ষাটোর্ধ্ব জরিনা বেগম। সংসারে তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে। দিনমজুরি করে ছেলেরা যা পায় তা দিয়েই কোন মতে চলে তিন জনের সংসার। কাজের খরায় কখনো উপোসও দিন কাটে পুরো পরিবারের।
জরিনার মতো সমিরন বিবিরও স্বামী সন্তান নিয়ে দিনমজুরি করে সংসার চলে তার। চল্লিশোর্ধ সমিরনের স্বামী তিন বছর ধরে বিছানায়। প্রতিদিন তার পেছনে ২০০ টাকা ব্যয় হয় শুধু ওষুধেই। সংসার খরচ যোগাতে মা ছেলে দুজনেই দিনমজুরি দিয়ে যা আয় হয় তা দিয়েই কোন মতে দুবেলা দুমুঠো খাবার জোটে।
বিধবা রাহেলা খাতুনের বয়স সত্তর ছুঁইছুঁই। চোখে তেমন একটা দেখতে পান না। চলাফেরার শক্তিও আগের মতো নেই। ছেলে মেয়েরা যে যার মতো সংসার নিয়ে ব্যস্ত। মায়ের খোঁজ নেওয়ারও সময় হয়না তাদের। দশ জনের দুয়ারে হাত পেতে যা পান তা দিয়েই নিজের ঘানি নিজে টানছেন গত আট বছর ধরে।
রাহেলা খাতুনের মতো আবু মিয়াও হাত পেতে নিজের জীবিকা নির্বাহ করেন। শরীরের একাংশ অচল তার। লাঠির সাহায্য ছাড়া চলাফেরা করতে পারেন না তিনি। বৃদ্ধ বাবার খোঁজ রাখেন না ছেলে মেয়েরাও। পাঁচ বছর আগে অসুখে বৌ মারা যান। তারপর থেকে একাকী জীবন তার।
এমন হাজার মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ব্রাইট।
শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ১১শ অসহায় মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হয় শীত নিবারণ বস্ত্র।
সংগঠনটির অর্ধশত স্বেচ্ছাসেবী এই হতদরিদ্র মানুষের হাতে হাতে তুলে দেন নানান রংয়ের কম্বল।
ভাংগা মোড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত শীত বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সর্দার মোস্তফা শাহীন।
এতে আরও উপস্থিত ছিলেন ব্রাইট এর সভাপতি তানভির আহমেদ সুমন, সহ সভাপতি আল মামুন শিমুল, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল করিম ছালু, সহ-সাধারণ সম্পাদক ফাইজুল আলম সজীব, যুগ্ম সম্পাদক ফজলে রাব্বী, প্রচার সম্পাদক আলমগীর ভূইয়া রকি, সমাজকল্যাণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম আকাশ, ত্রাণ ও পূনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক রাকিব, দপ্তর সম্পাদক দুর্জয়, উপদেষ্টা সদস্য আশরাফুল হক এবং ব্রাইটের গাইবান্ধা প্রতিনিধি বাবুল আহমেদ।
এ বিষয়ে সংগঠনটির সভাপতি তানভির আহমেদ সুমন বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ পরবর্তী সময় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে ব্রাইট। আগামীতেও এসব মানুষের পাশে থাকবে। প্রতি বছরের মতো এবারও হতদরিদ্র মানুষের মাঝে উপহার হিসেবে আমরা শীত বস্ত্র বিতরণ করেছি। এবার আমরা ১২০০ মানুষের হাতে এই শীত বস্ত্র তুলে দিয়েছি আমাদের সেচ্ছাসেবীদের মাধ্যমে।