প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:৪২ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে অভিযান-১০ লঞ্চ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় বরগুনার তালতলী উপজেলার নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়নের আগাপাড়া গ্রামের আব্দুল আজিজের জীর্ণশীর্ণ ঝুপড়ি ঘরে দুই যমজ নাতনীর লাশের পরে এবার এলো মেয়ে সিমু আক্তারের লাশ।
নিখোঁজের ৬ দিন পরে আজ লামিয়া সামিয়ার কবরের পাশে মা শিমু আক্তারের কবর প্রস্তুত করছেন প্রতিবেশিরা। যে বাড়িতে একের পর এক লাশের মিছিল হলেও নেই কন্নার আওয়াজ। সিমুর বাবা আব্দুল আজিজ মেয়ের লাশের খাটিয়ার পাশে দাড়িয়ে ছারছেন দীর্ঘ নিশ্বাস।
এর আগে গতকাল বুধবার(২৯ ডিসেম্বর) সকালে নদী থেকে লাশটি উদ্ধার করে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা ঝালকাঠি জেলা প্রশাসন। সিমুর ভাই হান্নান নিজেই গিয়ে তার বোনের লাশ সনাক্ত করেন।
বৃহস্পতিবার(৩০ ডিসেম্বর) ভোর রাতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, যমজ বোন লামিয়া-সামিয়া কবরের পাশেই তার মা সিমুর কবর প্রস্তুত হচ্ছে। প্রতিবেশিরা যাওয়া আসা থাকলেও বাড়িতে নেই কান্নার কোনো শব্দ। এলাকার লোকজন জানান,যেহেতু লাশটি অর্ধগলিত তাই ভোররাতেই দাফন সম্পন্ন করা হবে। দুই মেয়ে ও মা’র লাশ পাশাপাশি কবরে দাফন হচ্ছে।
সাংবাদিকদের দেখে আব্দুল আজিজ হু-হু করে কেঁদে উঠে বলেন,মোর নাতীর(নাতনী) লাশ লইয়া আইছেন কয়দিন আগে। আইজগো আইছেন মোর মাইয়ার লাশটা নিয়া। বউ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।
এ কেমন বিচার করলো আল্লাহ্। মুই কি ভুল হরছি আল্লাহ্’র ধারে যে হেই ভুলের এতো বড় শাস্তি দিলো মোরে। এহন মাইয়াডার মরা মুখটি খুলে দেন আমার মুখটি শেষবারের মতোই দেখবো।
তিনি আরও বলেন, আম্মেরা কেম্মে বোঝবেন যে নিজ হাতে দুই নাতনী ও মাইয়ার লাশ কবরে থোয়া কিযে যন্ত্রনার। মাইডার লাশ সামনে রাইখা কানতেও পারি না। এইটু কথা বলেই তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
সিমুর ভাই হান্নান বলেন, প্রতিদিনই বোনের লাশের খোঁজখবর নিতে ঝালকাঠি সেই ঘটনাস্থলে যাই। গতকাল জানতে পারি দুইটি মহিলার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এমন সংবাদ পেয়ে ছুটে যাই গিয়ে দেখি আমার বোনের লাশটি পড়ে আছে মাটিতে। জেলা প্রশাসনের কাছে বোনের সকল তথ্য দিয়ে আমার বোনের লাশ নিয়ে বাড়িতে আসি।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কাওসার হোসেন বলেন,নিহতদের পরিবারকে দাফনের জন্য ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। আর যেহেতু আব্দুল আজিজ জীর্ণশীর্ণ ঘরে বসবাস করছে তাকে একটি ঘর দেওয়া হবে।