্রম। বাধ্য হয়ে পুলিশ ও আনসার সদস্যরা লাঠিপেটা করে টিকা প্রতাশীদের। এ সময় আনসার সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবকসহ আহত হন প্রায় ৩০ জন। আহতদের অনেককে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। দেখা গেছে, পুলিশের লাঠিপেটা ও হুড়োাহুড়িতে বৃদ্ধ নারী-পুরুষেরা রাস্তায় অসহায় ভাবে পড়ে আছে।
বিরুলিয়ার শাহজাহান, রাজাশনের সেলিম মিয়া, ভাটপাড়ার নূর মোহাম্মদ, পোড়া বাড়ির ললিতা দাস, ছায়াবীথির মর্জিনা খাতুনসহ অনেকেই জানান, গত কয়েকদিন ধরে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত টিকা নিতে এসেও ব্যর্থ হয়েছি। এত ভিড় যে টিকা কেন্দ্রের কাছেও যেতে পারছিনা। রাস্তায়ই সারাদিন কেটে যাচ্ছে। এত ভিড় দেখে অনেকে টিকা না নিয়েই ফেরত যাচ্ছেন। সাভারের মত একটি জনবহুল এলাকায় প্রায় ১৫ লক্ষের অধিক লোকের বসবাস। এখানে একটি মাত্র কেন্দ্রে টিকা দেয়ার ব্যবস্থা না করে আরো কেন্দ্র করা উচিৎ ছিল। এটা কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা যে, প্রতিনিয়ত এত মানুষ এখানে এসে হয়রানী হচ্ছে।
সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদা বলেন, ‘টিকাপ্রত্যাশী হাজার হাজার মানুষের উপচেপড়া ভিড় আর হুড়োাহুড়িতে স্বাস্থ্যবিধি উধাও হয়ে গেছে। কোনোভাবেই এ চাপ সামলানো যাচ্ছে না। তবে ২৬ তারিখের পরেও সাভারে টিকা প্রদান কার্যক্রম চালু থাকবে বলে জানান তিনি।
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাইনুল ইসলাম বলেন,থানা থেকে অতিরিক্ত ফোর্স টিকাকেন্দ্রে মোতায়েন করা হয়েছে।