প্রকাশ: শুক্রবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০২২, ৭:২০ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
‘আমার স্বামীও নাই। সন্তানরা থেকেও নাই। শীতের কষ্টে একখান কম্বল কিনার টাকা না থাকায় বাবা কষ্টকইরা রাত কাটাই। আপনাদের কম্বলটা পাওয়ায় এখন রাতের বেলা একটু আরামের ঘুম হইব।’কথাগুলো বলছিলেন হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বহুলা গ্রামের মৃত আলাই মিয়ার স্ত্রী মালিক চান (৬৮)।
আজ শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) বিকেলে বহুলা ঈদগাহমাঠে দেশের শীর্ষ শিল্প প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় দেশের বৃহত্তম সামাজিত সংগঠন শুভসংঘের শীতবস্ত্র বিতরণকালে মালিক চান কম্বল হাতে পেয়ে এই অনুভূতি প্রকাশ করেন। তার সঙ্গে আসা আরেক বৃদ্ধ জবেদা খাতুনের চোখে মুখেও ছিল তৃপ্তির ছাপ। শীতবস্ত্র নিতে আসা শাহানা আক্তার বলেন, তার পরিবারে সদস্য সংখ্যা ৬ জন। পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র না থাকায় তারা শীতে কষ্ট করতেন। বসুন্ধরা গ্রুপের শীতবস্ত্র পেয়ে সেই কষ্ট অনেকটাই কমে যাবে।
শুক্রবার হালকা বৃষ্টি আর কনকনে শীতের মাঝে এমনই এক আনন্দের আবহ তৈরি করে এই শীত বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠান। শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামানের সভাপতিত্বে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. জহিরুল হক শাকিল। তিনি বলেন, শীত মৌসুম চলছে, শুরুও হয়েছে শৈত্য প্রবাহও, সঙ্গে করোনা মহামারী। সব মিলিয়ে জাতির ক্রান্তিকালে স্বল্প আয়ের মানুষদের পাশে দাঁড়ানো বড় প্রয়োজন। এ সময়ে দেশজুড়ে মানুষের হাতে শীতবস্ত্র তুলে দেওয়া বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের এক অনন্য উদ্যোগ। এটি দৃষ্টান্ত ও অনুকরণীয় হয়ে থাকবে সমাজে।
অনুষ্ঠানে নানা শ্রেণি-পেশার ৫ শ নারী-পুরুষ ও শিশুদের হাতে একটি করে কম্বল তুলে দেওয়া হয়। এ সময় অতিথিবৃন্দ ও এলাকাবাসী বসুন্ধরা গ্রুপের প্রসংশা করেন এবং বৃহৎ এই শিল্প প্রতিষ্ঠানটির উত্তরোত্তর সফলতা কামনা করেন। পরে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকার জহুর চান বিবি মহিলা কলেজে ২শ দরিদ্র শীতার্থদের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়। জহুর চান বিবি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল্লা আল মামুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. জহিরুল হক শাকিল। বিশেষ অতিথি ছিলেন শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিনহাজুল ইসলাম, কালের কণ্ঠের হবিগঞ্জ প্রতিনিধি শাহ ফখরুজ্জামান, শুভ সংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান ও শায়েস্তাগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক মঈনুল ইসলাম রতন।
কালেরকণ্ঠের জেলা প্রতিনিধি শাহ ফখরুজ্জামান জানান, হবিগঞ্জ জেলার সদর ও শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় ৭০০ জন অস্বচ্ছল মানুষকে বসুন্ধরা গ্রুপের কম্বল দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে চুনারুঘাট নবীগঞ্জ ও বানিয়াচং উপজেলায় আরও ৭০০ জনকে একইভাবে শীতবস্ত্র দেওয়া হবে।
দেশের স্বনামধন্য বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে কম্বল উপহার পেলেন ময়মনসিংহের হোটেল কর্মচারিরা। শুক্রবার দুপুরে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব মিলনায়তনের এসব কম্বল তাদের হাতে তুলে দেয়া হয়।
প্রাথমিক ভাবে ৫০ জনের হাতে এ কম্বল তুলে দেয়া হয়। কম্বল বিতরণে সহায়তা করেন কালের কণ্ঠ শুভসংঘের ময়মনসিংহের বন্ধুরা। কম্বল পেয়ে হোটেল কর্মচারিরা আপ্লুত হয়ে পড়েন।
কর্মচারিদের পক্ষ থেকে শামছুর ইসলাম বলেন, আমরা এই কম্বল পাইয়া খুব খুশি হইছি। আল্লাহ বসুন্ধরার ভালো করুন।