শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিরোনাম: বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে সুইজারল্যান্ড বানানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন: তাজুল ইসলাম   ইংরেজি নববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা   করোনায় মৃত্যু কমেছে, শনাক্ত বেড়েছে    আরও ৩ জনের ওমিক্রন শনাক্ত   শপথ নিলেন নতুন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী   বাস সরাতে গিয়ে দুই মৃত্যু: সেই পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা   আন্দোলনের বিকল্প নেই, ফয়সালা রাজপথেই হবে: ফখরুল   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
দেড় মাস পর ডুবন্ত কার্গো উদ্ধার
নিখোজ নাবিকের সন্ধান মিলেনী
মোংলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২১, ৮:২৮ পিএম আপডেট: ২৮.১২.২০২১ ৮:৩৬ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

বন্দর কর্তৃপক্ষে জোড়ালো তাগিদ আর নিখোঁজ নাবিকের লাশের অনুসন্ধানে অবশেষে এক মাস ১৩ দিন পর উদ্ধার করা হলো ডুবন্ত কার্গো জাহাজ এম,বি ফারদিন-০১। সোমবার রাতে অন্য একটি উদ্ধারকারী জাহাজের মাধ্যমে এটিকে টেনে বন্দর চ্যানেলের কানাইনগর এলাকার পশ্যর নদীর চরে উঠিয়ে রাখা হয়েছে। ওই সময় ডুবে যাওয়া কার্গোটিতে নিখোজ থাকা ৫ নাবিকের মধ্যে পর্যাক্রমে ৪জনের লাশ উদ্ধার হলেও সুকানী মোঃ মহিউদ্দিন (৬০) এর সন্ধান মেলেনী। 

জাহাজের মধ্য থেকে এক নাবিকের লাশ উদ্ধার হওয়ায় ডুবন্ত কার্গো জাহাজের হ্যাচের মধ্যে তারও মরা দেহ বেজে থাকতে পারে বলে ধারনা করছিল উত্তালনকারী ডুবুড়ী দল ও নিখোজের পরিবার সদস্যরা। নিখোজ লস্কর মহিউদ্দিনের বাড়ী পিরোজপু জেলার স্বরুকাঠী উপজেলায়। 

ডুবন্ত কার্গোটির উদ্ধারকারী প্রতিষ্ঠান নারায়নগঞ্জের ভাই ভাই স্যালভেজ কোম্পানীর মালিক মোঃ আঃ সাত্তার জানান, হাড়বাড়িয়ার ১২ নম্বর এ্যাংকোরেজ এলাকায় ডুবে যাওয়া কার্গো জাহাজটি উত্তোলনের জন্য আমার প্রতিষ্ঠানের সাথে কার্গো মালিকের চুক্তিপত্র হয়। প্রথমে ডুবন্ত ওই কার্গোটি থেকে অন্য একটি কার্গোতে কয়লা অপসারণ করা হয়েছে। ডুবন্ত কার্গোতে যে পরিমান কয়লা ছিল পাম্প মেশিনের সাহায্যে গত ১৫ ডিসেম্বর সম্পুর্ন কয়লা অপসারণ শেষ হয়। পরে শুধু কার্গোটি উত্তলনের কাজ শুরু করা হয়। সেখান থেকে প্রায় ১০ থেকে ১২ দিন সময় ধরে ডুবন্ত কার্গোটি উঠিয়ে দুইটি নৌযানের সহায়তা ভাসিয়ে এনে সোমবার রাতে মোংলার কানাইনগর এলাকায় পশুর নদীর চরে রাখা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ডুবন্ত কার্গো উঠানোর পর দেখা যাচ্ছে প্রথমে একটি বিদেশী জাহাজের সাথে ধাক্কা লেগে ডুবে যাওয়ার পর ওই বিদেশী জাহাজটি ডুবন্ত কার্গো জাহাজটির উপর দিয়ে চলে যাওয়ায় পাঙ্খার আঘাতে ধুমড়ে-মুছড়ে গেছে কয়লা বোঝাই কার্গোটি। যার কারনেই কার্গোতে থাকা ৭ নাবিকেল মধ্যে ৫জনই নিখোজ হয়েছে। 

পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ এলাকার এম,বি ফারদিন-০১ এর মালিক মোঃ ফজলুল হক খোকন বলেন, আমার এই বাল্কহেডটি অন্য আরেকজনের কাছে ভাড়া দেয়া ছিলো। তার কাছে থাকা অবস্থাতেই মোংলা বন্দরে দুর্ঘটনার শিকার হয়। যারা উত্তলন করেছে তাদের ভাস্যমতে উঠানো ওই কার্গো দিয়ে পুনরায় আর কোন কাজ বা নৌপথে চলানো সম্ভব হবেনা, তবে এখন কেটে বিক্রি করা ছাড়া উপায় নাই। 

গত ১৫ নভেম্বর রাতে প্রায় সাড়ে ৬শ মেঃ টন কয়লা বোঝাই কার্গো জাহাজ এম,বি ফারদিন-০১ বন্দর ছেড়ে যাওয়ার সময় বিদেশী একটি জাহাজের ধাক্কা লেগে মোংলা বন্দরের হাড়বাড়িয়ার ১২ নম্বর এ্যাংকোরেজ বয়া এলাকায় ডুবে যায়। দুর্ঘটনার সময় ওই কার্গোর ২ জন নাবিক জীবিত উদ্ধার হলেও নিখোঁজ থাকে ৫ জন নাবিক। তার মধ্যে থেকে ৪ জনের লাশ বিভিন্ন সময়ে উদ্ধার করা হলেও এখনও নিঁখোজ রয়েছেন লস্কর মোঃ মহিউদ্দিন।

পরিবেশবীদরা বলছেন, ডুবন্ত কার্গোটিতে নিম্নমানের পিট কয়লা ছিল। এসব কয়লা ঢাকাসহ ওই অ লের বিভিন্ন ইটভাটা ও বিভিন্ন লোহার কারখানায় ব্যবহারের জন্য নেয়া হচ্ছিল। আমদানীকরা এ কয়লায় রয়েছে সালফার, সিসা, ক্রোমিয়াম, ক্যাডমিয়াম, পারদ, নিকেল, সেলেনিয়াম, বেরিলিয়াম, রেডিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ ও আর্সেনিকের মতো ক্ষতিকর সব পদার্থ। দীর্ঘ সময় কয়লাগুলো পানিতে ভিজে থাকার কারণে এসব ক্ষতিকারক পদার্থ পানির সঙ্গে মিশে গেছে। আর এখন যেভাবে পাইপ দিয়ে কয়লা উত্তোলন করা হচ্ছে, তাতে কয়লা উঠবে ঠিকই, কিন্তু এর ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ পানি ও মাটিতে মিশে মাটির গুণাগুণ নষ্ট করবে। এতে অঙ্কুরোদ্গম ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কয়লাবোঝাই জাহাজটি যে স্থানে ডুবেছে, সেখানে ইরাবতী ডলফিনের বিচরণক্ষেত্র। লবন পানির কুমিরের প্রজননেরও সময় এটা। ফলে কয়লার বিষাক্ত রাসায়নিকের কারণে ডলফিন ও কুমিরের জীবনচক্র ব্যাহত হতে পারে। অন্যান্য জলজ প্রাণীর প্রজননও হুমকিতে পড়বে। একই সঙ্গে মাছসহ অন্যান্য প্রাণীও বিভিন্ন রোগাক্রান্ত হবার সম্ভাবনা রয়েছে। 

এদিকে, কয়লা বোঝাই ডুবন্ত কার্গো জাহাজ উত্তলনে দেরি হওয়ায় উদ্বেগ জানিয়ে সেভ দ্যা সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান লায়ন ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, কার্গোটি ডুবে যাওয়ার সাথে সাথে উত্তলন করতে পারলে ভাল হতো। কয়লার জাহাজটি উদ্ধারে দেরি হওয়ায় সুন্দরবনের জলজ-প্রাণীজ ও জীববৈচিত্রের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ এ কয়লায় সালফারের পরিমাণ বেশি থাকায় এটি পরিবেশকে মারাত্মকভাবে ক্ষতি করে থাকে। এছাড়া রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হলে সুন্দরবনে এ ধরণের দুর্ঘটনা ক্রমশই বৃদ্ধি পাবে। তাই বন্দর কর্তৃপক্ষসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট সকরকেই এব্যাপারে সচেতন হতে হবে বলে জানায় এ নেতা। 



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]