প্রকাশ: শনিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২১, ১০:২১ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
আজকে ভোরের পাতা সংলাপের মাধ্যমে খ্রিস্টধর্মাবলম্বী সকল ভাই-বোনদেরকে শুভ বড়দিনের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। এবারের বড়দিন ২০২১তম বর্ষে পদার্পণ করেছে। প্রভু যিশুর জন্ম হয়েছিল মানুষে মানুষে ভেদাভেদ ও হানাহানি বন্ধ হবে এবং মানুষের সত্যিকারে মুক্তি হবে। এই নিয়ে বিভিন্ন সময় পৃথিবীর অনেক জায়গায় অনেক কাজ হয়েছে। আজকে প্রেক্ষাপটে শুধু বৈশ্বিক বাস্তবতায় নয় বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও বড়দিন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ যিশু খ্রিস্টের জন্মের ২০২১তম বর্ষে এসে কিংবা বাংলাদেশ জন্মের ৫০তম বর্ষে এসেও আমাদেরকে কিন্তু এখনো সেই জায়গাটাতে কাজ করে যেতে হচ্ছে।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৫৬৪তম পর্বে শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে লিভার বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল, বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয়, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী, সংগীত শিল্পী, লসএঞ্জেলস যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গৌরব গল্প। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।
গৌরব গল্প বলেন, আসলে ধর্ম যার যার উৎসব সবার আগে এই বিষয় নিয়ে কিছু কথা বলতে গেলে আমি প্রথমেই যিশুকে নিয়ে কিছু কথা বলতে চাচ্ছি। তিনি ছিলেন সার্বজনীন মানুষ। সে নিজে কিন্তু আসলে কোন ধর্ম নিয়ে আসেনি। সে আসলে মানুষদের ভেতরে যে মনুষ্যত্ব আছে সেটাকে পরিবর্তন করার জন্য এসেছে। আমাদের ভেতরে যে পাপ জমা হয়েছিল সেটা তিনি মুছে ফেলতে এসেছিল। আমরা যারা তার বিশ্বাসী তাদেরকে খ্রিস্টান বলে সম্বোধন করা হয় কিন্তু আসলে যিশু একজন সার্বজনীন মানুষ ছিলেন। তিনি কিন্তু সব সময় তার ধর্মের কথা বলেননি, তিনি সব সময় মানুষের কথা বলেছেন, মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্বের কথা বলেছেন। মানুষের প্রতি মানুষের যে ভালোবাসা, মানুষের প্রতি মানুষের যে দায়িত্ববোধ, মানুষের প্রতি মানুষের যে উপকার সেটাই তিনি সব সময় বলে গিয়েছেন। আজকে বর্তমান বাংলাদেশে ধর্ম যার যার, উৎসব সবার; এই কথাটা আমরা সবাই মানি। বর্তমানে আমাদের দেশে যে সরকার ব্যবস্থা আছে তারা এই বিষয়টা সংস্থাপন করেছে। কিন্তু আসলে এই কথাটা আমাদের এই দেশে কিছু কিছু মানুষ আছে যারা এই তথ্যে বিশ্বাসী নয়। যার একটা জলন্ত উদাহরণ আমরা কিছু দিন আগে বাংলাদেশ-পাকিস্তান খেলায় দেখেছি। তারা আসলে এই বাংলা কথাটায় রাখতে চায় না, তারা আসলে বঙ্গবন্ধুর যে আদর্শ আছে সেটার সাথে কখনোই তারা নিজেদেরকে খাপ খাওয়াতে চায় না। আমার মনে হয়, বর্তমান যুগে আসলে নিজেকে সংখ্যালঘু ভাবাটা কোনভাবেই উচিৎ নয়। এই কথাটা ভাবলে নিজেকেই দাবিয়ে রাখা হবে। আমার রক্ত, আমার চামড়ায় মিশে আছে আমি বাঙালি। পৃথিবীর যে দেশেই আমি যাই না কেন, আমি কিন্তু বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়েই যাই। আমি এতদিন ধরে প্রবাসে থাকি এখানে কিন্তু অনেক সময় আমাকে অনেক ফর্ম ফিলাপ করতে হয়। সেখানে কিন্তু আমকে কখনো জিজ্ঞেস করা হয় না যে আমার ধর্ম কি, সেখানে শুধু আমার জন্মস্থানের কথা জিজ্ঞেস করা হয়। সুতরাং যেখানে আমার হাজার বছরের পূর্বপূরুষের ইতিহাস আছে সেখানে কেন আমাকে সংখ্যালঘু মনে করতে হবে। স্পেশালি বর্তমান সরকারের আমলে আমার কখনোই মনে হয়নি যে, আমি একজন সংখ্যালঘু।