একই সঙ্গে নিহতের স্বামী মোর্শেদায়ান নিশানকে ৫ লাখ এবং অন্য আসামিদের ৩ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ডের আদেশ দেন।
আসামি নিশানের পক্ষের আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ বিষষটি নিশ্চিত করেছেন।
মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত আসামিরা হলেন- নিহতের স্বামী মোর্শেদায়ান নিশান, এহসান সুজন, আনিচুর রহমান ও হাসান শেখ। নিশান মাছরাঙ্গা টিভির গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি ও স্থানীয় ‘দৈনিক আমাদের গোপালগঞ্জ' পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের পর তিনি গ্রেফতার হলেও জামিন নিয়ে ফের পলাতক হন। বাকি তিন আসামি কারাগারে ছিলেন।
গত ১৩ জানুয়ারি রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক রায়ের জন্য এই তারিখ ধার্য করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০০৬ সালে নিশানের সঙ্গে জাকিয়া বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই নিশানের ও তার পরিবারের সদস্যরা এক কোটি টাকা যৌতুকের জন্য জাকিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টি করতো। তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতো। সন্তানের কথা চিন্তা করে নির্যাতন সহ্য করতো জাকিয়া।
২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে আসামিরা জাকিয়ার কাছে মোর্শেদায়ান নিশানের নামে ঢাকায় ফ্ল্যাট কিনে দেওয়ার জন্য এক কোটি টাকা যৌতুক দাবি করে। জাকিয়া যৌতুক দিতে অস্বীকৃতি জানালে আসামিরা জাকিয়াকে জোর করে শোয়ার ঘর থেকে রান্নার ঘরে নিয়ে যায়। মোর্শেদায়ান নিশান অন্যান্য আসামিদের প্ররোচনায় কুপিয়ে হত্যা করে।
মামলা তদন্ত করে ওই বছরের ৯ জুন গোপালগঞ্জ জেলার ডিবি পুলিশের পরিদর্শক সওগতুল আলম চার জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন। এরপর গোপালগঞ্জ জেলা জজ আদালতে চার আসামির বিচার শুরু হয়। মামলায় সাত জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। মামলাটির বিচার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি আসার পর আরও ১৩ জন সাক্ষ্য দেন। তাই চার্জশিটভুক্ত ২০ সাক্ষীর মধ্যে ২০ জনেরই সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।
গত ৩০ ডিসেম্বর মামলাটি রায়ের জন্য ধার্য ছিল। কিন্তু ওইদিন রায় থেকে উত্তোলন করে আবার আসামিদের আত্মপক্ষ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। গত ১৩ জানুয়ারি যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের তারিখ ধার্য করেন।