#বিশ্বে বাংলাদেশকে আলোকিত করেছেন শেখ হাসিনা: শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। #মার্গারেট থ্যাচারারকে ছাড়িয়ে গেছেন শেখ হাসিনা: ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ। #শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়া সম্ভব: কে এম লোকমান হোসেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা আমাদের দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজকে যে উচ্চতায় পৌঁছেছেন সেটা মার্গারেট থ্যাচারারকে ছাড়িয়ে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের অপ্রতিরোধ্য গতি আজ বিশ্ববাসীকে বিস্মিত করেছে। তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের কাছে এক বিস্ময়।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৫৬০তম পর্বে মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর)এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক, জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদ’র (জানিপপ) চেয়ারম্যান ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, ইতালি বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনের প্রথম নির্বাচিত সভাপতি, সর্ব ইউরোপীয় আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি কে এম লোকমান হোসেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।
শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, আমি শুরুতেই এই বিজয়ের মাসে শুরুতে স্মরণ করতে চাচ্ছি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তাঁর পরিবারের নিহত সদস্যদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। আমাদের জাতীয় চার নেতার মাগফিরাত কামনা করছি এবার এর সাথে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সকল মুক্তিযোদ্ধা ও ৩০ লাখ শহীদের প্রতি আমি আমার শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। সেসময় সাড়ে সাত কোটি বাঙালিদের মধ্যে গুটি কয়েক মানুষ ছাড়া সবাই কিন্তু স্বাধীন বাংলার স্বপ্নে মাতোয়ারা ছিল। বঙ্গবন্ধু যেভাবে তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণের মাধ্যমে জাতিকে উজ্জীবিত করেছিলেন এবং সেই কারণে সেসময় দেশের সকল স্তরের মানুষ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। যারা ছিল একটি দূরদর্শী বাহিনী হিসেবে পরিচিত ছিল তাদেরকে কিভাবে ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে পরাজিত করে স্বাধীন বাঙলার কাক্সিক্ষত স্বপ্নটি বাস্তবায়ন করেছিল। তাদেরকে আমরা পরাজিত করেছিলাম ও পর্যুদস্ত করেছিলাম। বঙ্গবন্ধুর ‘সোনার বাংলা’ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে শেখ হাসিনা যখন সরকার গঠন করেন, এ দেশের মানুষ অন্য এক বাংলাদেশের গল্প শুনতে পায়। এক সময় যেই বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি বলে সমালোচনা করা হয়েছিল, সেই দেশ আজ বিশ্ব বাজারে বিনিয়োগের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা জনগণকে দেওয়া সব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করে দেশকে বিশ্বসভায় ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ-শান্তিময় দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন। বিশ্বের কয়েকটি জরিপ প্রতিবেদনেও শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির চিত্র উঠে এসেছে। বছরটি ছিল সাফল্যের বছর। উন্নয়ন পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়নের ফলে আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে বিশ্বে রোল মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়া পাঁচটি দেশের মধ্যে এখন বাংলাদেশ অন্যতম। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশকে ‘বটমলেস বাস্কেট’ বা তলাবিহীন ঝুড়ি বলে অভিহিত করেছিলেন। সেই দেশের বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকা এসে বলে গেছেন- বাঙালি জাতির মেধা, পরিশ্রম আর একাগ্রতার মাধ্যমে বাংলাদেশ সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। আর এই শান্তি ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে একসঙ্গে কাজ করতে চায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আমরা যদি বিভিন্ন তথ্য, উপাত্ত নিয়ে যদি বিস্তর আলোচনা করি তাহলে দেখতে পাবো যে আমাদের পঞ্চাশ বছর আগে এবং আজ পঞ্চাশ বছর পর আমাদের অগ্রগতি কতটুকু হয়েছে। সেটা অর্থনৈতিকভাবে, সামাজিকভাবে, রাজনৈতিকভাবে, স্বাস্থ্যগতভাবে, শিক্ষাগতভাবে, অবকাঠামোভাবে; আমরা আজ বহুগুণে এগিয়েছি।
ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা আমাদের দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজকে যে উচ্চতায় পৌঁছেছেন সেটা মার্গারেট থ্যাচারারকে ছাড়িয়ে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের অপ্রতিরোধ্য গতি আজ বিশ্ববাসীকে বিস্মিত করেছে। তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের কাছে এক বিস্ময়। সকল প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করেও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে এসেছেন। তিনি রাষ্ট্রক্ষমতায় না এলে বাংলাদেশে হয়তো তলাবিহীন ঝুড়ি অথবা দুর্নীতিতে বারবার চ্যাম্পিয়ন হওয়া বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের রাষ্ট্র হিসেবে পরিগণিত হতো। বিশ্বের কাছে কোনো মর্যাদা থাকত না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, জিডিপির উন্নয়ন, শিল্প রফতানি, ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠাসহ অনেক অভাবনীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে। পদ্মা সেতু, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পায়রা বন্দর, মেট্রোরেল এবং মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের কার্যক্রম চলছে। আশা করি ২০৩৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের একুশতম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। অনন্য উচ্চতায় বাংলাদেশ পৌঁছে গেছে একটি নেতৃত্বের কারণে। আমাদের এই জাতিকে তিনি এভারেস্টের মতো উচ্চতায় নিয়ে গেছেন কারণ তিনি আমাদের প্রতিনিধিত্ব করেন। তাঁর উচ্চতা বাড়া মানে বাংলাদেশের উচ্চতা বাড়া। এবং তাঁর পিতা বঙ্গবন্ধুকে বর্ণনা করতে গেলে কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল ক্যাস্ট্রোর উক্তি পড়ে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব, তাঁর সিদ্ধান্ত, অবিচলতা নিয়ে বলতে গিয়ে ক্যাস্ট্রো বলেন, ‘আমি হিমালয় দেখিনি, কিন্তু শেখ মুজিবকে দেখেছি। ব্যক্তিত্ব ও সাহসিকতায় তিনি হিমালয়ের মতো’। এইতো ঠিক যেমন পিতা তেমনি কন্যা।
কে এম লোকমান হোসেন বলেন, আজকের ভোরের পাতার ৫৬০তম পর্বে আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ভোরের পাতাকে ধন্যবাদ জানাতে চাচ্ছি। বিজয় কিন্তু সবাই ছিনিয়ে আনতে পারে না, যারা ছিনিয়ে আনতে পারে তারাই বিজয় দিবস উদযাপন করতে পারে। আমি মনে করি, একজন দক্ষ এবং সৎ নেতৃত্ব একটি উন্নত সরকার তৈরি করে এবং একটি উন্নত সরকার একটি একটি বেস্ট জাতি তৈরি করে। আমরা আজ দেখতে পাচ্ছি এই কথাটি আজকে সম্পূর্ণভাবে জননেত্রী শেখ হাসিনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর একক নেতৃত্বে বাংলাদেশকে এ পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন। তাঁর উন্নয়ন দর্শন এখন গবেষণার বিষয়। বিশ্বের অনেক দেশই এখন বাংলাদেশের উন্নয়ন মডেল অনুসরণ করছে, যা প্রকারান্তরে শেখ হাসিনার দর্শনকে অনুসরণ করা। মানুষের মাথাপিছু আয়, জিডিপির প্রবৃদ্ধি, বৈদেশিক রিজার্ভসহ বিভিন্ন অর্থনৈতিক সূচকে বাংলাদেশ অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে। অর্থনীতিতে দেশে বিপ্লব সাধিত হয়েছে। তাই শুধু পদ্মা সেতু নয়, দেশের উন্নয়নে এরকম আরও বড় বড় প্রকল্প গ্রহণ করে তা বাস্তবায়নের সক্ষমতা সরকারের রয়েছে। একমাত্র শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়া সম্ভব। শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে দেশ যখন সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে তখন দেশের ভেতরে এবং বাইরে ষড়যন্ত্র চলছে। দেশের উন্নয়নকে ব্যাহত, দেশের মানুষকে দারিদ্র্য ও ভিখারি করে রাখতেই তাদের এই ষড়যন্ত্র। তবে যত ষড়যন্ত্রই করা হোক না কেন, সকল অশুভ শক্তিকে মোকাবিলা করার মতো সাহস ও শক্তি জননেত্রী শেখ হাসিনার আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদূর প্রসারী পরিকল্পনায় বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। তাঁর নিপুন পরিকল্পনা এবং দৃঢ় নেতৃত্বে এদেশ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলছে। রাষ্ট্র পরিচালনায় তার দক্ষতা ও সাফল্য ঈর্ষণীয়। বাংলাদেশ তাঁর নেতৃত্বে আজ আমরা উন্নয়নশীল দেশের কাতারে পৌঁছে গিয়েছে এবং এই ধারা অব্যাহত থাকলে দ্রুতই আমরা উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবো। আসন্ন সেমিনারে সেগুলোই হবে আমাদের আলোচনার বিষয়বস্তু।