শুক্রবার ২২ নভেম্বর ২০২৪ ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে সুইজারল্যান্ড বানানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন: তাজুল ইসলাম   ইংরেজি নববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা   করোনায় মৃত্যু কমেছে, শনাক্ত বেড়েছে    আরও ৩ জনের ওমিক্রন শনাক্ত   শপথ নিলেন নতুন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী   বাস সরাতে গিয়ে দুই মৃত্যু: সেই পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা   আন্দোলনের বিকল্প নেই, ফয়সালা রাজপথেই হবে: ফখরুল   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
'বাংলাদেশে একদিন বিমান ও হেলিকপ্টার তৈরি হবে'
ভোরের পাতা ডেস্ক
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২১, ৪:৩৭ পিএম আপডেট: ৩০.১২.২০২১ ৪:৪৮ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

মহাকাশ গবেষণা, বিমান বাহিনীর উন্নয়ন এবং বেসামরিক বিমান চলাচল সেক্টরকে যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন এন্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার মাধ্যমে আমাদের দেশেই একদিন বিমান ও হেলিকপ্টার তৈরি হবে। 

বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ বিমান বাহিনী একাডেমিতে রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ-২০২১ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে যশোরে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী একাডেমিতে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে অত্যাধুনিক ফাইটার প্লেন, এয়ার ডিফেন্স রাডার, ক্ষেপণাস্ত্র এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কেননা সরকার চায় বিমানবাহিনী একটি উন্নত দেশের বাহিনী হিসেবে গড়ে উঠুক। সেজন্য আমরা ইতোমধ্যেই নতুন ঘাঁটি (উইং), ইউনিট এবং প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপন করেছি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীকে আমরা উন্নত বিশ্বের বিমানবাহিনীর সমপর্যায়ে দেখতে চাই।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে আমরা জাতির পিতার প্রণীত প্রতিরক্ষা নীতির আলোকে ফোর্সেস গোল-২০৩০ প্রণয়ন করে এর বাস্তবায়ন শুরু করি। বিমানবাহিনীকে একটি শক্তিশালী ও যুগোপযোগী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি ইতোমধ্যে বাহিনীতে সংযোজন করা হয়েছে অত্যাধুনিক যুদ্ধ বিমান, হেলিকপ্টার, এয়ার ডিফেন্স রাডার, ক্ষেপণাস্ত্র এবং প্রয়োজনীয় সামরিক সরঞ্জাম। স্থাপন করা হয়েছে নতুন নতুন ঘাঁটি, ইউনিট এবং প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন ধরনের বিমান, রাডার ও অন্যান্য সামরিক সরঞ্জামের সুষ্ঠু, নিরাপদ ও সাশ্রয়ী রক্ষণাবেক্ষণ এবং ওভারহোলিংয়ের লক্ষ্যে নির্মাণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু এরোনটিক্যাল সেন্টার।

তিনি বলেন, এই সেন্টারের তত্ত্বাবধানে বর্তমানে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী নিজস্ব প্রযুক্তি ও জনবলের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের বিমান ও হেলিকপ্টার ওভারহোলিং করছে। মহাকাশ গবেষণা, বিমানবাহিনীর উন্নয়ন এবং বেসামরিক বিমান চলাচল সেক্টরকে যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়’। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার মাধ্যমে আমাদের দেশেই একদিন বিমান ও হেলিকপ্টার তৈরি হবে, এ বিশ্বাস আমার আছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে জনগণের রায়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে আওয়ামী লীগ সরকার বিমানবাহিনীর আধুনিকায়নে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করে। সেই সময় বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ বিমানবাহিনীতে চতুর্থ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান মিগ-২৯ সংযোজন করা হয়। এজন্য বিএনপি সরকার আমার বিরুদ্ধে দুটি মামলাও দেয়। এছাড়া সুপরিসর সি-১৩০ পরিবহন বিমান এবং উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন আকাশ প্রতিরক্ষা রাডার স্থাপন করা করা হয়।

তিনি আরও বলেন, বিমানবাহিনীর ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উন্নততর এবং যুগোপযোগী উড্ডয়ন প্রশিক্ষণ সুনিশ্চিত করার জন্য সরকার বিমানবাহিনীতে অত্যাধুনিক ফ্লাই-বাই-ওয়্যার এবং ডিজিটাল ককপিট সম্বলিত ইয়াক-ওয়ান থ্রি জিরো কমব্যাট ট্রেইনার, কে-এইট ডব্লিউ জেট ট্রেইনার, এল-ফোর ওয়ান জিরো ট্রান্সপোর্ট ট্রেইনার, এডব্লিউ-ওয়ান ওয়ান নাইন কেএক্স হেলিকপ্টার ট্রেইনার এবং বিভিন্ন ধরনের সিমুলেটর সংযোজন করেছে। এছাড়া, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর জন্য সার্টিফাইড টায়ার-থ্রি ডাটা সেন্টার ক্রয় করা হয়েছে। বর্তমানে এর স্থাপন কাজ চলমান রয়েছে। এই ডাটা সেন্টারের মাধ্যমে বিমানবাহিনীর বিভিন্ন কার্যক্রম প্রথাগত পদ্ধতির পরিবর্তে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সম্পাদন করা সম্ভব হবে। অতি সম্প্রতি বিমান বাহিনীর জন্য ক্রয় করা হয়েছে ভিস্যাট হাব ও টার্মিনাল স্টেশন। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর সহায়তায় এই ভিস্যাট হাব ও টার্মিনাল স্টেশনের মাধ্যমে বিমানবাহিনীর ঘাঁটি ও ইউনিটগুলোর মধ্যে স্যাটেলাইটভিত্তিক যোগাযোগ স্থাপন সম্ভব হবে।

বিমানবাহিনী করোনাকালীন এবং যেকোনো দুর্যোগে মানুষের পাশে থেকেছে এবং উদ্ধারকাজে সহযোগিতা করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী পাসিং আউট ক্যাডেটদের অর্পিত দায়িত্ব দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে পালনের আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘ তিন বছর কঠোর প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে কাঙ্ক্ষিত কমিশন পেতে যাওয়া ক্যাডেটদের আনন্দঘন মুহূর্তে আন্তরিক অভিনন্দন জানান।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, মনে রাখবে, তোমাদের কর্মক্ষেত্র শুধু বাংলাদেশই নয়। এখন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনেও আমাদের বিমানবাহিনী বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখছে। অনেক ক্রিটিক্যাল জায়গায় যেখানে অন্য দেশের বাহিনী যেতে সাহস পায় না সেখানেও আমাদের সশস্ত্র বাহিনী এবং বিমানবাহিনী গুরুত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে। কাজেই, আমি মনে করি, ভবিষ্যতের জন্য নিজেদের সেভাবেই গড়ে তুলবে।

শেখ হাসিনা বলেন, দায়িত্ব পালনকালে তোমরা সবসময় দেশকে এবং দেশের মানুষকে ভালোবাসবে এবং দেশের জন্য তোমাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব ও কর্তব্য সততার সঙ্গে পালন করবে। আজ শপথ গ্রহণের মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার যে বিরাট দায়িত্ব তোমাদের কাঁধে অর্পণ হলো- তা নিষ্ঠা ও একাগ্রতার সঙ্গে দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে পালন করবে বলে আমি আশা করি।

এ প্রসঙ্গে তিনি ১৯৭৫ সালের ১১ জানুয়ারি কুমিল্লা সামরিক একাডেমিতে প্রথম শিক্ষা সমাপনী অনুষ্ঠানে বিদায়ী ক্যাডেটদের উদ্দেশে জাতির পিতার দেওয়া ভাষণের একটি অংশের উদ্বৃতি তুলে ধরেন। জাতির পিতা বলেছিলেন, আজ তোমরা তোমাদের ট্রেনিং শেষ করলে। কিন্তু তোমাদের মনে রাখতে হবে, এটা এক পর্যায়ের শেষ, আর এক পর্যায়ের শুরু। পরের পর্যায়ে দায়িত্ব অনেক বেশি। আজ তোমরা ট্রেনিং সমাপ্ত করে সামরিক বাহিনীর কর্মচারী হতে চলেছ। এখন তোমাদের ওপর আসছে দেশ এবং জাতির প্রতি দায়িত্ব, জনগণের প্রতি দায়িত্ব। যে সমস্ত সৈনিকদের তোমরা আদেশ-উপদেশ দেবে, তাদের প্রতি দায়িত্ব, তোমাদের কমান্ডের প্রতি দায়িত্ব এবং তোমাদের নিজেদের প্রতি দায়িত্ব।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, তোমাদের পূর্বসূরিদের দূরদর্শিতা, পেশাদারিত্ব ও কঠোর পরিশ্রমে বিমানবাহিনী আজ যে পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে, তাকে তোমাদের মেধা, পেশাদারিত্ব ও দেশপ্রেম দিয়ে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’ তিনি কমিশনপ্রাপ্ত নবীন কর্মকর্তাদের অভিভাবকদেরও আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘আপনাদের প্রিয় সন্তানেরা দেশমাতৃকার সেবায় নিয়োজিত থেকে দেশ ও জাতিকে গর্বিত করবে বলে আমি আশাবাদী।



ভোরের পাতা/কে 




« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]