মহড়ার জন্য একটি ডামি উড়োজাহাজ রাখা হয় বিমানবন্দরের রানওয়ের পাশেই। মহড়ার জন্য ডামি উড়োজাহাজে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। রাত ১টা ১৭ মিনিটে ‘এবিসি এয়ারলাইন্সের’ একটি উড়োজাহাজে আগুন লাগার খবর দেয় এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল টাওয়ার। চার মিনিট পর রাত ১টা ২১ মিনিটে বিমানবন্দরের ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসে আগুন নেভাতে। একইসঙ্গে বিমান বাহিনীর ফায়ার সার্ভিসের গাড়িও আসে। সেই সময় বিমান বাহিনীর একটি অস্ত্রধারী দল উড়োজাহাজটি ঘিরে রাখে। স্বাস্থ্য বিভাগের অ্যাম্বুলেন্স আহত যাত্রীদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। গুরুতর আহদের দ্রুত হাসপাতালে নিতে ঘটনাস্থলে আসে বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার। নিহত যাত্রীদের মরদেহ মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত ১টা ৪৩ মিনিটে মহড়া শেষ হয়।
মহড়ায় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স, বিমানবাহিনী, সেনাবাহিনী, র্যাব, আনসার, স্বাস্থ্য বিভাগ, কুর্মিটোলা হাসপাতাল, বিমানসহ বিভিন্ন সংস্থা অংশ নেয়।
অনুষ্ঠানে বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এএইচএম তৌহিদ-উল আহসান বলেন, যে কোনো দুর্ঘটনার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এই মহড়া। আর যে কোনো পরিস্থিতিতে বিমানবন্দরের বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয় করতে এই মহড়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
গত ১০ ডিসেম্বর থেকে রাত ১২টার পর থেকে ৮ ঘণ্টা ফ্লাইট বন্ধ রয়েছে বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালে হাই স্পিড ট্যাক্সিওয়ে নির্মাণকাজের জন্য। এ কারণে এ বছর দিনের বেলার পরিবর্তে রাতে এই মহড়া করা হচ্ছে।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান, এ ধরনের মহড়া করতে বিমানবন্দরে স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হয়। যেহেতু এখন আমাদের রাতে ফ্লাইট বন্ধ, তাই এবার প্রথমবারের মতো রাতে মহড়া করা হলো। দুর্ঘটনা যে কোনো সময় ঘটতে পারে, রাতে মহড়ার করার মধ্য দিয়ে রাতের বেলায় দুর্ঘটনা ঘটলে সেই পরিস্থিতি মোকাবিলারও অনুশীলন হলো।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দেশের প্রধান বিমানবন্দর। এই বিমানবন্দরের মাধ্যমে দেশের সিংহভাগ মানুষ ভ্রমণ করেন। শাহজালালে তৃতীয় টার্মিনালের কাজ চলমান আছে, যা আমাদের সামনে দৃশ্যমান। দেশের সব বিমানবন্দরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানের যাত্রী সেবা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশনের সনদ প্রাপ্তির জন্য এই মহড়া করা হলেও এটি সবার জন্য শিক্ষণীয়। এই অভিজ্ঞতা সত্যিকার দুর্ঘটনা ঘটলে কাজে লাগানো সম্ভব হবে।
বিমানবন্দরের নিরাপত্তার সঙ্গে দেশের ভাবমূর্তি সম্পর্কিত উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কোনো ধরনের আপোস করা চলবে না। নিরাপত্তা বিঘ্নকারীদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। বিমানবন্দরের সব কর্মীদের মনে রাখতে হবে, আমাদের প্রধান কাজ যাত্রীদের সেবা করা। কোনো যাত্রী যেন হয়রানির শিকার না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।