#শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ উন্নত দেশ হবে: ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া কাঞ্চন। #বাংলাদেশের উন্নয়নের পথযাত্রার কান্ডারি শেখ হাসিনা: আব্দুল্লাহ আল বাকী। #শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করতে হবে: রবিন মোহাম্মদ আলী।
এ বছর আমাদের বিজয়ের ৫০ বছর অর্থাৎ সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করা হয়েছে। সকল বাধা পেরিয়ে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। বাঙালি জাতিকে যে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ তা পূর্ণতা পেয়েছে। সোনার বাংলার লক্ষ্য অর্জন শেষে বাঙালি জাতি এখন এক নতুন ডিজিটাল বাংলাদেশ অভিমুখে যাত্রা করছে। বঙ্গবন্ধু কন্যার মানবিক নেতৃত্বে বাংলার দুঃখী মানুষের জীবনমান আমূল বদলে গেছে।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৫৬৩তম পর্বে শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া কাঞ্চন, অল ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ আল বাকী, অস্ট্রিয়া বঙ্গবন্ধু পরিষদ ভিয়েনার সভাপতি রবিন মোহাম্মদ আলী। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।
অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া কাঞ্চন বলেন, এ বছর আমাদের বিজয়ের ৫০ বছর অর্থাৎ সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করা হয়েছে। সকল বাধা পেরিয়ে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। স্বাধীনতার পর দেশকে নতুন করে গড়ে তোলার চ্যালেঞ্জ নিতে হয়েছে বঙ্গবন্ধুকে। শোষিত-নিপীড়িত মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর যে স্বপ্ন তিনি দেখতেন তা বাস্তবায়নের জন্য সমাজ সংস্কারে হাত দিলেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে জাতির পিতা যেসব উদ্যোগ নিয়েছিলেন, তার ওপর ভিত্তি করেই আজকের বাংলাদেশকে গড়ে তুলছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। বাঙালি জাতিকে যে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তা আজ পূর্ণতা পেয়েছে। সোনার বাংলার লক্ষ্য অর্জন শেষে বাঙালি জাতি এখন এক নতুন ডিজিটাল বাংলাদেশ অভিমুখে যাত্রা করছে। বঙ্গবন্ধু কন্যার মানবিক নেতৃত্বে বাংলার দুঃখী মানুষের জীবনমান আমূল বদলে গেছে। অভাব, মঙ্গা ও দারিদ্র্যের করাল গ্রাস থেকে বেরিয়ে এসেছে বাংলাদেশ। গত এক দশকে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দশ লক্ষাধিক উদ্যোক্তা তৈরি হয়েছে। নতুন করে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে প্রায় এক কোটি মানুষের। নামমাত্র মূল্যে সার ও বীজ পাচ্ছেন প্রান্তিক কৃষকরা। খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে গত এক দশকে ডিজিটাল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। গ্রাম পর্যন্ত পৌঁছে গেছে ইন্টারনেট ও তথ্যপ্রযুক্তির সুবিধা। করোনার প্রাদুর্ভাবে ২০২০ সালের শুরুতে বিশ্ব যখন থমকে গিয়েছিল সেই সময়টাতেও বিচক্ষণতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে বাংলাদেশ সরকার। জঙ্গীবাদ, উগ্রবাদ ও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেও প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে উন্নীত হয়েছে বাংলাদেশ। এজন্য বিশ্বনেতারা উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন জননেত্রী শেখ হাসিনার।
আব্দুল্লাহ আল বাকী বলেন, বাংলাদেশের বিজয়ের এই সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশ আজ কোথায় এসে দাঁড়িয়েছে সেটা দেখলেই আমারা বুঝতে পারবো যে এই পঞ্চাশ বছরে আসলে বাংলাদেশের অগ্রগতি কতদূর হয়েছে। সে সময়ে আমাদের প্রত্যাশা কি ছিল এবং আজ আমাদের প্রত্যাশা কি সেটার মধ্যেও কিন্তু বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ সালে যে ছয় দফা দেন বা ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের ভাষণে যে স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয় দেখিয়েছিলেন এই পঞ্চাশ বছর পর এসে আমরা দেখেছি যে আল্লাহ্র রহমতে আমরা আজ তার স্বপ্নের সোনার বাংলা থেকেও অনেক এগিয়ে গিয়েছি। গত দুই দশকে বাংলাদেশের জাতীয় প্রবৃদ্ধির হার গড়ে সাত শতাংশ এবং করোনাকালে পাশ্চাত্যের বহুদেশে যখন ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়েছে, সেক্ষেত্রেও বাংলাদেশে জাতীয় প্রবৃদ্ধি শতকরা পাঁচভাগ অতিক্রম করেছে। অধিকাংশ দেশে জাতীয় আয় ও প্রবৃদ্ধি ঘটলেও সামাজিক সূচকে তার প্রতিফলন ঘটে না। কিন্তু বাংলাদেশের স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে সামাজিক সূচক সমূহে ইতিবাচক অগ্রগতি দৃশ্যমান। শিশু ও মাতৃ মৃত্যুর হারের বিশাল উন্নতি হয়েছে, ছয় কোটি ছাত্র-ছাত্রী শিক্ষা লাভ করছে, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের সংখ্যা বেশি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্বাধীন সরকার করোনার ভ্যাকসিন দেশের মানুষের জন্য বিনা পয়সায় যে রকম সহজলভ্য করেছেন, উন্নয়নশীল বিশ্বে তা তুলনাহীন। শুধু করোনা ভ্যাকসিনই নয়; সরকার এই সময় কর্মহীন হয়ে পড়া এবং নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সরকারি খাদ্য এবং আর্থিক সহায়তার ফলে সামাজিক সুরক্ষার দিকটি মুখ থুবড়ে পড়েনি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ উন্নয়ন ও কল্যাণমুখী রাজনীতিতে বিশ্বাসী। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, কৃষি উৎপাদন, শিল্পকারখানার উন্নয়ন, বাণিজ্য, যোগাযোগ ও প্রযুক্তি প্রভৃতি ক্ষেত্রে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। দারিদ্র্যের হার কমে আসে, মাথাপিছু আয় বেড়ে যায়, গড় আয়ু বেড়ে যায়, স্বাস্থ্য সেবা উন্নত হয়, দেশের সকল নাগরিকের শিক্ষা, জ্ঞান, বুদ্ধি, প্রজ্ঞা অনুযায়ী কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি হয়।
রবিন মোহাম্মদ আলী বলেন, বিজয়ের মাসে আমি আমার বক্তব্যের শুরুতে স্মরণ করছি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মহান মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদকে। বাংলাদেশকে সোনার বাঙলায় রূপান্তরিত করার জন্য আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে অক্লান্ত পরিশ্রম ও সর্বশেষ যে আত্মহুতি দিয়েছেন তার যথেষ্ট ফলাফল আমাদের দিয়েছেন তারই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার এ দেশকে বলেছিলেন, ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’। সেই ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’র দেশ আজ মধ্যম আয়ের দেশের কাতারে নিজের নাম লিখিয়েছে। পা রেখেছে উন্নয়নের মহাসড়কে, পৌঁছে গেছে দিগন্তহীন মহাকাশে। ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল ডিজিটাল বাংলাদেশ, কৃষক রক্ষা, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমন করে অস্থিতিশীল দেশকে শান্ত করা, যোগাযোগ ও অবকাঠামোগত ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তনসহ অর্থনৈতিক গতি আনয়ন। যার ফলশ্রুতিতে বিভিন্ন সাহসী কর্মপরিকল্পনা হাতে নিয়ে আজ তা বাস্তবে রূপলাভ করছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার এই মহামারি বিচক্ষণতার সাথে মোকাবিলা করছে। করোনায় দেশে এ পর্যন্ত ২৭ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদূরপ্রসারী দৃষ্টিভঙ্গি এবং সময়োপযোগী পদক্ষেপের ফলে করোনায় বিশ্বের অপরাপর দেশগুলোর তুলনায় অতি ঘন জনবসতিপূর্ণ বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্ত এবং মৃত্যু হার কম। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট সরকারের অন্যতম সফলতা পদ্মা সেতু নির্মাণ। শেখ হাসিনার নেতৃতে বাংলাদেশের উন্নয়নের সবচেয়ে বড় মাইলফলক এটি। বিশ্বব্যাংকের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে নিজ দৃঢ়তায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করে জননেত্রী দেখিয়েছেন নেতৃত্বের দৃঢ়তা এবং বাংলাদেশের সক্ষমতা। সাম্প্রতিক সময়ে পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আশা করা হচ্ছে আগামী বছর চালু করা হবে।