দেশে ইন্টারনেট স্বাধীনতার ক্ষেত্রে বিদ্যমান প্রধান হুমকিগুলো মোকাবিলায় গণমাধ্যমের করণীয় বিষয়ে বিআইএফআই ওয়ার্কিং গ্রুপের সঙ্গে সাংবাদিক এবং গণমাধ্যমের নির্বাহীদের নিয়ে এ পরামর্শ সভার আয়োজন করা হয়।
আর্টিকেল ১৯-এর তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, সংস্থাটি ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের হওয়া ২২৫টি মামলার ঘটনা রেকর্ড করেছে। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ৪১৭ জন ব্যক্তি এসব মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৬৮ জন সাংবাদিক। ১৫ জন সাংবাদিক এই আইনের আওতায় গ্রেপ্তার হয়েছেন।
এসব মামলাগুলোর বেশিরভাগই হয়েছে- প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, জাতীয় সংসদ সদস্য (এমপি) অথবা ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের বিরুদ্ধে কটূক্তি বা মানহানির কারণে।
সভায় বিআইএফআই ওয়ার্কিং গ্রুপের সদস্য ও টেলিকম রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশের সভাপতি রাশেদ মেহেদী 'বাংলাদেশে ইন্টারনেট স্বাধীনতার হুমকি মোকাবিলায় মিডিয়ার ভূমিকা' শিরোনামে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, ডিজিটাল অধিকার, তথ্য প্রকাশ ও পাওয়ার স্বাধীনতা, ইন্টারনেটে প্রবেশগম্যতার অধিকার, ইন্টারনেট সেন্সরশিপ থেকে মুক্ত থাকা এবং সবার জন্য সমান সুযোগের ইন্টারনেট সেবাকে বিশ্বজুড়ে ইন্টারনেট স্বাধীনতার পাঁচটি ভিত্তি ও অধিকার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বাংলাদেশে এই পাঁচটি অধিকার নিশ্চিতে সঠিক তথ্য সরবরাহ করা, ইন্টারনেট স্বাধীনতার ধারণা প্রচার করা এবং মানুষকে ডিজিটাল অধিকার ও নিরাপত্তার বিষয়ে সচেতন করার মাধ্যমে মিডিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
অনুষ্ঠানে প্রথম আলোর যুগ্ম-সম্পাদক সোহরাব হাসান বলেন, সত্য গোপন করা যায় না। ভুল তথ্য প্রদানকারী মিডিয়ার ওপর থেকে মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলে। তাই সংবাদ প্রকাশে গণমাধ্যমকে আরও বেশি সতর্ক হতে হবে।
আর্টিক্যাল নাইনটিন দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল বলেন, গণমাধ্যম ও ইন্টারনেটের স্বাধীনতা পরস্পর অবিচ্ছেদ্য। বর্তমানে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা একটি নিরাপদ, বৈষম্যহীন ও অবারিত ইন্টারনেট ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করে। কিন্তু ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন গণমাধ্যম ও ইন্টারনেট উভয়ের স্বাধীনতার জন্যই হুমকি।